২০১৩ সালের ঢাকার সাভারের রানা প্লাজা ধসের পরে ‘নারীপক্ষ’ নামে একটি এনজিওর জন্য ৫০টি পাটের ব্যাগ তৈরির মাধ্যমে শুরু হয় ‘অপরাজেয়’–এর পথচলা। শুরু করার মাত্র চার মাসের মধ্যে দেশি ক্রয়াদেশের পাশাপাশি স্বল্প পরিমাণে শুরু হয় রপ্তানি। পরের বছর প্রতিষ্ঠানের আয় দিয়ে চালু করা হয় ‘সংকলন পাঠশালা’ নামের একটি অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়। সংকলন পাঠশালার ২৪৫ শিক্ষার্থীর বেশির ভাগই ছিল রানা প্লাজায় আহত ও অন্য পোশাকশ্রমিকদের সন্তান।

২০১৫ সালে এক অগ্নিদুর্ঘটনায় কারখানা পুড়ে ২৭ লাখ টাকার সম্পদের ক্ষতি হয়। তহবিল–সংকট ও অন্যান্য কারণে ২০১৬ সালে বিদ্যালয়টি বন্ধ হয়ে যায়। পরে ২০১৮ সালে ব্যক্তি বিনিয়োগে ‘অপরাজেয় লিমিটেড’ নামে শতভাগ রপ্তানিমুখী পাটপণ্য ও হস্তশিল্প উৎপাদন কারখানা চালু করেন কাজী মো.

মনির হোসেন। বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠান পাটের তৈরি ব্যাগ, হোগলাপাতা ও শণের তৈরি বিভিন্ন পণ্য বিশ্বের ২৬টি দেশে রপ্তানি করছে। বর্তমানে দুটি উৎপাদন ইউনিটে স্থায়ী শ্রমিকের সংখ্যা ২৪০। এর বাইরেও হস্তপণ্য তৈরির জন্য বগুড়া, রংপুর, নোয়াখালীতে চুক্তিভিত্তিতে কাজ করছেন অসংখ্য নারী।

বর্তমানে ইউরোপের নামকরা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের জন্য পণ্য তৈরি করছে অপরাজেয়। বৈশ্বিক ক্রেতাদের শর্ত, কর্মপরিবেশের নিরাপত্তা ও শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যে অপরাজেয় ‘সেডেক্স’সহ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সনদ পেয়েছে। একই সঙ্গে দেশের বাজারে মানসম্পন্ন পাটপণ্যের উৎপাদন ও বাজারজাতের ঘাটতির কথা বিবেচনায় নেন কাজী মো. মনির হোসেন ও তাঁর স্ত্রী মুনিয়া জামান। ২০২১ সালে ‘কালিন্দী’ নামে একটি দেশি ব্যাগের ব্র্যান্ড চালু করেন মুনিয়া জামান। কালিন্দীর সব পণ্য অপরাজেয় কারখানার অব্যবহৃত উপকরণ থেকে তৈরি হয়। কালিন্দী পপআপ স্টোর ও অনলাইন থেকে বর্তমানে মাসে দেড় হাজারের বেশি ব্যাগ বিক্রি হচ্ছে।

শুরুতে শুধু পাটের ব্যাগ তৈরি করলেও বর্তমানে কালিন্দী চামড়ার ব্যাগও বানাচ্ছে। টেকসই পণ্য উৎপাদনের পাশাপাশি দেশীয় ফ্যাশন ও নিত্যপণ্যের নানান উপকরণ তৈরি হচ্ছে। এমনই উদ্যোগ অপরাজেয় ও কালিন্দী। রপ্তানি শ্রেণিতে আইডিএলসি-প্রথম আলো এসএমই পুরস্কার ২০২৩ পেয়েছে অপরাজেয় লিমিটেড।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অপর জ য়

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টির বিকেলে মচমচে খাবার

বর্ষাকাল মানে হঠাৎ করে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি। কখনও আবার বৃষ্টি চলে একটানা। এমন দিনে একটু ভাজাপোড়া খাবার হলে মন্দ হয় না। বৃষ্টিভেজা বিকেলে খেতে পারেন এমন কিছু মচমচে খাবারের রেসিপি দিয়েছেন সানজিদা আক্তার মৌসুমী

