‘মিমির মানবিক আচরণে চোখে পানি চলে এসেছিল’
Published: 17th, June 2025 GMT
ছোট্ট শহরের একটি স্কুল। ক্লাসরুমে বসে আছে দু’টি শিশু—তারা জানে না ভবিষ্যতে তারাই হবে দেশের সবচেয়ে প্রশংসিত অভিনয়শিল্পীদের একজন। হ্যাঁ, কথাটা শুনতে সিনেমার গল্প মনে হলেও বাস্তবেই এমন ঘটেছে অভিনেতা জাহিদ হাসান ও অভিনেত্রী আফসানা মিমির জীবনে।
সম্প্রতি একটি পুরোনো সাক্ষাৎকার নতুন করে ছড়িয়েছে। সেখানে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে দুজনেই জানান—তারা একসময় সিরাজগঞ্জের হৈমবালা উচ্চ বিদ্যালয়ে একই ক্লাসে পড়েছেন। তবে চমকপ্রদ ব্যাপার হলো, তখন তারা একে অপরকে চিনতেন না!
জাহিদ হাসান বলেন, “আমি ওই স্কুলে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছি। স্কুলটি মূলত মেয়েদের হলেও ছেলেরা সেখানে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়তে পারত। এরপর আমাকে অন্য স্কুলে ভর্তি হতে হয়। তখনই মিমির সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন হয়ে যায়, যদিও আদৌ পরিচয় ছিল কি না—তা নিয়েই সন্দেহ।”
আরো পড়ুন:
দূরদেশে তারকাদের ঈদ
লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত অভিনেত্রী সানা
পরবর্তীতে ৯০-এর দশকের শুরুর দিকে ঢাকায় থিয়েটার করতে গিয়ে আবার তাদের দেখা হয়। তখনই একে অপরকে নতুন করে চেনা, জানার সুযোগ হয়।
আফসানা মিমি বলেন, “আমরা যখন থিয়েটার করতাম, তখন থেকেই পরিচয়। তবে বন্ধুত্বটা ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে। আমি মনে করি, মঞ্চে জাহিদ যে কয়টা নাটকে অভিনয় করেছে, সেগুলো দেখে আমরা পাগল হয়ে যেতাম। তার অভিনয় ছিল অনন্য।”
জাহিদ হাসান বলেন, “আমরা থিয়েটারের প্রশিক্ষণে বিভিন্ন গ্রুপে কাজ করতাম। সেখানেই এক গ্রুপে দেখা হয় মিমির সঙ্গে। পরে একদিন হঠাৎ করেই জানতে পারি—আমরা তো এক স্কুলে, এমনকি একই ক্লাসেও পড়েছি! তখন থেকে বন্ধুত্বটা গভীর হতে শুরু করে।”
এই বন্ধুত্ব এখন শুধু ব্যক্তিগত নয়, পারিবারিক সম্পর্কে পরিণত হয়েছে। এ বিষয়ে জাহিদ হাসান বলেন, “আমি একবার অসুস্থ ছিলাম, মিমি নিজে না এলেও ড্রাইভার দিয়ে আমার জন্য খাবার পাঠিয়েছিল। ওর সে মানবিক আচরণে আমার চোখে পানি এসে গিয়েছিল। বন্ধু, বোন না পরিবারের সদস্য—আমি বুঝে উঠতে পারিনি।”
মিমি হেসে যোগ করেন, “সাদিয়া ইসলাম মৌকে জাহিদ যখন বিয়ে করল, তখন আমাদের বন্ধুত্ব যেন আরো একধাপ গভীর হলো। আজও যদি কোনো বিষয়ে মতবিরোধ হয়, মৌ সবসময় আমার পক্ষে দাঁড়ায়!”
