ইনজুরিতে কাটিয়ে মাঠে ফিরছেন বাংলাদেশের তিন পেসার তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইসলাম। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের প্রস্তুতি হিসেবে চট্টগ্রামে নিজেদের মধ্যে দুটি ওয়ানডে ম্যাচ খেলবেন ক্রিকেটাররা। ওই দুই ম্যাচে খেলবেন এই পেসত্রয়ী।

বিসিবির এক কর্মকর্তা সংবাদ মাধ্যম ক্রিকবাজকে বলেছেন, চট্টগ্রামের প্রস্তুতি ম্যাচে তাসকিন, মুস্তাফিজ ও শরিফুলকে পাওয়া যাবে। বিসিবির মেডিকেল বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, তারা তিনজন পূর্ণ হৃদমে বোলিং করতে পারছেন।

তবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে তাদের রাখা হবে কিনা প্রস্তুতি ম্যাচ দেখে বলা যাবে বলে উল্লেখ করেছে বিসিবির মেডিকেল বিভাগ, ‘তারা পূর্বের মতো করে বোলিং করতে পারছে। তবে অনেক দিন পরে ফেরায় তাদের ফিটনেস দেখতে হবে। তাদের বোলিং নিয়ে আপাতত কোন অভিযোগ নেই। তবে শ্রীলঙ্কা সফরে থাকবে কিনা প্রস্তুতি ম্যাচ দেখা বলা যাবে।’

তাসকিন আহমেদ অনেকদিন ধরেই গোড়ালির ইনজুরিতে ভুগছিলেন। তার গোড়ালিতে হাড় বেড়েছে। বিদেশে চিকিৎসক দেখিয়েছেন। ওই চিকিৎসক গোড়ালিতে অস্ত্রোপচার না করে ইনজুরি ম্যানেজমেন্ট করে খেলার পরামর্শ দিয়েছেন। মাঠে ফেরার অপেক্ষায় আছেন বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তিতে সবচেয়ে বেশি বেতন পাওয়া এই পেসার।

মুস্তাফিজুর রহমান আরব আমিরাতের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথমটি খেলে ভারতে আইপিএলে অংশ নেন। দিল্লির গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে তিনি আঙুলের ইনজুরিতে পড়েন। যে কারণে পাকিস্তানে টি-২০ সিরিজ খেলতে যেতে পারেননি এই বাঁ-হাতি পেসার। ইনজুরি কাটিয়ে উঠেছেন তিনিও। শরিফুল পাকিস্তান সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে মাংসপেশির ইনজুরিতে ছিটকে গিয়েছিলেন।

বাংলাদেশ আগামী ১০ জুলাই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচ খেলবে। পরের ম্যাচ দুটি যথাক্রমে ১৩ ও ১৬ জুলাই মাঠে গড়াবে। চট্টগ্রামে ২৩ ও ২৫ জুনের প্রস্তুতি ম্যাচ শেষে ওয়ানডে সিরিজের দল ঘোষণা করবেন বিসিবির নির্বাচকরা। ওয়ানডের পর বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা টি-২০ সিরিজও খেলবে।   

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম স ত ফ জ র রহম ন প রস ত ত ইনজ র ত

এছাড়াও পড়ুন:

আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসা নিচ্ছেন তো

ইসলামে সুস্থতার লক্ষ্য হলো আল্লাহর ইবাদতের পথে অবিচল থাকা। যদি কোনো বাধা এই পথে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে, তবে তা দূর করা প্রয়োজন। ইসলাম বলে, মানসিক অসুস্থতা শুধু ক্লিনিক্যাল লক্ষণে সীমাবদ্ধ নয়।

ইসলাম চরিত্রের ত্রুটি, যেমন অহংকার (কিবর), হিংসা (হাসাদ) বা দুনিয়ার প্রতি অতিরিক্ত ভালোবাসা (হুব্বুদ দুনিয়া), যা ক্লিনিক্যাল মাত্রায় না পৌঁছালেও আধ্যাত্মিক অসুস্থতা হিসেবে বিবেচনা করে।

নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যার হৃদয়ে এক পরমাণু পরিমাণ অহংকার থাকবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৯১)

কীভাবে চিকিৎসা নেবেন

ইসলামি ঐতিহ্যে আধ্যাত্মিক প্রশিক্ষণ (রিয়াদাহ আন-নাফস) এবং আধ্যাত্মিক গুরুর সঙ্গে কাজ করা আধ্যাত্মিক স্থিতিস্থাপকতা বাড়ায়। এই প্রশিক্ষণ আমাদের দৈনন্দিন চাপ মোকাবিলার জন্য মানসিক ও আধ্যাত্মিক কৌশল শেখায়।

যার হৃদয়ে এক পরমাণু পরিমাণ অহংকার থাকবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৯১আরও পড়ুনআয়েশা (রা.) রাগ করলে নবীজি (সা.) কী করতেন১২ জুন ২০২৫

