প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা সিলেট বিভাগ। প্রতিবছর এই বিভাগের অপরূপ প্রাকৃতিক দৃশ্য অবলোকনে দেশি-বিদেশি লাখো পর্যটকের আগমন ঘটে।

কিন্তু দুঃখজনক সত্য হলো, এই অঞ্চলের যোগাযোগব্যবস্থা বিশেষ করে রেলপথ, অত্যন্ত নাজুক ও ঝুঁকিপূর্ণ। সিলেট রেলপথ যেন আতঙ্কের আরেক নাম। প্রায়ই ঘটছে ট্রেন লাইনচ্যুতির ঘটনা—কখনো যাত্রীবাহী, কখনোবা তেলবাহী ট্রেন।

সাম্প্রতিক সময়ে দেশের যত বড় বড় রেল দুর্ঘটনা ঘটেছে, তার বেশির ভাগই ঘটেছে ঢাকা-সিলেট রুটে। দুর্ঘটনা ঘটলেই রেলসেবা ঘণ্টার পর ঘণ্টা বন্ধ থাকে, ফলে ট্রেনের সময়সূচি ভেঙে পড়ে, যাত্রীদের চরম ভোগান্তির পাশাপাশি সরকারকেও গুনতে হয় বড় অঙ্কের আর্থিক ক্ষতি।

আরও হতাশাজনক হলো, দুর্ঘটনার পর কিছু সময়ের জন্য উদ্ধারকাজ চালানো হলেও এর পেছনের কারণ অনুসন্ধান বা প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে দেখা যায় চরম উদাসীনতা। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত এই রেলপথের অবকাঠামো এখনো পুরোনো ও জরাজীর্ণ। ট্রেনগুলোও বেশির ভাগই অপ্রচলিত ও যাত্রীসেবার মানে অনেক পিছিয়ে। রেলসেতু ও লাইনগুলোও অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। ফলে যাত্রীদের যাত্রাপথ পরিণত হয়েছে একধরনের আতঙ্কে।

এই প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তীকালীন ও আগামী নির্বাচিত সরকারের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি, দ্রুত এ রেলপথের দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার, আধুনিক ট্রেন সংযোজন ও যাত্রীসেবার মানোন্নয়নে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করুন। শুধু উন্নয়ন পরিকল্পনার কথা নয়, বাস্তবায়নের মাধ্যমেই সিলেটকে তার প্রাপ্য সম্মান ও নিরাপদ যোগাযোগব্যবস্থা ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব।

আবদুল মুহিত

শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ র ঘটন র লপথ

এছাড়াও পড়ুন:

৩০ ঘণ্টা পরও খোলা হয়নি শাহ আমানত হল প্রাধ্যক্ষের কক্ষের তালা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আমানত হলের প্রাধ্যক্ষের কক্ষে আবাসিক শিক্ষার্থীরা তালা দেওয়ার ৩০ ঘণ্টা পর আজ সোমবার দুপুরেও তা খোলা হয়নি। উল্টো আজ শিক্ষার্থীরা প্রধ্যক্ষের কক্ষের নামফলকও সরিয়ে ফেলেন। গতকাল রোববার সকালে আর্থিক অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীরা প্রাধ্যক্ষের কক্ষে তালা দেন। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অধ্যাপক চৌধুরী মোহাম্মদ মনিরুল হাসান আলোচনার প্রস্তাবও দিলেও শিক্ষার্থীরা তা ফিরিয়ে দিয়েছেন। নতুন প্রাধ্যক্ষ নিয়োগ ও অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত ছাড়া আলোচনায় বসবেন না বলে হল সংসদের নেতারা জানিয়েছেন।

আজ দুপুর ১২টার দিকে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক চৌ ধুরী মোহাম্মদ মনিরুল হাসান হলের গৃহশিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সঙ্গে নিয়ে হলে যান। তিনি হল সংসদের প্রাকর্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তবে আবাসিক শিক্ষার্থী ও হল সংসদের নেতারা সেখানে উপস্থিত হননি।

প্রাধ্যক্ষ দেখা করতে চাইলেও হল সংসদের সদস্যরা তাতে রাজি হননি বলে জানান শাহ আমানত হল সংসদের ভিপি জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, অভিযোগগুলো তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত আগের মতো সম্পর্ক বজায় রাখা সম্ভব নয়। তিনি আরও জানান, দাপ্তরিক কাজ যাতে ব্যাহত না হয়—এ জন্য হলের আরেকটি অফিস কক্ষ খোলা রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মনিরুল হাসান বলেন, ‘আমি গৃহশিক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে হলে গিয়েছিলাম আলোচনায় বসতে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা আসেননি। পরে সহউপাচার্যের (একাডেমিক) সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি আমাকে দাপ্তরিক কাজ চালিয়ে যেতে বলেন এবং উপাচার্য চীন সফর শেষে দেশে ফিরলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক শামীম উদ্দিন খান বলেন, গতকাল হল সংসদের প্রতিনিধিরা তাঁর কাছে একটি স্মারকলিপি দেন। তিনি সময় চেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আজ প্রাধ্যক্ষ এসে জানিয়েছেন, তিনি শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করেছেন এবং ভবিষ্যতেও করতে চান। কিন্তু উপাচার্য ও সহউপাচার্য (প্রশাসনিক) অনুপস্থিত থাকায় আপাতত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে না। উপাচার্য দেশে ফিরলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

গতকাল আবাসিক শিক্ষার্থীদের সম্মতিতে হল সংসদের প্রতিনিধিরা প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, দায়িত্বে অবহেলা, অসৌজন্যমূলক আচরণ, অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তাঁর কক্ষে তালা দেন। অভিযোগে বলা হয়—হল স্টোরের মালামাল নিয়মবহির্ভূতভাবে বিক্রি করা হয়েছে, দরজা-জানালার মেরামত হয়নি, দ্বিতীয় ডাইনিং চালু হয়নি এবং সাইকেল স্ট্যান্ডসহ মৌলিক সুবিধা নিশ্চিত করা হয়নি। এসব অভিযোগ তাঁরা সহ–উপাচার্যের কাছে লিখিতভাবে জমা দিয়েছেন। তবে প্রাধ্যক্ষ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, অনেক কাজই বাজেট ও প্রশাসনিক অনুমোদনের ওপর নির্ভরশীল এবং তিনি নিয়মিতভাবে উন্নয়ন কার্যক্রম এগিয়ে নিতে চেষ্টা করছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