সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে আগের নিয়োগ ব্যবস্থা ফ্যাসিবাদী নীতির শামিল: মঞ্জু
Published: 25th, June 2025 GMT
এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, “হাজারো প্রাণ আর রক্তের স্রোত মাড়িয়ে যে গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে তার প্রধান আকাঙ্ক্ষা হলো ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ। হাসিনার মতো একচ্ছত্র ক্ষমতা চর্চার সংস্কৃতি বজায় থাকলে সংস্কার বলতে কিছুই হবে না। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে আগের মতো নিয়োগ ব্যবস্থা বজায় রাখা ফ্যাসিবাদী নীতিতে অটল থাকার শামীল।”
বুধবার (২৫ জুন) রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি, সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি নিয়ে আলোচনা হয়। আলোচনায় এবি পার্টির পক্ষ থেকে প্রতিনিধিত্ব করেন দলের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার সানী আব্দুল হক।
রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি প্রসঙ্গে মঞ্জু বলেন, “সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, গণতন্ত্র এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা-সম্প্রীতি ও পক্ষপাতহীনতা এই অভিপ্রায়গুলো যুক্ত করলে সব পক্ষের মতামতকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু দুঃখজনকভাবে শুধু ভাষার হেরফেরের কারণে এই বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি।”
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে ‘আমরা কোনো বিষয়ে একমত হব না এটাই যেন আমাদের আলোচনার মূলনীতি।”
সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটির আলোচনায় এবি পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, “আমাদের সংস্কারের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে সাংবাদিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিরপেক্ষ রাখার ব্যবস্থা করা এবং সংবিধান সংশোধনের পদ্ধতিকে কঠিন করা। অতীতে শেখ হাসিনা নিজের ইচ্ছামত দলবাজ লোক নিয়োগ দিয়ে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করেছে। এখনো যদি সেই ব্যবস্থা বজায় রাখার পক্ষে কোনো দল মত দেয় তাহলে বোঝা যাবে তারা আসলে ফ্যাসিবাদী নীতি পরিবর্তনে অনিচ্ছুক।”
এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার সানী আব্দুল হক বলেন, “সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ পদে নিয়োগের জন্য প্রস্তাবিত কমিটি গঠিত হলে রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা হ্রাস পাবে এমন ধারণা সঠিক নয়। বরং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর গঠনপ্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক করতে পারলে নির্বাহী বিভাগের জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।”
ব্যারিস্টার সানী আরো বলেন, “প্রত্যেকটি দল তাদের নিজ নিজ রাজনৈতিক চিন্তা, মত দর্শনকে প্রাধান্য না দিয়ে কিভাবে ঐকমত্যের পথে অগ্রসর হওয়া যায় সেটি বিবেচনায় নেওয়াই প্রত্যাশিত। নতুবা জুলাই অভ্যুত্থানের আকাঙ্খার বাস্তবায়ন হবে সুদূর পরাহত।”
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ডাকসু ভবন ও তিন হলের প্রবেশপথে মাটিতে পাকিস্তান-ভারতের পতাকা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু ভবন ও তিন হলের প্রবেশপথে পাকিস্তানের পতাকা মাটিতে সেঁটে দেওয়ার পর ভারতসহ কয়েকটি দেশের পতাকা একইভাবে সেঁটে দেওয়া হয়। এ নিয়ে দিনভর ঢাবি ক্যাম্পাস ও সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনা-সমালোচনা দেখা যায়।
ভারত-পাকিস্তান ছাড়া আরো যেসব দেশের পতাকা সেঁটে দেওয়া হয়েছে। সেগুলো হলো- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও যুক্তরাজ্য। শিক্ষার্থীদের এসব পতাকা মাড়িয়ে প্রবেশ ও বাহির হতে দেখা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, রবিবার দিবাগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের শিক্ষার্থী রাকিব রহমানের নেতৃত্বে একদল শিক্ষার্থী প্রথমে শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ও ডাকসু ভবনের প্রবেশমুখে পাদদেশে পাকিস্তানের পতাকা মাটিতে সেঁটে দেয়।
ওই পতাকায় নো কম্প্রোমাইজ উইথ রাজাকারসহ গালিসূচক আরেকটি শব্দগুচ্ছ খচিত ছিল। তারা পতাকা মাটিতে সেঁটে দেওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেন এবং বিজয়ের মাসে ঢাবিতে কোনো পাকিস্তান প্রেম চলবে না বলে ঘোষণা দেন।
পরবর্তীতে সোমবার সকালে ডাকসু ভবনে প্রবেশপথে পাকিস্তানের পতাকার পাশে ভারত ও ইসরায়েল এবং শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে পাকিস্তানের পতাকার পাশাপাশি ভারতের পতাকা সেঁটে দেওয়া হয়।
তবে, কে বা কারা এসব করেছে তা জানা যায়নি। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল ও বিজয় একাত্তর হলের প্রবেশমুখে পাকিস্তান ও ভারত উভয়ের পতাকায় মাটিতে সেঁটে দেওয়া অবস্থায় পাওয়া যায়। বিকেলের দিকে ডাকসু ভবনের সামনে সাঁটানো পতাকার পাশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের পতাকাও সেঁটে দেওয়া অবস্থায় পাওয়া যায়।
ডাকসু ভবন ও তিন হলের প্রবেশপথে পতাকা সেঁটে দেওয়া নিয়ে ঢাবি ক্যাম্পাস ও সোশ্যাল মিডিয়ায় দিনভর আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
ঢাকা/সৌরভ/রাজীব