ফেসবুকের টাইমলাইন জুড়ে গতকাল রবিবার (১৮ মে) থেকে একটি ভিডিও ভেসে বেড়াচ্ছে। সেখানে দেখা গেছে, একজন ব্যক্তি চলন্ত ট্রেনে ঝুলে যাচ্ছেন; ভেতর থেকে কেউ তার হাত ধরে রয়েছেন। ঝুলে থাকা ব্যক্তি ট্রেনের ভেতরে উঠার এবং হাত ছেড়ে দিয়ে বাঁচার প্রাণপণ চেষ্টা করছেন। আর্তনাদ করছেন, কিন্তু কিছুতেই ট্রেনে থাকা ব্যক্তিটি তাকে ছাড়ছিলেন না। অবশেষে নশরতপুর রেলওয়ে প্লাটফর্মে পৌঁছার পর ঝুলে থাকা ব্যক্তিটিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকা লোকজন ওই ব্যক্তিটিকে বাঁচাতে এগিয়ে যান। 

৩৫ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে এমনটিই দেখা গেছে। অনেকে ধারণা করেছিলেন, ট্রেনে কাটা পড়ে লোকটি হয়তো মারা গেছেন। তবে, জানা গেছে, তিনি মারা যাননি।

এই ঘটনাটি বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার নশরতপুর রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় ঘটেছে রবিবার দুপুর ১টায়। ভুক্তভোগী ওই ব্যক্তির নাম মতিউর রহমান (৫২)। তিনি নওগাঁর রানীনগর উপজেলার পাড়ইল গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় আদম ব্যবসায়ী। বগুড়ার একটি ক্লিনিকে চিকিৎসা শেষে তাকে বাসায় নেওয়া হয়েছে।

আরো পড়ুন:

মল্লিকা এক্সপ্রেস আটকে ঢাকাগামী ৪ ট্রেন চালুর দাবি

সমাধান না পেয়ে আবারো রেলপথ অবরোধ বাকৃবি শিক্ষার্থীদের

মতিউর রহমানের ছেলে আহসান হাবিব জানান, তার বাবার মাধ্যমে দুই বছর আগে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার তালসন গ্রামের যুবক সজীব সৌদি আরবে যান। সেখানে যাওয়ার পর কাগজপত্রে সমস্যা থাকায় ইকামা (কাজের সুপারিশ সনদ) পাননি। এ নিয়ে সজীবের পরিবারের সঙ্গে মতিউর রহমানের বিরোধ চলছিল।

ওই বিরোধকে কেন্দ্র করেই মতিউরকে হত্যা চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন আহসান হাবীব। তিনি জানান, গতকাল তার বাবা বগুড়া থেকে ট্রেনে করে রানীনগরের বাসায় ফিরছিলেন। তার বাবা তাকে জানিয়েছেন, ট্রেনের বগিতে যখন যাত্রী কম ছিল, তখন সাতজন যুবক তার বাবার কাছে যান। কেন সজিবের ইকামা হয়নি এসব বিষয়ে তারা তার বাবাকে জিজ্ঞেস করেন। মতিউর তারা কে জানতে চাইলে একজন জানান তিনি সজিবের শ্যালক সুমন। এক পর্যায়ে তারা মতিউরকে মোবাইল চোর আখ্যা দিয়ে মারধর করতে থাকেন। তার পকেট থেকে ৫০ হাজার টাকাও বের করে নেন। বগির অন্য যাত্রীরাও বিষয়টি বিশ্বাস করেন। তারা চাকুও বের করেছিল মতিউরকে মারার জন্য। 

তিনি আরো জানান, এক পর্যায়ে মতিউর নিজেকে বাঁচাতে ট্রেন থেকে লাফ দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় ট্রেনের ভেতর থেকে ওই সাতজনের মধ্যে কেউ একজন তার বাবার হাত ধরে রাখেন। নশরতপুর রেলস্টেশনের কাছে পৌঁছলে হাত ছেড়ে দিলে তার বাবা ট্রেনের নিচে চলে যান।

আহসান হাবিব জানান, তার বাবা অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছেন। ঘটনার পর তাকে আদমদদীঘি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে বগুড়ার একটি ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে তাকে আজকে সোমবার বাসায় নেওয়া হয়েছে। 

তিনি জানান, তার বাবার শরীরের বিভিন্ন জায়গার চামড়া উঠে গেছে। বুক ও কোমড়ে আঘাত পেয়েছেন। কোনো অঙ্গ কাটা যায়নি।  

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (বিকেল ৫টা ৫০ মিনিট) আহসান হাবিব সান্তাহার রেলওয়ে জংশনের জিআরপি পুলিশ স্টেশনে ছিলেন মামলা করতে।

সান্তাহার রেলওয়ে জংশনের জিআরপি পুলিশ স্টেশনের ওসি হাবিবুর রহমান বলেন, “ভুক্তভোগীর ছেলে আমাদের কাছে অভিযোগ দিতে এসেছেন। তাদের কাছে মৌখিক বিষয়টি শুনেছি। অভিযোগ পেলে আমরা তদন্ত করব। এরপর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/এনাম/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ আহস ন হ ব ব র র লওয় র রহম ন উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

কাস্টমস কর্মকর্তাদের ভয় দেখাতে হামলা, নির্দেশদাতা এখনো পলাতক

চট্টগ্রাম নগরে কাস্টমসের দুই কর্মকর্তার প্রাইভেট কার থামিয়ে হামলার ঘটনায় দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে নগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। আজ বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে চারটার দিকে বান্দরবান থেকে কাজী মো. ইমন হোসেন (২৩) ও মো. সুজন (২৪)–কে গ্রেপ্তার করে ডিবি (পশ্চিম)। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানান, এক ব্যক্তির নির্দেশে কাস্টমস কর্মকর্তাদের ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে এ হামলা চালান। সেই নির্দেশদাতা এখনো পলাতক।

নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (গণমাধ্যম) আমিনুর রশীদ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, হামলার সময় ওই ব্যক্তির মোটরসাইকেল ব্যবহার করা হয়। কাস্টমস কর্মকর্তাকে ভয় দেখানোই ছিল হামলার লক্ষ্য। পলাতক অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

৪ ডিসেম্বর সকালে নগরের ডবলমুরিং থানার সিডিএ আবাসিক এলাকায় কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান খান ও সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা বদরুল আরেফিন ভাড়ায় নেওয়া প্রাইভেট কারে করে যাচ্ছিলেন। এ সময় মোটরসাইকেলে করে তিন ব্যক্তি তাঁদের গাড়ি থামিয়ে চাপাতি দিয়ে গাড়ির কাচে কোপ দেন। গাড়ির কাচ ভাঙার পাশাপাশি হামলাকারীরা একজন আরেকজনকে বলতে থাকেন, ‘গুলি কর, গুলি কর’। তবে দুই কর্মকর্তা দ্রুত গাড়ি সরিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে আসেন।

কাস্টমস কর্মকর্তাদের ধারণা, সম্প্রতি বিভিন্ন অনিয়ম, রাজস্ব জালিয়াতি ও নিষিদ্ধ পণ্য আমদানি আটকে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে জড়িত চক্র হামলা চালাতে পারে। কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েক মাসে প্রায় ১০ কোটি টাকা মূল্যমানের নিষিদ্ধ পপি বীজ ও ঘন চিনি, প্রায় ৩০ কোটি টাকার নিষিদ্ধ সিগারেট এবং মিথ্যা ঘোষণায় আমদানি করা বিপুল পরিমাণ প্রসাধনী জব্দ করা হয়েছে। এসব অভিযানে দুজন কর্মকর্তা জড়িত ছিলেন। প্রসাধনী জব্দের পর মো. আসাদুজ্জামানকে ফোনে হুমকিও দেওয়া হয়।

হামলার নির্দেশদাতার পরিচয় এখনো প্রকাশ করেনি পুলিশ। তদন্তের স্বার্থে নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে তারা। তবে হামলায় ওই ব্যক্তির ব্যক্তিগত মোটরসাইকেল ব্যবহার করা হয়েছিল।

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের ডেপুটি কমিশনার মো. তারেক মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, নিষিদ্ধ পপি বীজ, ঘন চিনি ও মিথ্যা ঘোষণায় আসা প্রসাধনী জব্দের কারণে একটি সিন্ডিকেট ক্ষুব্ধ। গত দুই মাসে এসব সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এরপর থেকেই বিভিন্ন নম্বর থেকে হুমকি আসছে।

আরও পড়ুনগাড়ি থামিয়ে কাচে চাপাতির কোপ, একজন বলতে থাকেন, ‘গুলি কর, গুলি কর’০৪ ডিসেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যুদ্ধবিরতি নিয়ে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন জেলেনস্কি ও মার্কিন প্রতিনিধি
  • ক্যানসার, ৩৬ অস্ত্রোপচার—গানে ফেরার গল্প শোনাবেন ‘বেজবাবা’
  • সিদ্ধিরগঞ্জে ১১০ বোতল ফেন্সিডিলসহ কারবারি গ্রেপ্তার
  • পাবনায় বিষাক্ত মদপানে ২ যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ
  • রংপুরে মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁর স্ত্রীকে হত্যা মামলায় একজন গ্রেপ্তার
  • বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গবেষণাহীনতা: উন্নয়নের সবচেয়ে বড় বাধা
  • বেগম রোকেয়াকে নিয়ে রাবি শিক্ষকের মন্তব্য একাডেমিক নৈতিকতার লঙ্ঘন: আসক
  • কালো পতাকার মানুষ
  • ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে এআই দিয়ে বানানো ছবি ছড়ানো হচ্ছে: কৃষ্ণ নন্দী
  • কাস্টমস কর্মকর্তাদের ভয় দেখাতে হামলা, নির্দেশদাতা এখনো পলাতক