চিকেন ফিঙ্গার   
উপকরণ: ৩০০ গ্রাম বোনলেস চিকেন, একটি মাঝারি পেঁয়াজ (৪ টুকরো করা), ১ টুকরো আদা, ৮ থেকে ১০টি রসুনের কোয়া, ৪-৫টি কাঁচামরিচ, ২ চা চামচ গোলমরিচ গুঁড়া, ২টি ডিম, ১ চা চামচ পাতিলেবুর রস, ১ চা চামচ কাশ্মীরি মরিচ গুঁড়া, ২ চা চামচ কর্নফ্লাওয়ার, স্বাদমতো লবণ, ২ চা চামচ ব্রেডক্রাম, পরিমাণ মতো তেল
প্রস্তুত প্রণালি: ভালো করে চিকেনগুলো ধুয়ে নিতে হবে। পেঁয়াজ, আদা, কাঁচামরিচ ভালোভাবে বেটে নিতে হবে। এরপর একটি পাত্রে ধুয়ে রাখা পিস করা চিকেন এবং বেটে রাখা মসলা দিতে হবে। এখন স্বাদমতো লবণ, গোলমরিচ গুঁড়া, পাতিলেবুর রস যোগ করুন। চিকেনগুলো ভালো করে মাখিয়ে নিন। ফিলে নিয়ে একটু ব্রেডগুলো লাগিয়ে তারপর ডিমের মধ্যে চুবিয়ে নিয়ে আবার ব্রেডগুলো লাগিয়ে নিতে হবে। এখন কড়াইয়ে তেল দিয়ে ফিঙ্গারগুলো একটু লাল করে ভেজে নিন। ৎ

ফ্রেঞ্চ ফ্রাই
উপকরণ: বড় সাইজের চারটি আলু, তেল, লবণ, পানি পরিমাণ মতো
প্রস্তুত প্রণালি: বড় সাইজের চার পিস আলু লম্বালম্বি কেটে পানিতে ভালোভাবে ধুয়ে নিন। চুলায় একই পাত্রে পানি গরম করে তাতে অল্প লবণ দিয়ে আলুগুলো ৩ মিনিট সেদ্ধ করুন। পানি ঝরিয়ে টিস্যু দিয়ে ভালোভাবে আলু মুছে নিন। স্লাইস করা আলুগুলো ঠান্ডা করে দুই থেকে তিন ঘণ্টা ফ্রিজিং করে রাখুন। পরে ফুটন্ত গরম তেলে লাল করে ভেজে নিন। তৈরি হয়ে গেল মজাদার ফ্রেঞ্চ ফ্রাই।

হট অ্যান্ড স্পাইসি 
চিকেন উইংস
উপকরণ: মুরগির পাখা ৮-১০ পিস, লালমরিচের গুঁড়া আধা চামচ, পাপরিকা পাউডার আধা চামচ, গরম মসলা গুঁড়া আধা চামচ, সয়া সস চার টেবিল চামচ, পরিমাণ মতো লবণ, গোলমরিচের গুঁড়া আধা চামচ, ভিনেগার দুই টেবিল চামচ, আদা, রসুন বাটা এক টেবিল চামচ 
প্রস্তুত প্রণালি: মুরগির পাখাগুলোকে ভালোভাবে ধুয়ে সমস্ত উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে এক ঘণ্টা রেখে দিন। তেল গরম হলে পাখাগুলো লাল করে ভেজে নিন। গরম গরম পরিবেশন করুন। 

ফিশ ফিঙ্গার  
উপকরণ: ৫ থেকে ৬ পিস রুই মাছের ফালি, দুই তিনটি পেঁয়াজ, ৬ থেকে ৮ কোয়া রসুন, ১ আঁটি ধনেপাতা, ১টি পাতিলেবু, স্বাদমতো লবণ, ৪/৫টি কাঁচামরিচ, ২টি ডিম, পরিমাণ মতো ব্রেড গুঁড়ো, পরিমাণ মতো রান্নার তেল।
প্রস্তুত প্রণালি: মাছগুলো ভালো করে ধুয়ে নিন। একটি পাত্রে পানি নিয়ে তার মধ্যে সামান্য লবণ এবং পাতিলেবুর রস দিয়ে মাছগুলোকে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। এখন পেঁয়াজ, রসুন, ধনেপাতা, কাঁচামরিচ, লবণ দিয়ে ভালোভাবে ব্লেন্ড করুন। একটি পাত্রে মিক্সড মসলা ঢেকে রাখুন। এরপর মাছের পানি চিপে ফেলে দিয়ে মাছগুলোকে পাত্রে রেখে ভালো করে মসলার সঙ্গে মেশান। একটি পাত্রে ব্রেড গুঁড়া রাখুন। অন্য একটি পাত্রে ২টি ডিম ভালো করে ফাটিয়ে নিন। এবার একটি করে মাছের ফালি নিয়ে একটু ব্রেড গুঁড়া লাগান। তারপর ডিমের মধ্যে চুবিয়ে নিয়ে আবার ব্রেড গুঁড়া লাগিয়ে নিতে হবে। তেল গরম হলে ফিঙ্গারগুলো তেলে ছেড়ে দিতে হবে। ফিঙ্গারগুলো একটু লাল করে ভেজে নিয়ে, গরম গরম পরিবেশন করুন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বৃষ্টির বিকেলে মচমচে খাবার