Prothomalo:
2025-06-02@17:59:04 GMT

শিশুদেরও লুপাস হতে পারে

Published: 1st, June 2025 GMT

রোগটির সংক্ষিপ্ত নাম লুপাস। পুরো নাম সিস্টেমিক লুপাস এরিথেমাটোসাস (এসএলই)। এটি একটি ‘অটোইমিউন’ রোগ। এই রোগে বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ও কোষ আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে কিডনি লুপাস বা লুপাস নেফ্রাইটিস অন্যতম। ২০ থেকে ৭৫ শতাংশ লুপাস রোগীর কিডনি আক্রান্ত হতে পারে। কিডনির পাশাপাশি শিশুদের স্নায়ুতন্ত্র, রক্তরোগ, চামড়ার ক্ষত, গিরা, মাংসপেশি, ফুসফুস, হৃদ্‌যন্ত্র এমনকি চুল পর্যন্ত আক্রান্ত হতে পারে।

লুপাস সাধারণত ১১–১২ বছর বয়সে দেখা দিতে পারে। তবে পাঁচ বছরের নিচে এই রোগ কম হতে দেখা যায়। এই রোগে ছেলে বা মেয়েশিশু উভয়ই আক্রান্ত হয়, তবে মেয়েদের ক্ষেত্রে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি।

কারণ

লুপাস রোগের কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ জানা যায় না। তবে কিছু বিষয় যেমন বংশগত ও পরিবেশগত প্রভাব, ভাইরাস সংক্রমণ এবং হরমোনজনিত প্রভাব রোগের বিস্তার ও তীব্রতাকে প্রভাবিত করে। মূলত এটি অটোইমিউন ডিজঅর্ডার, শরীরের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থার ত্রুটির জন্য হয়ে থাকে। যখন রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা তার নিজের কোষ এবং অঙ্গকে আক্রমণ শুরু করে এবং প্রদাহ সৃষ্টি করে (যাকে অটোইমিউন রোগ বলে) তখনই এমন হয়।

লুপাস সাধারণত ১১–১২ বছর বয়সে দেখা দিতে পারে। তবে পাঁচ বছরের নিচে এই রোগ কম হতে দেখা যায়।

উপসর্গ

লুপাস রোগের উপসর্গ মৃদু থেকে গুরুতর হতে পারে। দীর্ঘদিনের জ্বর, ক্লান্তিবোধ, চুল পড়া, মুখে ঘা, রোদে সংবেদনশীলতা, সারা শরীরে লাল র‌্যাশ (মুখের র‌্যাশের ধরনকে বাটারফ্লাই র‌্যাশ বলা হয়ে থাকে), জিবে ঘা, ওজন কমে যাওয়া, প্রস্রাবের রং পরিবর্তন, প্রস্রাবে তলানি জমা, শরীর ফুলে যাওয়া, উচ্চ রক্তচাপ, গিরাব্যথা বা ফুলে যাওয়া, মাথাব্যথা, চোখে দেখতে অসুবিধা, খিঁচুনি, কাশি, শ্বাসকষ্ট, পেটব্যথা ইত্যাদি হতে পারে।

চিকিৎসা

এই রোগের চিকিৎসা দীর্ঘদিন ধরে এমনকি আজীবন চালিয়ে যেতে হয়। এর কোনো স্থায়ী নিরাময় নেই, চিকিৎসার লক্ষ্য হলো এর তীব্রতা কমানো ও অঙ্গগুলোকে ক্ষতিসাধন থেকে রক্ষা করা। কিডনির টিস্যু পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে রোগ কোন পর্যায়ে আছে বের করা এবং পর্যায়ক্রমে চিকিৎসা সম্ভব। কিছু ওষুধ সারা জীবন সেবন করতে হয়, যাতে রোগ জটিলতর না হয়ে ওঠে বা গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর ক্ষতিসাধন না হয়।

লুপাস রোগের লক্ষণগুলো দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। এই রোগে আক্রান্ত রোগীর কিডনি, স্নায়ুতন্ত্রসহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ আক্রান্ত হয়ে কার্যক্রম হ্রাস পেতে পারে। সময়মতো চিকিৎসা নিলে এই লক্ষণগুলো থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে, জীবনের মান উন্নত করে লেখাপড়াসহ অন্যান্য কাজে সফল হওয়া সম্ভব।

ড.

ইমনুল ইসলাম, অধ্যাপক, শিশু বিভাগ, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (সাবেক বিএসএমএমইউ)

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এই র গ

এছাড়াও পড়ুন:

‘খোঁড়া পায়ের মেয়ে বলছি’

ফ্রিদা কাহলো। মেক্সিকান পেইন্টার। সেল্ফ পোর্ট্রেইটে বা আত্মপ্রতিকৃতিকে নিয়ে গিয়েছেন অনন্য উচ্চতায়। কিংবদন্তি এই চিত্রশিল্পীর বিভিন্ন সাক্ষাৎকার থেকে অনুপ্রেরণামূলক কথা তুলে এনেছেন ইমাম হোসেন মানিক

১৯২৫ সালে আমার তখনকার প্রেমিকের সঙ্গে একটা স্ট্রিটকারে ঘুরে বেড়ানোর সময়, বাসের ধাক্কায় কারটি দুমড়েমুচড়ে যায়। একটা হ্যান্ডলে গেঁথে যাই আমি। গুরুতর আহত হই। সপ্তাহের পর সপ্তাহ ধরে রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে কাটাতে হয়েছে আমাকে। তারপর বাড়ি ফিরে দিন কেটেছে বিছানায়। সুস্থ হয়ে ওঠার সময়টিতে ছবি আঁকতে শুরু করি আমি। কেননা, আমি একেবারেই নিশ্চল হয়ে পড়েছিলাম। শুধু এ কাজটি করার ক্ষমতাই ছিল আমার। আমি প্রথম আত্মপ্রতিকৃতি আঁকি আমার সেই প্রেমিকের জন্য, যে দুর্ঘটনার সময় আমার সঙ্গে স্ট্রিটকারটিতে ছিল। আমার এই নিরন্তর অসুস্থতা দেখে সে হাঁপিয়ে উঠেছিল এবং আমাকে ছেড়ে চলে গেছে।
আমার জন্ম ও বাবার প্রতি ভালোবাসা
যে বছর মেক্সিকান বিপ্লব শুরু হয়, আমার জন্ম সে বছর। সেই উত্তাল সময়ে এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারে আমি বেড়ে উঠি। আমি আর আমার ভাইবোনেরা একসঙ্গে দুটি বিপরীতমুখী সংস্কৃতির আবহ পেয়েছি। কেননা, আমার বাবা ছিলেন একজন জার্মান-ইহুদি ফটোগ্রাফার; আর মা কট্টরপন্থি ক্যাথলিক স্প্যানিশ-ভারতীয় নারী। আমাদের বাড়ির আবহ বরাবরই মনমরা ছিল। বাবা আমাকে মেয়ে নয়, বরং ছেলে হিসেবে দেখতেন। ছোটবেলায় ফুটবল, সুইমিং ও রেসলিং টিমে ভর্তি করিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। তার জন্যই ন্যাশনাল প্রিপারেটরি স্কুলে পড়াশোনা করার সুযোগ পাই আমি। সেখানকার ২ হাজার ছাত্রের মধ্যে আমিসহ মেয়ে ছিল মাত্র ৩৫ জন। শুধু যে ছেলে, তা নয়, বরং একজন সাবালক ও শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তিত্ব হিসেবে আমাকে গণ্য করতেন বাবা। তিনিই ছিলেন আমার সবকিছু। অন্যদিকে, মায়ের সঙ্গে বলতে গেলে কোনো সম্পর্কই ছিল না আমার। এমনকি তার মৃত্যুর পর মৃতদেহ দেখতেও যাইনি আমি।
‘খোঁড়া পায়ের মেয়ে’ বলে আমায় ক্ষেপাত
গুরুতর অসুস্থতার সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় এটিই নয়। শৈশবে, ছয় বছর বয়সে, পোলিওর কারণে পঙ্গু হয়ে গিয়েছিলাম আমি। আমার বাবা-মা শুরুতে অসুখটা ধরতে পারেননি। যখন আমার ডান পা সরু হয়ে যেতে লাগল, স্কুলে যাওয়ার সময় ব্যান্ডেজ দিয়ে ঢেকে পা লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করতাম আমি। বাচ্চারা সারাদিন আমাকে জ্বালাতন করত। এমনকি ‘খোঁড়া পায়ের মেয়ে’ বলেও ক্ষেপাত। নিস্তেজ পা টেনেহিচড়ে হাঁটতে হতো আমাকে।
