Samakal:
2025-08-10@17:24:21 GMT

সেই বর্ষণমুখর বিষণ্ন দিনে!

Published: 23rd, June 2025 GMT

সেই বর্ষণমুখর বিষণ্ন দিনে!

এই গল্প গত বছরের বর্ষাকালের। প্রবল বৃষ্টিতে চারদিকে কত পানি জমেছিল! অথচ পান করার উপযোগী পানি ছিল না। মেঘলা আকাশের দিকে তাকিয়ে সেদিন ভেবেছিলাম, ফেনীর আকাশে নিশ্চয়ই আমাদের মতো বাকিদেরও পানির জন্য হাহাকার দেখা দিয়েছে। প্লাবনে ধেয়ে আসা পানি বিষাক্তই হবে। শরীরে লাগতেই কেমন বিষক্রিয়া দেখা দেয়! এদিকে বোতলে মজুত থাকা পানিও শেষ হচ্ছে– যা আগের রাতে দোতলায় উঠে আসার সময় তোলা হয়েছিল।
বাসায় কিছু বোতলে পানি ভরে রাখা হতো, যাতে সহজে পান করা যায়। সে রাতে হু-হু করে বন্যার পানি বেড়ে ছিল। কিছুই ওপরে তোলার সময় ছিল না। একতলায় কোমরসমান পানিতে কোনোমতে খুঁজে খুঁজে কয়েকটি বোতল তোলা হলো। পরিবার আর আশ্রয় নেওয়া মানুষের তুলনায় তা তুচ্ছ ছিল!
শুধু গলাটা ভেজাতেই পানি শেষ হওয়ার আতঙ্ক! প্রাণভরে পান করার জো নেই। কেউ কেউ আবার বোতলের দিকে হাত বাড়ানোর সাহস করছে না পাছে তা খালি হয়ে যায়। এমন আতঙ্কের রাত যখন শেষের দিকে। তখনও গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল। ভোরের আলো ফোটেনি। আবছা আলোতেই নিচ থেকে তুলে আনা কিছু পাত্র জড়ো করলাম। দোতলার রুমের একপাশে ছাদে কিছুটা জায়গা খালি ছিল। সেখানে উন্মুক্ত আকাশের নিচে পাত্রগুলো সাজিয়ে দিলাম। এই মুহূর্তে ভারী বৃষ্টির কামনা আত্মহত্যা কামনা করার মতোই! কারণ রাতের মধ্যে একতলা প্রায় ডুবে গেছে। এভাবে ভারী বৃষ্টিতে দোতলায় পানি উঠে গেলে যাব কোথায়?
তবুও আকাশের দিকে তাকিয়ে কিছুক্ষণের জন্য বৃষ্টি কামনা করলাম। অন্তত পাত্রগুলো ভরে গেলে বোতলগুলো পূর্ণ করতে পারব। সবাই তৃষ্ণা মেটাতে পারব। সঙ্গে থাকা মা-বাবা আর পরিবারের শিশুসন্তানদের জন্য বেশি চিন্তা হচ্ছিল। আমার বাসনা পূর্ণ হলো। কিছুক্ষণ পরেই মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হলো। পাত্রগুলো ধীরে ধীরে পূর্ণ হতে লাগল। পাত্রে যত পানি দেহে তত প্রাণ সঞ্চার হচ্ছিল। কিছুক্ষণের জন্য পাত্রগুলোকেই আপন মনে হলো। এভাবেই দু’দিন কেটেছে। এখন বন্যা নেই। পান করার পানিরও অভাব নেই। এই পাত্রগুলো দিয়ে বৃষ্টির পানি সংগ্রহ করে পান করেছিলাম, তাই সেগুলোর দিকে নজর চলে যায়। মনে হয় বৃষ্টির দিনের সঙ্গ দেওয়া সঙ্গী কত আপনজন হয়ে আমার সঙ্গে আছে! বর্ষা আবারও এসেছে। আমাদের কপালে দুশ্চিন্তার রেখা দেখা দিয়েছে! v
সভাপতি সুহৃদ সমাবেশ, ছাগলনাইয়া (ফেনী)
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স হ দ সম ব শ প ত রগ ল র জন য প ন কর

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশের রাজনীতির আকাশে মেঘের ঘনঘটা: নুরুল হক