প্রসঙ্গত, বহুদিন পর ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘উৎসব’ সিনেমায় একসঙ্গে অভিনয় করেছেন জাহিদ হাসান ও আফসানা মিমি। সেখানে তাদের সঙ্গে আরো রয়েছেন জয়া আহসান, অপি করিম, চঞ্চল চৌধুরী ও আয়মান সাদিকসহ একঝাঁক তারকা। সিনেমাটির মতোই তাদের বাস্তব জীবনের সম্পর্কের গল্প যেন হয়ে উঠেছে এক নিটোল মধুর আখ্যান।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ট ভ ন টক চলচ চ ত র বন ধ ত ব
এছাড়াও পড়ুন:
মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীকে হেনস্তার ভিডিও ভাইরাল, হেনস্তাকারী গ্রেপ্তার
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীর পোশাক নিয়ে কটূক্তি ও হেনস্তার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার তিন দিন পর হেনস্তাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গ্রেপ্তার নাজিম উদ্দিন (৪৫) ওই বাসের কন্ডাক্টর ও চালকের সহকারী বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুরের বছিলা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একটি বাসে এক তরুণী তাঁর পোশাক নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদ করছেন। বাসে ওঠার পর সামনের আসনে বসা ওই ব্যক্তি তাঁর পোশাক নিয়ে অশোভন মন্তব্য করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তরুণী প্রতিবাদ জানাতে সামনে এগিয়ে যান এবং প্রশ্ন করেন, ‘আমার পোশাক নিয়ে আপনার সমস্যা কী?’ পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে ওই ব্যক্তি উঠে দাঁড়িয়ে তরুণীকে চড় মারেন। মুহূর্তেই তরুণী জুতা খুলে পাল্টা আঘাত করেন। ভিডিওতে আরও দেখা যায়, ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে দুজনই বাসের সামনের দিকে পড়ে যান। তরুণী নিজেকে সামলে নিয়ে আবারও প্রতিরোধ করেন।
ঘটনার ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর নানামুখী প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অনেকেই তরুণীর সাহসী অবস্থানের প্রশংসা করেছেন, অন্যদিকে কেউ কেউ ঘটনাটিতে উভয় পক্ষের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
নাজিম উদ্দিনকে আটক করার সঙ্গে যুক্ত র্যাব-৪–এর মেজর আবরার ফয়সাল সাদী প্রথম আলোকে বলেন, তরুণীকে কটূক্তি ও হেনস্তা করার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর হেনস্তকারী ব্যক্তিকে আটক করতে র্যাব-৪–এর একটি দল অভিযান শুরু করে। গতকাল সন্ধ্যায় নাজিম উদ্দিনকে শনাক্ত করে আটক করা হয়। পরে তাঁকে মোহাম্মদপুর থানায় সোপর্দ করা হয়।
যোগাযোগ করা হলে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিক প্রথম আলোকে বলেন, হেনস্তার শিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনে আজ শুক্রবার সকালে নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। ওই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নাজিম উদ্দিন ধানমন্ডি ১৫ থকে মোহাম্মদপুরের বছিলায় চলাচলরত রমজান পরিবহনের কন্ডাক্টর। ভাড়া নিয়ে কথা–কাটাকাটির জের ধরে তাঁদের দুজনের মধ্যে মারামারি হয়। ছাত্রীটি মোহাম্মদপুরের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন।
আজ সন্ধ্যায় পাঠানো র্যাব-৪–এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রমজান পরিবহনের একটি বাস ধানমন্ডি ১৫ থেকে মোহাম্মদপুরের বছিলায় যাচ্ছিল। বাসটি বছিলার মেট্রো হাউজিংয়ের সামনে পৌঁছালে চালকের সহকারী মো. নিজাম উদ্দিন বাসটির যাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীর দিকে তাকিয়ে তাঁর পোশাক নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। এতে ওই তরুণী প্রতিবাদ করায় নাজিম উদ্দিন তাঁর সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন এবং তাঁকে চড় মারেন। একপর্যায়ে তরুণীও আত্মরক্ষার্থে নিজের পায়ের জুতা খুলে অভিযুক্ত নাজিম উদ্দিনকে আঘাত করেন।