আস্থা ভোটে হেরে গিয়ে পদত্যাগ করেছেন মঙ্গোলিয়ার প্রধানমন্ত্রী
Published: 3rd, June 2025 GMT
সংসদে আস্থা ভোটে হেরে যাওয়ার পর মঙ্গোলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ওয়ুন-এরদেন লুভসান্নামসরাই পদত্যাগ করেছেন। মঙ্গলবার (৩ জুন) সংসদীয় এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
মঙ্গোলীয় সংবাদমাধ্যম আইকন অনুসারে, প্রধানমন্ত্রী ওয়ুন-এরদেন লুভসান্নামসরাই ৪৪টি ভোট পেয়েছেন, যা প্রয়োজনীয় ৬৪টি ভোটের চেয়ে অনেক কম।
দুর্নীতির অভিযোগে ওয়ুন-এরদেনের বিরুদ্ধে রাজধানী উলানবাটরে কয়েক সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভের পর মঙ্গলবার ভোরে এই ভোট অনুষ্ঠিত হয়।
আরো পড়ুন:
রাইজিংবিডিতে সংবাদ: ঢাবির সূর্যসেন হলের প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগ
রংপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ১৬ নেতার পদত্যাগ
ভোটের আগে, ওয়ুন সতর্ক করে বলেছিলেন, “ভোটের ফলে অস্থিতিশীলতা দেখা দিতে পারে এবং মঙ্গোলিয়ার নতুন গণতন্ত্রকে নাড়া দিতে পারে।”
তিনি বলেন, “যদি শাসনব্যবস্থা অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে, অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অবনতি হয় এবং রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যমতে আসতে না পারে, তাহলে এটি সংসদীয় শাসনের প্রতি জনগণের আস্থা হারাতে পারে এবং আমাদের গণতান্ত্রিক সংসদীয় ব্যবস্থাকে পতনের ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।”
তিনি তার সততার পক্ষে কথা বলেন কিন্তু একটি ভুল স্বীকার করেছেন যে, “বড় প্রকল্পগুলোতে খুব বেশি সময় ব্যয় করা এবং সামাজিক ও অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয়গুলোতে পর্যাপ্ত মনোযোগ না দেওয়া।”
ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর পার্লামেন্টে ওয়ুন-এরদেন বলেন, “মহামারি, যুদ্ধ ও অর্থনৈতিক চাপের সময় দেশের ও জনগণের সেবা করার সুযোগ পাওয়া আমার জন্য ছিল এক গর্বের বিষয়।”
মঙ্গোলিয়ার সংসদীয় বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত না হওয়া পর্যন্ত ওয়ুন-এরদেন অস্থায়ী প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন, যা আগামী ৩০ দিনের মধ্যে সম্পন্ন হবে।
ওয়ুন-এরদেন চার বছর ধরে প্রধানমন্ত্রীর পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। গত বছর, নির্বাচনী সংস্কারের পর সংসদের আসন সংখ্যা ৭৬ থেকে বাড়িয়ে ১২৬ করা হয়েছিল। এর ফলে একটি জোট সরকার গঠিত হয়।
রাশিয়া ও চীনের মধ্যে স্থলবেষ্টিত মঙ্গোলিয়া তার দলীয়-রাষ্ট্র যুগের পরে আরো গণতান্ত্রিক হওয়ার জন্য লড়াই করে আসছে।
দেশটির অনেক নাগরিক বিশ্বাস করেন, বছরের পর বছর ধরে চলে আসা কয়লা খনি খাতের উল্লম্ফনের সুফল সমাজের ধনী ও প্রভাবশালী গোষ্ঠী ভোগ করছে। আর সাধারণ জনগণ হচ্ছে বঞ্চিত।
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে ওয়ুন-এরদেন ক্ষমতায় আসার পর থেকে মঙ্গোলিয়ার দুর্নীতি আরো বেড়েছে।
সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের ভারত ও উদীয়মান এশিয়ান অর্থনীতির ডেপুটি ডিরেক্টর এবং সিনিয়র ফেলো এরিন মারফির মতে, “গণতন্ত্রের ভিত্তি তৈরি করা খুবই কঠিন, বিশেষ করে এমন এক সময়ে যখন মঙ্গোলিয়াকে অর্থনৈতিক সমস্যাগুলোও মোকাবিলা করতে হবে, যা জনগণের হতাশার একটি প্রধান উৎস।”