যখন কেউ ক্লিনিক্যাল মানসিক অসুস্থতায় ভোগেন, তখন প্রথমে ক্লিনিক্যাল চিকিৎসার মাধ্যমে তাদের দৈনন্দিন কার্যকারিতা পুনরুদ্ধার করা হয়। এরপর আধ্যাত্মিক ত্রুটিগুলোর চিকিৎসা শুরু হয়, যাতে তারা আল্লাহর সন্তুষ্টি (মারদাতিল্লাহ) অর্জন করতে পারে।

এ জন্য ভালো হলো, কোনো আল্লাহভীরু মানুষের সান্নিধ্য গ্রহণ করা। পবিত্র কোরআন বলছে, ‘হে বিশ্বাসীগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্যপন্থীদের সান্নিধ্য গ্রহণ করো’ (সুরা তাওবা, আয়াত: ১১৯)।

শারীরিক স্বাস্থ্যের মতো, মানসিক ও আধ্যাত্মিক স্বাস্থ্যের জন্যও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা অপরিহার্য। আধুনিক সমাজের ক্রমাগত উৎপাদনশীলতার চাপ থেকে মুক্তি পেতে আমাদের জীবনে বিরতি (পজ) আনতে হবে।

প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

চারটি অভ্যাস আমাদের আত্মাকে পুষ্টি দেয় এবং ভারসাম্য ফিরিয়ে আনে:

১. চিন্তামূলক অভ্যাস: নামাজের আগে বা পরে চোখ বন্ধ করে ধীরে ধীরে শ্বাস নিন। প্রকৃতির মধ্যে বসে ‘আল্লাহ’ নাম জপ করুন, আল্লাহর প্রতি নিমগ্ন ধ্যান করুন; যাকে ইসলামে মুরাকাবা। এ ছাড়া বই পড়া (বিবলিওথেরাপি) মানসিক চাপ কমায় এবং আত্মসচেতনতা বাড়ায়। যেমন: গাজার মুসলিমদের দুঃখের কথা ভেবে নিজের দুঃখকে কম গুরুত্বপূর্ণ মনে হতে পারে।

২. সৃজনশীল অভ্যাস: ধাঁধা, আসবাব তৈরি বা অঙ্কনের মতো সৃজনশীল উপকারী কাজ মননশীলতা বাড়ায়। এটি ইসলামের ইহসান (শ্রেষ্ঠত্ব) ধারণার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যা উদ্দেশ্য ও নিয়তের সঙ্গে কাজ করতে উৎসাহিত করে। এই কাজগুলো মানসিক শান্তি দেয় এবং বার্নআউট প্রতিরোধ করে।

আরও পড়ুননামাজে দাঁড়িয়ে নানা চিন্তার আনাগোনা২২ জানুয়ারি ২০২৩শারীরিক স্বাস্থ্যের মতো, মানসিক ও আধ্যাত্মিক স্বাস্থ্যের জন্যও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা অপরিহার্য। আধুনিক সমাজের ক্রমাগত উৎপাদনশীলতার চাপ থেকে মুক্তি পেতে আমাদের জীবনে বিরতি (পজ) আনতে হবে।

৩. শারীরিক অভ্যাস: ব্যায়াম, বাগান করা বা তিরন্দাজির মতো কার্যকলাপ আত্মার প্রশিক্ষণ (রিয়াদাহ আন-নাফস) দেয়। নবীজি (সা.) সাঁতার, ঘোড়দৌড়, এবং তিরন্দাজিকে উৎসাহিত করেছেন, কারণ এগুলো শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য বাড়ায়। প্রকৃতিতে হাঁটা আল্লাহর সৃষ্টির প্রতি কৃতজ্ঞতা জাগায় এবং আধ্যাত্মিক সংযোগ গড়ে।

৪. আধ্যাত্মিক অভ্যাস: পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আবশ্যক। এরপর রাতের নামাজ (তাহাজ্জুদ), সোমবার ও বৃহস্পতিবার সুন্নত রোজা রাখা এবং কোরআন তিলাওয়াতের মতো অভ্যাস বাড়ানো যেতে পারে। প্রতিদিন কয়েকটি পয়সা দিয়ে হলেও সামান্য সাদাকা আত্মার পুষ্টি জোগায়। এই অভ্যাসগুলো আমাদের নফসকে নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য বাড়ায়।

প্রতিবেশীদের ভূমিকা

মহানবী (সা.)-এর জীবন থেকে আমরা শিখি, নির্জনতা নয়, বরং মানুষের সঙ্গে সংযোগ মানসিক ও আধ্যাত্মিক স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। তিনি একজন ব্যক্তির দুঃখ লক্ষ করে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন এবং দোয়া শিখিয়ে সান্ত্বনা দিয়েছেন।

আমাদেরও পরিবার, বন্ধু এবং প্রতিবেশীদের প্রতি সতর্ক থাকতে হবে। জুমার নামাজ বা জামাতে নামাজে আমরা একে অপরের খোঁজ নিতে পারি। যদি কেউ দুর্বল মনে হয়, তবে তাদের সমর্থন দিন বা বিশেষজ্ঞের কাছে পাঠান। এই সহানুভূতি ইসলামের শিক্ষার মূল।

 সূত্র: মুসলিম ডটএসজি

আরও পড়ুনহিজরি কালপঞ্জি: ইসলামি পরিচয়ের ধারণা২৩ মে ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