একসময় টেলিভিশন (টিভি) ছিল নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট অনুষ্ঠান উপভোগ, অর্থাৎ একটি সীমাবদ্ধ বিনোদনের জগৎ। প্রযুক্তির বিবর্তন বর্তমানে সেই অভিজ্ঞতাকে পুরোপুরি বদলে দিয়েছে। এখন ব্যবহারকারীরা টিভিতে নিজের সময় ও পছন্দ অনুযায়ী কনটেন্ট বেছে নিতে পারেন। আর এ পরিবর্তনের পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে স্মার্ট টিভি ও অনলাইন স্ট্রিমিং সার্ভিসগুলো।

আজকের দিনে স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মগুলো বিশ্বের কোটি কোটি দর্শকের হাতে তুলে দিয়েছে অফুরন্ত বিনোদনের ভান্ডার। সিনেমা, ওয়েব সিরিজ, ডকুমেন্টারি কিংবা লাইভ কনসার্ট—এক ক্লিকেই এখন সবকিছু। ফলে দর্শকেরা এখন আর টিভি চ্যানেলের সময়সূচির ওপর নির্ভরশীল নন; বরং নিজের মুড ও সময় অনুযায়ী বেছে নিতে পারেন নিজের পছন্দের কনটেন্ট।

এই নতুন ধারার সঙ্গে তাল মেলাতে টেলিভিশন প্রযুক্তিতেও এসেছে আমূল পরিবর্তন। আধুনিক স্মার্ট টিভিগুলো এখন অনেকটা স্মার্টফোনের মতোই কাজ করে। এই টিভিগুলোতে পাওয়া যায় দ্রুত ও স্মুথ পারফরম্যান্সের সুবিধা, হাই কোয়ালিটি অ্যাপ সাপোর্ট এবং সহজবোধ্য স্মার্ট হাব ইন্টারফেস, যা ইউজারদের জন্য পুরো ব্যাপারকেই করে তুলেছে আরও সহজ ও স্বাচ্ছন্দ্যময়। কয়েকটি ক্লিকেই একসঙ্গে পাওয়া যাচ্ছে সব জনপ্রিয় অ্যাপ ও সার্ভিস, যেমন ইউটিউব, নেটফ্লিক্স, অ্যামাজন প্রাইম, এইচবিও ম্যাক্স, স্পটিফাই কিংবা স্থানীয় ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলো।

এর পাশাপাশি স্মার্ট টিভির অপারেটিং সিস্টেম ও প্রসেসর এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী। ফলে এখন টিভি দেখার সময় ইউজাররা পান দ্রুত অ্যাপ লোডিং টাইম, ল্যাগ-ফ্রি এক্সপেরিয়েন্স এবং হাই গ্রাফিকস পারফরম্যান্স। বিশেষ করে ২০২৩ সালের পর স্যামসাং স্মার্ট টিভিগুলো এ ক্ষেত্রে একটি নতুন মানদণ্ড তৈরি করেছে। তাদের টাইজেন অপারেটিং সিস্টেমভিত্তিক স্মার্ট হাব ইন্টারফেস ইউজারদের অভ্যাস বুঝে কনটেন্ট সাজেস্ট করে, ফলে এসব টিভিতে পছন্দের কোনো অনুষ্ঠান দেখা আরও সহজ। শুধু তা-ই নয়, নিয়মিত সফটওয়্যার আপডেটের মাধ্যমে স্মার্ট টিভিগুলোতে পারফরম্যান্স ও নিরাপত্তা বজায় থাকে সর্বোচ্চ মানে। এই আপডেটগুলো শুধু বাগ ফিক্স করে না; বরং নতুন ফিচার ও উন্নত সিকিউরিটি প্রটেকশনও যোগ করে, যা ইউজারদের ব্যক্তিগত তথ্য থেকে শুরু করে সবকিছু রাখে নিরাপদ।

নিয়মিত সফটওয়্যার আপডেটের মাধ্যমে স্মার্ট টিভিগুলোতে পারফরম্যান্স ও নিরাপত্তা বজায় থাকে সর্বোচ্চ মানে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রফরম য ন স

এছাড়াও পড়ুন:

৮ দেশের ১ হাজার ৮০০ তরুণ–তরুণীর অংশগ্রহণে ‘টেক কানেক্ট’–এর সমাপনী প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত

বাংলাদেশ ইউনেসকো জাতীয় কমিশনের সহযোগিতায় গ্রো ইয়োর রিডার ফাউন্ডেশন (জিওয়াইআরএফ)–এর উদ্যোগে আয়োজিত ‘টেক কানেক্ট: এমপাওয়ারিং ইয়ুথ টু বিকাম গ্লোবাল সিটিজেনস’ প্রকল্পের সমাপনী প্রদর্শনী আজ শনিবার ঢাকার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানটি বিশ্বব্যাপী লাইভস্ট্রিমের মাধ্যমে সম্প্রচারিত হয়, যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ হাজারো দর্শক অনলাইনে যুক্ত হন।

