বাবা-ছেলের রিমান্ড: এএসআই ক্লোজড, এসআইকে বদলি
Published: 12th, June 2025 GMT
মাদকসহ গ্রেপ্তার আনোয়ার হোসেন (৪৯) ও তার ছেলে মানিক মিয়ার (২৯) রিমান্ডের ঘটনায় ও দায়িত্ব অবহেলার কারণে রৌমারী থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) হাবিবুর রহমানকে কুড়িগ্রাম পুলিশ লাইনসে ক্লোজড করা হয়েছে। একই সময় উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল আওয়ালকে ঢুষমারা থানায় বদলি করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার এ ঘটনা ঘটলেও গতকাল বুধবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রৌমারী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নন্দলাল চৌধুরী।
পুলিশ ও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ মে সকাল সাড়ে ৬টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলা যাদুরচর ইউনিয়নের আলগার চর সীমান্ত এলাকায় রৌমারী থানার ওসি লুৎফর রহমানের নেতৃত্বে অভিযান চালায় পুলিশের একটি দল। এ সময় মাদকসহ আনোয়ার হোসেন ও তার ছেলে মানিক মিয়াকে আটক করা হয়। আটকের পর থানায় নেওয়ার পথে স্বজন ও এলাকাবাসী তাদের ছিনিয়ে নিতে পুলিশের ওপর হামলা চালান। এ সময় আহত হন দুই পুলিশ সদস্য। একপর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। তখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ৮ রাউন্ড শটগানের ফাঁকা গুলি ছোড়ে পুলিশ। এ ঘটনায় মামলা করা হয়। পরে ওই দুই মাদক ব্যবসায়ীকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয় ও ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করে পুলিশ। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার মাদক ব্যবসায়ী বাবা ও ছেলেকে একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। পরে ওই দুই আসামিকে আনতে কুড়িগ্রামে পাঠানো হয় এএসআই হাবিবুর রহমানসহ দুই কনস্টেবলকে। কিন্তু আসামিদের সঙ্গে এএসআই আসেননি। ফলে দায়িত্ব অবহেলার কারণে এএসআই হাবিবুর রহমানকে ক্লোজড করা হয়। একই সময়ে বদলি করা হয় এসআই আব্দুল আওয়ালকে।
রৌমারী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নন্দলাল চৌধুরী বলেন, গত বৃহস্পতিবার রিমান্ডের দুই আসামিকে আনতে কুড়িগ্রামে পাঠানো হয় সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) হাবিবুর রহমানসহ দুই কনস্টেবলকে। কিন্তু রিমান্ডের ওই দুই আসামির সঙ্গে না এসে কনস্টেবলদের মাধ্যমে তাদের থানায় পাঠিয়ে দেন এএসআই হাবিবুর রহমান। দায়িত্ব অবহেলার কারণে তাকে কুড়িগ্রাম পুলিশ লাইনসে ক্লোজড করা হয়েছে। আর প্রশাসনিক কারণে উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল আওয়ালকে ঢুষমারা থানায় বদলি করা হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: বদল হ ব ব র রহম ন
এছাড়াও পড়ুন:
কুষ্টিয়ার সাবেক এসপি তানভীর আরেক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় বিএনপি কর্মী কুদরত আলীকে গুলি করে হত্যা মামলার আসামি কুষ্টিয়ার সাবেক পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাতকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
সোমবার (২৮ জুলাই) দুপুর ১টা ৪১ মিনিটে কড়া নিরাপত্তায় কারাগার থেকে এস এম তানভীর আরাফাতকে কুষ্টিয়া আদালতে আনা হয়। এরপর দৌলতপুর আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তফা পারভেজের আদালতে হাজিরা করা হয়। এরপর তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে ১টা ৫১ মিনিটে আদালত থেকে তাকে আবার কারাগারে পাঠানো হয়।
গত ২৬ ডিসেম্বর বিএনপির আরেক কর্মী সুজন মালিথাকে গুলি করে হত্যা মামলার প্রধান আসামি এই পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর থেকে তিনি কুষ্টিয়া কারাগারে আছেন।
আরো পড়ুন:
মেহেরপুরে হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড
গজারিয়ায় প্রতিপক্ষের গুলিতে ‘শুটার’ মান্নান নিহত
উপপুলিশ কমিশনার এস এম তানভীর আরাফাত সিলেট রেঞ্জ ডিআইজি অফিসে সংযুক্ত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি খুলনার খালিশপুর উপজেলায়। কুষ্টিয়ায় চাকরিকালে বিতর্কিত ছিলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। কুষ্টিয়া জেলায় আসার পর থেকে নানা কর্মকান্ডে সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। এমনকি, তখন এ সব কর্মকাণ্ডের জন্য তাকে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়। বিভাগীয় শাস্তিও পেতে হয়।
নিহত বিএনপি কর্মী কুদরত আলীর ছেলে বাদী হয়ে ২০২৪ সালের ২ অক্টোবর দৌলতপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, কুদরত আলী বিএনপির সক্রিয় সমর্থক ছিলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে তিনি দলের সঙ্গে আছেন। এ কারণে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা ও কিছু সুবিধাভোগী পুলিশ সদস্য কুদরত আলীকে মিথ্যা মামলায় আটক ও হত্যার পরিকল্পনা করে। এই ষড়যন্ত্রের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ পরিদর্শক নিশিকান্ত সরকার, এসআই রোকনুজ্জামান, এসআই মেহেদী হাসান, এসআই শাহজাহান, এএসআই আনিচুর রহমান, পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আহমেদসহ অন্য পুলিশ সদস্যরা কুদরত আলীকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। ২০২০ সালের ২৩ জুলাই রাত ২টার দিকে ১০-১২ জন পুলিশ কুদরত আলীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। ২৫ জুলাই তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তার বুকের ডান দিকে ও বাম দিকে দুটি গুলির চিহ্ন, দুই হাতে, পিঠে, মুখে ও পায়ে আঘাতের চিহ্ন ছিল।
বাদী মামলায় দাবি করেন, কুদরত আলীকে গুম করে নির্যাতন ও গুলি করে হত্যা করে লাশ হাসপাতালের মর্গে রেখে চলে যায়।
দৌলতপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলাইমান শেখ জানান, দৌলতপুর থানার একটি মামলায় এস এম তানভীর আরাফাতকে গ্রেপ্তারের আবেদন করা হয়েছিল। সেই আবেদন আদালত মঞ্জুর করেছেন।
২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর বিএনপির কর্মী সুজন মালিথাকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে কুষ্টিয়া সাবেক এসপি এস এম তানভীর আরাফাতের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। গত ২৯ সেপ্টেম্বর নিহত সুজনের রাজনৈতিক বড় ভাই সুজন হোসেন (৪২) বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা করেন। মামলায় মোট ১৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
নিহত সুজন মালিথা কুষ্টিয়া সদর উপজেলার টাকিমারা গ্রামের ইসমাইল মালিথার ছেলে।
ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল