সংসদে আস্থা ভোটে হেরে যাওয়ার পর মঙ্গোলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ওয়ুন-এরদেন লুভসান্নামসরাই পদত্যাগ করেছেন। মঙ্গলবার (৩ জুন) সংসদীয় এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়। খবর দ্য গার্ডিয়ানের। 

মঙ্গোলীয় সংবাদমাধ্যম আইকন অনুসারে, প্রধানমন্ত্রী ওয়ুন-এরদেন লুভসান্নামসরাই ৪৪টি ভোট পেয়েছেন, যা প্রয়োজনীয় ৬৪টি ভোটের চেয়ে অনেক কম।

দুর্নীতির অভিযোগে ওয়ুন-এরদেনের বিরুদ্ধে রাজধানী উলানবাটরে কয়েক সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভের পর মঙ্গলবার ভোরে এই ভোট অনুষ্ঠিত হয়।

আরো পড়ুন:

রাইজিংবিডিতে সংবাদ: ঢাবির সূর্যসেন হলের প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগ

রংপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ১৬ নেতার পদত্যাগ

ভোটের আগে, ওয়ুন সতর্ক করে বলেছিলেন, “ভোটের ফলে অস্থিতিশীলতা দেখা দিতে পারে এবং মঙ্গোলিয়ার নতুন গণতন্ত্রকে নাড়া দিতে পারে।”

তিনি বলেন, “যদি শাসনব্যবস্থা অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে, অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অবনতি হয় এবং রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যমতে আসতে না পারে, তাহলে এটি সংসদীয় শাসনের প্রতি জনগণের আস্থা হারাতে পারে এবং আমাদের গণতান্ত্রিক সংসদীয় ব্যবস্থাকে পতনের ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।”

তিনি তার সততার পক্ষে কথা বলেন কিন্তু একটি ভুল স্বীকার করেছেন যে, “বড় প্রকল্পগুলোতে খুব বেশি সময় ব্যয় করা এবং সামাজিক ও অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয়গুলোতে পর্যাপ্ত মনোযোগ না দেওয়া।”

ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর পার্লামেন্টে ওয়ুন-এরদেন বলেন, “মহামারি, যুদ্ধ ও অর্থনৈতিক চাপের সময় দেশের ও জনগণের সেবা করার সুযোগ পাওয়া আমার জন্য ছিল এক গর্বের বিষয়।”

মঙ্গোলিয়ার সংসদীয় বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত না হওয়া পর্যন্ত ওয়ুন-এরদেন অস্থায়ী প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন, যা আগামী ৩০ দিনের মধ্যে সম্পন্ন হবে।

ওয়ুন-এরদেন চার বছর ধরে প্রধানমন্ত্রীর পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। গত বছর, নির্বাচনী সংস্কারের পর সংসদের আসন সংখ্যা ৭৬ থেকে বাড়িয়ে ১২৬ করা হয়েছিল। এর ফলে একটি জোট সরকার গঠিত হয়।

রাশিয়া ও চীনের মধ্যে স্থলবেষ্টিত মঙ্গোলিয়া তার দলীয়-রাষ্ট্র যুগের পরে আরো গণতান্ত্রিক হওয়ার জন্য লড়াই করে আসছে। 

দেশটির অনেক নাগরিক বিশ্বাস করেন, বছরের পর বছর ধরে চলে আসা কয়লা খনি খাতের উল্লম্ফনের সুফল সমাজের ধনী ও প্রভাবশালী গোষ্ঠী ভোগ করছে। আর সাধারণ জনগণ হচ্ছে বঞ্চিত।

আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে ওয়ুন-এরদেন ক্ষমতায় আসার পর থেকে মঙ্গোলিয়ার দুর্নীতি আরো বেড়েছে। 

সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের ভারত ও উদীয়মান এশিয়ান অর্থনীতির ডেপুটি ডিরেক্টর এবং সিনিয়র ফেলো এরিন মারফির মতে, “গণতন্ত্রের ভিত্তি তৈরি করা খুবই কঠিন, বিশেষ করে এমন এক সময়ে যখন মঙ্গোলিয়াকে অর্থনৈতিক সমস্যাগুলোও মোকাবিলা করতে হবে, যা জনগণের হতাশার একটি প্রধান উৎস।”