দুই ঘণ্টার এই বর্ণিল আয়োজনে বাংলাদেশ, ক্যামেরুন, কানাডা, কেনিয়া, নাইজেরিয়া, উগান্ডা, জাম্বিয়া ও জিম্বাবুয়ের শিক্ষার্থীরা এক মঞ্চে মিলিত হন, যা দীর্ঘ এক বছরের আন্তসাংস্কৃতিক শিক্ষাযাত্রার আনন্দঘন সমাপ্তি। শিক্ষার্থীরা তাঁদের সৃজনশীলতা, শেখার অভিজ্ঞতা ও বৈশ্বিক নাগরিকত্বের উপলব্ধি বিভিন্ন পারফরম্যান্স ও উপস্থাপনার মাধ্যমে তুলে ধরেন।

২০২৪ সালের নভেম্বরে শুরু হওয়া এ প্রজেক্টে তিনটি মহাদেশের আট দেশের মোট ১ হাজার ৮০০ শিক্ষার্থী যুক্ত ছিলেন। বছরজুড়ে জিওয়াইআরএফ বিভিন্ন বিদ্যালয়ের সঙ্গে কাজ করে শিক্ষা মডিউল তৈরি, কর্মশালা পরিচালনা ও অনলাইন এক্সচেঞ্জ সেশন আয়োজন করে। এসব কার্যক্রম শিক্ষার্থীদের মধ্যে সৃজনশীলতা, সহযোগিতা, সহমর্মিতা ও আন্তসাংস্কৃতিক বোঝাপড়া গড়ে তুলেছে এবং প্রমাণ করেছে প্রযুক্তি কীভাবে সীমান্ত পেরিয়ে তরুণদের একত্রে শেখা ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের সুযোগ তৈরি করতে পারে।

অনুষ্ঠানে পুরো মিলনায়তন ভরে ওঠে আবেগ, সুর, নৃত্য ও রঙিন এক উদ্দীপনায়। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা নৃত্য, নাটক, গান ও আবৃত্তির মাধ্যমে দেশের ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য, ঐতিহাসিক নিদর্শন, উৎসব–অনুষ্ঠান, সংস্কৃতি, স্থিতিস্থাপকতা ও বৈচিত্র্যের গল্প তুলে ধরেন। অপর দিকে আফ্রিকা ও উত্তর আমেরিকার শিক্ষার্থীরা তাঁদের নিজস্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও অভিজ্ঞতাকে প্রাণবন্ত পারফরম্যান্সের মাধ্যমে উপস্থাপন করেন।

পারফরম্যান্সগুলোয় উঠে আসে ঐতিহাসিক চেতনা, সাংস্কৃতিক দৃঢ়তা ও বৈশ্বিক নাগরিকত্বের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো। শিক্ষার্থীরা তাঁদের দেশ ও সমাজের গল্প শেয়ার করেন। আর শিক্ষক ও অতিথিরা ব্যাখ্যা করেন কীভাবে আন্তসাংস্কৃতিক সহযোগিতা তরুণদের মধ্যে পারস্পরিক সম্মান, সংযোগ ও বোঝাপড়া তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

অতিথিরা তাঁদের বক্তব্যে শ্রেণিকক্ষে গ্লোবাল সিটিজেনশিপ এডুকেশন অন্তর্ভুক্ত করার গুরুত্ব তুলে ধরেন। তাঁদের মতে, ‘টেক কানেক্ট’–এর মতো উদ্যোগ তরুণদের দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বে প্রস্তুত হতে সহায়তা করে এবং প্রযুক্তিনির্ভর আন্তসাংস্কৃতিক সংযোগের সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দেয়।

প্রধান অতিথি বাংলাদেশ ইউনেসকো জাতীয় কমিশনের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল সাবভীনা মনীর চিঠি ও বিশেষ অতিথি ইউনেসকো ঢাকা অফিসের প্রধান সুজান ভাইজ শিক্ষার্থীদের সাফল্য ও এ ধরনের আন্তসাংস্কৃতিক কর্মসূচির ইতিবাচক প্রভাব নিয়ে অনুভূতি প্রকাশ করেন।

গ্রো ইয়োর রিডার ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী সাদিয়া জাফরিন বলেন, এ প্রজেক্টটি প্রযুক্তিনির্ভর, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সৃজনশীল শিক্ষা গঠনে জিওয়াইআরএফের স্বপ্নকে আরও সামনে এগিয়ে নিয়েছে।

অনুষ্ঠানে ৪০০–এর বেশি অংশগ্রহণকারী সরাসরি উপস্থিত ছিলেন, আর অনলাইনে জিওয়াইআরএফের ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে ৭০ হাজারের বেশি দর্শক যুক্ত হন। ‘টেক কানেক্ট’ প্রজেক্টটি এসডিজি ফোর (মানসম্মত শিক্ষা) ও এসডিজি সেভেনটিন (লক্ষ্য অর্জনে পার্টনারশিপ) অর্জনে জিওয়াইআরএফের অঙ্গীকারকে নতুনভাবে তুলে ধরেছে, যেখানে শেখা, সংযোগ ও পারস্পরিক সহমর্মিতার মাধ্যমে তরুণেরা হয়ে উঠছেন বিশ্বমানের নাগরিক।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কেন রেকর্ড গড়ার সুযোগ পেলেন না মুশফিক, ব্যাখ্যা দিলেন আশরাফুল
  • কেন মুশফিকুরের সেঞ্চুরি পর্যন্ত অপেক্ষা করলো না বাংলাদেশ?
  • ৮ দেশের ১ হাজার ৮০০ তরুণ–তরুণীর অংশগ্রহণে ‘টেক কানেক্ট’–এর সমাপনী প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত