যশোরে চাচাতো ভাইকে হত্যায় দুই ভাইয়ের মৃত্যুদণ্ড
Published: 24th, November 2025 GMT
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলায় জমি নিয়ে বিরোধে একটি হত্যা মামলায় দুই ভাইয়ের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার দুপুরে যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পঞ্চম আদালতের বিচারক জুয়েল অধিকারী এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার ছোট পোদাউলিয়া গ্রামের ওসমান গণি (৪০) ও আলী হোসেন (৩৫)। তাঁদের চাচাতো ভাই একই গ্রামের কামরুজ্জামানকে (৪৫) হত্যার দায়ে আদালত এ রায় দেন।
এ মামলার অপর আসামি দণ্ডপ্রাপ্ত ওসমানের স্ত্রী খাদিজা খাতুনকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আজিজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহার অনুযায়ী, ছোট পোদাউলিয়া গ্রামের রুহুল আমিন সরদারের ছেলে কামরুজ্জামানের সঙ্গে তাঁর চাচাতো ভাই ওসমান ও আলী হোসেনের জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। ২০২৩ সালের ৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় নিজের জমিতে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করা নিয়ে কামরুজ্জামানের সঙ্গে ওসমান ও আলী হোসেনের বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তাঁরা বাড়ি থেকে ধারালো দা এনে কামরুজ্জামানকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করেন।
কামরুজ্জামানকে বাঁচাতে গিয়ে তাঁর বড় ভাইয়ের স্ত্রী আনোয়ারা, ছোট ভাইয়ের স্ত্রী পারভীন ও ভাইপো আতাউর রহমানও হামলার শিকার হন। ওই চারজনকে কুপিয়ে জখম করার পর ওসমান ও আলী হোসেন পালিয়ে যান। পরে স্থানীয় লোকজন আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে চারজনকেই যশোর জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে নেওয়ার পর কামরুজ্জামানের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় নিহত কামরুজ্জামানের বাবা রুহুল আমিন সরদার বাদী হয়ে তিনজনের বিরুদ্ধে পরদিন ৮ সেপ্টেম্বর মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত শেষে ২০২৪ সালের ৩ জুলাই ঝিকরগাছা থানার উপপরিদর্শক বনি ইসরাইল আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। আসামিপক্ষের দাবি, তারা ন্যায়বিচার পায়নি। এ বিষয়ে তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ডাকসু সদস্য রাফিয়ার বাড়িতে রাতে ককটেল নিক্ষেপের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৪
ময়মনসিংহে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সদস্য উম্মা উসওয়াতুন রাফিয়ার বাড়িতে ককটেল নিক্ষেপ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে পৃথক অভিযানে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গত বুধবার রাত তিনটার দিকে ডাকসু সদস্য উম্মা উসওয়াতুন রাফিয়ার ময়মনসিংহ নগরের ঢোলাদিয়া এলাকার বাসায় ককটেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুনডাকসু সদস্য রাফিয়ার ময়মনসিংহের বাড়িতে গভীর রাতে ককটেল নিক্ষেপ২০ নভেম্বর ২০২৫গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন নগরের কেওয়াটখালী এলাকার মো. মাসুদ রানা (৪৫), আকুয়া বোর্ডঘর এলাকার মো. আরিফ (৩০), মো. বিপুল (২১), আকুয়া ওয়্যারলেস গেট এলাকার মো. রাজন (১৯)। চারজনই কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও কোতোয়ালি মডেল থানার সমন্বয়ে পরিচালিত যৌথ অভিযানে ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগে বৃহস্পতিবার রাতে নগরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ককটেল ছোড়ার ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকেলে রাফিয়ার ভাই খন্দকার জুলকারনাইন কোতোয়ালি মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। পরে সেটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, বুধবার রাত ২টা ৫০ থেকে তিনটার মধ্যে বিকট শব্দে তাঁদের বাসার সবার ঘুম ভেঙে যায়। পরে সকালে ঘুম থেকে উঠে বাসার নিচে এসে দেখা যায়, বাসার গেটের একাংশ পুড়ে কালো হয়ে আছে এবং গেটের সামনে কিছু পোড়া ছাই পাওয়া যায়। বাসার গেটের আশপাশে কেরোসিন ও পেট্রলের গন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ডাকসু নেত্রী রাফিয়ার বাসভবনের গেটে দুষ্কৃতকারীদের অগ্নিসংযোগের ঘটনাটির পরপর পুলিশ তৎপরতা শুরু করে। ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট চারজনকে গ্রেপ্তার করে আজ শুক্রবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া এ ঘটনায় জড়িত অন্যদের বিষয়ে গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে এবং গ্রেপ্তারের অভিযান চলমান আছে।