বাউলদের ওপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা অপরিহার্য: আসক
Published: 24th, November 2025 GMT
মানিকগঞ্জে বাউলশিল্পী আবুল সরকারকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় তাঁর ভক্ত ও অনুরাগীদের আয়োজিত শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে ‘তৌহিদি জনতা’ পরিচয়ে হামলা, মারধর ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। এই হামলার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা অপরিহার্য বলে উল্লেখ করেছে মানবাধিকার সংগঠনটি।
আজ সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলেছে আসক। একই সঙ্গে গ্রেপ্তার বাউলশিল্পীর ক্ষেত্রে আইনানুগ প্রক্রিয়া, ন্যায়বিচার এবং স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকার নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। তারা বলছে, ‘শিল্পী–সংস্কৃতিকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব, যা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হলে আরও সংঘাত, সহিংসতা এবং সামাজিক অসহিষ্ণুতা বৃদ্ধি পেতে পারে।’
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘শান্তিপূর্ণ মতপ্রকাশের অধিকার ও গণজমায়েতে হামলা করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়; বরং এটি সংবিধান স্বীকৃত নাগরিক অধিকার লঙ্ঘনের সুস্পষ্ট উদাহরণ।’
নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকারের প্রসঙ্গ তুলে ধরে আসক বলেছে, ‘বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৭ ও ৩৯ অনুচ্ছেদে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার এবং সংস্কৃতিচর্চার স্বাধীনতা সুস্পষ্টভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে। বাউল ঐতিহ্যসহ দেশের সব সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক ধারা রক্ষা করা রাষ্ট্রের সাংবিধানিক দায়িত্ব। কোনো গোষ্ঠীর মতাদর্শিক অবস্থান বা সামাজিক চাপের অজুহাতে শিল্প-সংস্কৃতির ওপর হামলা বা বাধা দেওয়ার চেষ্টা আইন ও মানবাধিকারের পরিপন্থী।’
সম্প্রতি বাউলশিল্পী ও সংস্কৃতিকর্মীদের ওপর হুমকি ও হামলার একাধিক ঘটনা ঘটেছে উল্লেখ করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আসক বলেছে, ‘এসব ঘটনায় কার্যকর ও সময়োপযোগী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় দেশে শিল্প–সংস্কৃতিবিরোধী গোষ্ঠী আরও উৎসাহিত হয়ে উঠছে এবং একই সঙ্গে হামলার ঘটনাগুলোর পুনরাবৃত্তি ঘটছে। চলমান এই প্রবণতা আইনের শাসন, মানবাধিকার সুরক্ষা ও সাংস্কৃতিক স্বাধীনতার জন্য গভীর হুমকি বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মিসরের গোয়েন্দাপ্রধানের সঙ্গে হামাসের শীর্ষ প্রতিনিধিদলের বৈঠক
ইসরায়েল ও হামাস বারবার একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলছে। এমন পরিস্থিতিতে যুদ্ধবিরতি চুক্তি ও গাজার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে হামাসের শীর্ষ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল গতকাল রোববার কায়রোতে মিসরের গোয়েন্দাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেছে। সংগঠনটির পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে মধ্যস্থতার দায়িত্ব পালন করছে মিসর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্র। তারা গত মাসে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করেছিল।
আরও পড়ুনযুদ্ধবিরতির মধ্যেই গাজায় নিহত ৬৯ হাজার ছাড়াল ০৯ নভেম্বর ২০২৫এক বিবৃতিতে হামাস জানায়, তারা মিসরের গোয়েন্দাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠকে যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ বাস্তবায়নে নিজেদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। তবে অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল বারবার চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করায় এটি হুমকির মুখে পড়েছে।
হামাসের ওই প্রতিনিধিদলে ছিলেন নির্বাসনে থাকা হামাস নেতা খলিল আল-হায়া। তিনি মধ্যস্থতাকারীদের তত্ত্বাবধানে চুক্তির শর্ত লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো বন্ধ এবং এসব ঘটনা নথিবদ্ধ করতে একটি ‘স্পষ্ট ও নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া’ ঠিক করার আহ্বান জানান।
হামাস আরও জানায়, গাজার দক্ষিণের রাফাহ অঞ্চলের সুড়ঙ্গগুলোয় অবস্থানরত হামাস যোদ্ধাদের বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে সমাধান খুঁজে বের করতে মিসরের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এসব যোদ্ধার সঙ্গে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বলেও জানিয়েছে সংগঠনটি।
আরও পড়ুনযুদ্ধবিরতির এক মাস পরও গাজার সুড়ঙ্গগুলোয় কেন আটকে আছেন হামাস যোদ্ধারা১৭ নভেম্বর ২০২৫চলতি মাসের শুরুতে রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছিল, গাজার ইসরায়েল-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় বিভিন্ন সুড়ঙ্গে আটকা পড়া হামাস যোদ্ধাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে সমাধান খুঁজছেন মধ্যস্থতাকারীরা।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, হামাসের এক যোদ্ধা গাজায় ইসরায়েল-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় প্রবেশ করে ইসরায়েলি সেনাদের ওপর হামলার চেষ্টার পর গত শনিবার ইসরায়েলি বাহিনী হামাসের পাঁচ জ্যেষ্ঠ সদস্যকে হত্যা করেছে।
গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানায়, শনিবার ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ২০ জন নিহত হয়েছেন।
গতকাল ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানায়, শনিবারের হামলায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে হামাসের এক স্থানীয় কমান্ডারও ছিলেন।
আরও পড়ুনযুদ্ধবিরতি শুরুর পর গাজায় দেড় হাজারের বেশি ভবন ধ্বংস ইসরায়েলের১২ নভেম্বর ২০২৫