যে কারণে পশুর ছবি আঁকি 
আমার পেইন্টিংয়ের অনুপ্রেরণার মূলে রয়েছে এই যাতনা। মন ভাঙার যাতনা, অসুস্থতার যাতনা, বিশ্বাসঘাতকতার যাতনা। এই যাতনাকে আমি গ্রহণ করি, এই যাতনাকে আমি প্রকাশ করি, এবং এটিকে আমি বদলে দিই ইতিবাচক ও সুন্দর কিছুতে। এই সব পেইন্টিংয়ের মধ্যে আমি আমার যাতনা ভোগ থেকে মুক্তি খুঁজে নিই। নিজেকে একটা পশুর মতো উপস্থাপনের চেষ্টা করি আমি। পশুরা যার সঙ্গে থাকে, তার উপকার করতে না পারলেও, তার প্রতি সত্যবান থাকে। এ কারণে পশুদের ছবি এত আঁকি আমি। 
সিদ্ধান্তে অটল থাকা হলো না...
আর্টিস্ট দিয়েগো রিভেরা ও আমার বিয়েটি হয়েছিল খোলা মতের ভিত্তিতে। দু’জনের আলাদা পার্টনার থাকতে পারবে– এ শর্ত মেনে নিয়েছিলাম আমরা। তবু, আমার নিজেরই ছোট বোন ক্রিস্টিনার সঙ্গে দিয়েগোর সম্পর্কটা মানতে পারিনি। এই সম্পর্ক আমার মন ভেঙে দিয়েছে; আর দিয়েগোর কাছে ফেরার নিরন্তর চেষ্টা করে গেছি আমি। আমাদের মধ্যে সাময়িক বিবাহ-বিচ্ছেদ শেষে, আবারও দু’জন একসঙ্গে থাকতে শুরু করলেও সম্পর্কটি আর কখনোই আগের মতো হয়নি। 
পেইন্টার হিসেবে আমার ফোকাস
দিয়েগোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক পরিচয় হওয়ার আগে, বাবার এক বন্ধুর ওয়ার্কশপে বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপনচিত্র খোদাই করার কাজ দিয়ে আর্ট ক্যারিয়ার শুরু করি আমি। মেক্সিকান পেইন্টার আদলফো বেস্ট মুগার্ড স্টাইলের ড্রয়িংয়ে পাঠ নিয়েছিলাম আমি। তারপর ওয়াটার কালার আর অয়েল পেইন্টের চর্চা শুরু করি। পেইন্টার হিসেবে, আব্রাহাম অ্যাঞ্জেলের কাজের ওপর শুরু করি পড়াশোনা। নিজের পেইন্টিংয়ে আমি ব্যতিব্যস্ত শহুরে জীবনের পরিবর্তনকে ফুটিয়ে তুলি। রঙের সামান্য ব্যবহার করে, নিপাট ও জ্যামিতিক আকারের ছবি আঁকতে থাকি আমি। পেইন্টার হিসেবে আমার ফোকাস ছিল ফর্ম ও কনটেন্টের ওপর। অনেকেই বলে, আমি নাকি পরাবাস্তববাদী শিল্পী। তবে আমার কাছে আমার আঁকা ছবি হলো আমারই বাস্তবতা। আমার ছবি ঠিক একটা দিনলিপির মতো। আমার মনের গহীন ভাবনা ও অনুভূতিকে ধারণ করে এটি। ছবিতে সেগুলো প্রকাশ করতে গিয়ে নারীবাদী ও দেশজ অনুপ্রেরণার আশ্রয় নিই আমি। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারতের মুসলমানদের কেন বারবার দেশপ্রেমের প্রমাণ দিতে হয়
  • ‘খোঁড়া পায়ের মেয়ে বলছি’
  • দিল্লিতে করোনায় আরও দুজনের মৃত্যু
  • ইলন মাস্ককে বড় সোনার চাবি উপহার দিলেন ট্রাম্প