তিনি বলেন, “আমাদের এখন দেখতে হবে পরবর্তীতে কী ঘটে এবং নতুন সরকার কীভাবে এই সমস্যাগুলো মোকাবিলা করার পরিকল্পনা করে।
মারফি বলেন, “যদিও মঙ্গোলিয়ায় গণতন্ত্র এখনো বিকশিত হয়নি, কিন্তু এটি শিকড় গাড়ছে।”
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পদত য গ পদত য গ
এছাড়াও পড়ুন:
করের বোঝা আরো বাড়বে: খেলাফত মজলিস
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রস্তাবিত বাজেট গতানুগতিক আখ্যায়িত করে এই বাজেট জনগণের ওপর করের বোঝা আরো বাড়াবে। প্রস্তাবিত বাজেট প্রতিক্রিয়ায় সোমবার (২ জুন) খেলাফত মজলিসের আমির আবদুল বাছিত আজাদ ও মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের এক যৌথ বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।
তারা বলেন, ঋণনির্ভর এ বিশাল ঘাটতি বাজেটে জনগণের অর্থনৈতিক বৈষম্য তেমন কমছে না। এমনকি এই বাজেটে গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করা হয়নি।
খেলাফত মজলিস নেতারা বলেন, “বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার ঘুষ, দুর্নীতি, অর্থপাচার, অপচয় ও অব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করে রেখে গেছে। বাজেটে এ বিপর্যস্ত অর্থনীতিকে টেনে তোলার আরো ব্যবস্থা থাকার দরকার ছিল। বিপর্যস্ত অর্থনীতিকে চাঙা করতে দেশি–বিদেশি বিনিয়োগ, দুর্নীতির সব পথ বন্ধ করে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও রেমিট্যান্স বৃদ্ধিতে জোর দিতে হবে। পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনার কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।”
আরো পড়ুন:
জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে ২২ হাজার ৫২০ কোটি টাকা বরাদ্দ
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে ৫ হাজার ৭৮ কোটি টাকা বরাদ্দ
সরকারি ব্যয় নিয়ন্ত্রণ ও বাজেট–ঘাটতি কমানোর ওপর জোর দিলেও রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা গত বছরের চেয়ে বাড়িয়ে ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে উল্লেখ করে তারা বলেন, এতে জনগণের ওপর করের বোঝা আরো বাড়বে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির এই সময়ে ব্যক্তিশ্রেণি করদাতাদের বার্ষিক করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে কমপক্ষে ৪ লাখ টাকা করা দরকার ছিল। ই–কমার্স পণ্য বিক্রয় কমিশনের ওপর ভ্যাটের হার ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করায় অনলাইন কেনাকাটায় খরচ বেড়ে যাবে। বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বরাদ্দ কমিয়ে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে। এতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেলেও উন্নয়ন কর্মসূচি হ্রাস পাবে। দীর্ঘমেয়াদি ও মেগা প্রকল্প নতুনভাবে অনুমোদন পাবে না। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে বরাদ্দ কমিয়ে ১ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে।
তারা বলেন, প্রায় ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত এ বাজেটে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকার বিশাল অঙ্কের ঘাটতি রয়েছে। এই ঘাটতি পূরণে দেশি-বিদেশি ঋণ ও সুদের বোঝা আরো বাড়াবে। তবে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং মূল্যস্ফীতির গড় হার ৬ দশমিক ৫ শতাংশ রাখতে পারলে তা হবে বাজেটের বড় চমক।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