তিনি বলেন, “আমাদের এখন দেখতে হবে পরবর্তীতে কী ঘটে এবং নতুন সরকার কীভাবে এই সমস্যাগুলো মোকাবিলা করার পরিকল্পনা করে।

মারফি বলেন, “যদিও মঙ্গোলিয়ায় গণতন্ত্র এখনো বিকশিত হয়নি, কিন্তু এটি শিকড় গাড়ছে।”

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পদত য গ পদত য গ

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ আবারও রাস্তায় নামবে: জামায়াত নেতা রফিকুল

জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এখন দেশের ১৮ কোটি মানুষের দাবি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘এই সনদ নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে জারি করা হোক এবং প্রয়োজনে গণভোটের আয়োজন করা হোক। তবে এই গণভোট অবশ্যই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই হতে হবে, নির্বাচনের পরে নয়।’

আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে তৃতীয় ধাপে তৃতীয় দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন রফিকুল ইসলাম খান। এ সময় উপস্থিত ছিলে জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ।

জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ স্বাভাবিকভাবেই আবারও রাস্তায় নেমে আসবে বলে মন্তব্য করেন রফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ১৯৯০ সালের গণ-অভ্যুত্থানের পর সে সময়কার দলগুলোর ঐকমত্য থাকা সত্ত্বেও ক্ষমতায় থাকা দলগুলো সেটি (তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা) যথাসময়ে বাস্তবায়ন করেনি। পরে আন্দোলনের মাধ্যমেই তা সংবিধানে যুক্ত হয়।

জামায়াতের এই নেতা আরও বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল হয়েছিল বিচারপতি খায়রুল হকের রায়ের মাধ্যমে। আদালতের ওপর প্রভাব বিস্তার করে এ রায় দেওয়ানো হয়েছিল। তাই বিচার বিভাগকে আবার বিতর্কের মুখে না ফেলে সংবিধানিক আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পক্ষে জামায়াত।

জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ঐকমত্য কমিশন একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে চারটি বিকল্প নিয়ে কাজ করেছে, যার মধ্যে কমিশন সংবিধানিক আদেশের প্রস্তাবটি সমর্থন করেছে। এই আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদের ২২টি আর্টিকেল বাস্তবায়িত হতে পারে। এটি আইনিভাবে সবচেয়ে শক্তিশালী ভিত্তি।

এক প্রশ্নের জবাবে হামিদুর রহমান বলেন, সংবিধানের মৌলিক কাঠামো পরিবর্তন করার এখতিয়ার সংসদের নেই, এবং এ ধরনের পরিবর্তন করতে হলে অবশ্যই গণভোটের প্রয়োজন হয়।

জামায়াতে ইসলামী জনগণের অভিপ্রায়কে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয় উল্লেখ করে জামায়াতের এ সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, জনগণের ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষাই হচ্ছে দেশের সর্বোচ্চ আইন।

জুলাই সনদের যে আদর্শ ও চেতনা, তা বাস্তবায়ন হওয়া উচিত এবং যারা এই আদর্শের পথে হাঁটবে না, জনগণ তাদের ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে বলে মনে করেন হামিদুর রহমান আযাদ। উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ এটি প্রমাণ করে যে এ দেশের তরুণসমাজ ও জনগণ নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থা চায় এবং জুলাই বিপ্লবের যোদ্ধাদের পক্ষেই রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
  • জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ আবারও রাস্তায় নামবে: জামায়াত নেতা রফিকুল
  • আমেরিকানদের হাতে সময় আছে মাত্র ৪০০ দিন
  • রোহিঙ্গা সমস্যায় রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করতে হবে
  • হুংকার দিয়ে জাতীয় নির্বাচন ঠেকান যাবে না: জাহিদ হোসেন
  • জামায়াত কীভাবে জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার দাবি তোলে: আনিসুল ইসলাম মাহমুদ
  • ফরিদপুরে সীমানা নিয়ে ডিসির চিঠি, এলাকাবাসীর ৫ দাবি
  • বাংলাদেশ পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে: আইরিন খান
  • কেমন সংবিধান চান, জানালেন এনসিপি নেতা আখতার হোসেন
  • বাংলাদেশে নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় ইইউ