বাংলাদেশে আগামীতে অনেক ধরনের রাজনৈতিক সংকট তৈরি হতে পারে বলে মনে করেন গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। তিনি বলেন, ‘সেই সংকট থেকে আগামীতে ওয়ান–ইলেভেনের কিংবা ফ্যাসিবাদের পরিস্থিতির দিকে আমাদের নিয়ে যাওয়া হতে পারে। অনেকেই মনে করছেন, রাজনৈতিক বোঝাপড়া হয়ে গেছে। নির্বাচন হবে, কেউ সরকারে যাবে অন্যরা বিরোধী দলে; পরিবেশ স্বাভাবিক হয়ে যাবে। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতির আকাশে মেঘের ঘনঘটা দেখা যাচ্ছে। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হলেও এখনো শঙ্কা কাটেনি।’

আজ রোববার বিকেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘আঠারো থেকে চব্বিশ, কোটা সংস্কার থেকে রাষ্ট্রসংস্কার’ শীর্ষক আলোচনা সভায় নুরুল হক এ কথা বলেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র অধিকার পরিষদ এ সভার আয়োজন করে।

ডাকসুর সাবেক ভিপি (সহসভাপতি) নুরুল হক বলেন, ‘এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় যদি লক্ষ করেন, রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হতে পারে নাই। যখন ছাত্রসংগঠনগুলো সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য গঠন করেছিল, তখন রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। চব্বিশের গণ অভ্যুত্থানেও রাজনৈতিক দলগুলো সিদ্ধান্ত নিতে পারে নাই। এখন যদি আসল কথা বলি, অনেকের সাংগঠনিক শক্তি, জনশক্তি আমার বিরুদ্ধে নানান প্রোপাগান্ডা ছড়াবে।’

চব্বিশের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সব রাজনৈতিক দলের সব নেতার সঙ্গে কথা বলেছেন জানিয়ে গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, ‘আমি বলেছিলাম, আপনারা ১৯ জুলাইয়ের বীভৎসতা সম্পর্কে জানেন। সেই পরিস্থিতির পরও যদি আমরা কিছু না করতে পারি, তাহলে আমাদের ভয় নিয়ে এ দেশে বাস করতে হবে। কাজেই রাজনৈতিক দলগুলো আর বসে থাকবেন না, সিদ্ধান্ত নেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘বরিশালের আঞ্চলিক এক বড় নেতা বললেন, ‘‘তোমাগো কি খাইয়াদাইয়্যা কাম নাই, খালি সরকার পতন খুঁজো সব জায়গায়, কোটার মধ্যেই থাকো।’’ আমরা যে একদফায় যাব, এটায় তিনি একমত নন। এ রকম আরও অনেকেই সরকারের পতনের একদফায় একমত হননি।’

ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলগুলো ছাত্রসংগঠনগুলোকে লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে ব্যবহার করেছে উল্লেখ করে নুরুল হক বলেন, ‘নব্বই দশক থেকে ফ্যাসিবাদী আমল পর্যন্ত অস্ত্রের ঝনঝনানি, পেশিশক্তি ও আধিপত্যের রাজনীতির বিপরীতে সুষ্ঠু রাজনীতির পরিবেশ ও সৃজনশীল মেধাভিত্তিক রাজনৈতিক চর্চার পদক্ষেপ নিতে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলগুলোকে দেখি নাই। কারণ, তারা ছাত্রসংগঠনগুলোকে রাজনীতিতে লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে ব্যবহার করেছে। মেধাবীদের পরিবর্তে তারা নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য একদল গুন্ডার হাতে ছাত্ররাজনীতির নেতৃত্ব তুলে দিয়েছে। যার জন্য ছাত্ররাজনীতি তরুণদের কাছে ঘৃণার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ছাত্ররাই আমার ভরসা। তারাই যেকোনো সংকটে লড়াই করেছে, তারাই জীবন দিয়েছে। আগামীতেও ছাত্রদের সজাগ থাকতে হবে।’

অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান। বিশেষ অতিথি ছিলেন ২০১৮ সালের কোটার সংস্কার আন্দোলন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক মাসুদ মোন্নাফ।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আল শাহারিয়া শুভর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সভাপতি মেহেদী হাসান মারুফ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