যারা প্রথম প্রথম ঢাকায় আসেন, তাদের কাছে শহরের রাজপথ গোলক ধাঁধার মতো মনে হয়। প্রতিদিন ঢাকা শহরে নতুন নতুন মানুষের পা পড়ে। অনেকেই প্রথমত আর্থিক সংকট নিয়ে ঢাকায় আসেন। তারপর একটি নির্দিষ্ট গন্তব্যে কম খরচে যেতে উঠে পড়েন ঢাকা শহরের নিত্যদিনের ব্যস্তময় চেহারার কঙ্ক্ষিত লোকাল বাসে। এই নতুন আসা মানুষের কেউ মানিব্যাগ ও ফোন পকেটমারের কাছে সহজেই হারিয়ে ফেলে হতাশ হয়ে যান। কেউবা পড়েন অজ্ঞান পার্টি বা মলম পার্টির খপ্পরে। এমন গল্প কারও অজানা নয়। কিন্তু বাসের হেলপার যখন এসব নতুন যাত্রীকে এক জায়গায় নামানোর নাম করে আরেক জায়গায় নামায়, তখন তারা আরও বেশি কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন।
ঢাকায় নতুন আসা মানুষ সঠিক ঠিকানায় খুব কমই নামতে পারেন। প্রতিটি স্টপেজে বাস থামানোর আগে যাত্রীরা নামবেন কিনা, জিজ্ঞেস করতে হবে। কিন্তু তা না করে নতুন করে যাত্রী তোলার জন্য হন্তদন্ত হয়ে পড়ে। এতে অসহায় মানুষ বুঝতে না পেরে বাস থেকে নামতে পারেন না। তখন তাদের সঠিক গন্তব্যের চাইতে আগে কিংবা অনেক পরে নামতে হয়। তারপর সেই ভুল স্টপেজ থেকে আবার তাদের সঠিক গন্তব্যে যেতে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। বাসের হেলপারদের উদাসীনতা, সেই সঙ্গে বেশি যাত্রী ওঠানোর প্রতিযোগিতা কিংবা যাত্রীদের অচেনা পথঘাটের কারণে অন্যমনস্ক হয়ে পড়া এর সবচেয়ে বড় কারণ।
তাই লোকাল বাসের হেলপারদের সচেতন করতে হবে। ঢাকার লোকাল বাস মালিক সমিতি থেকে এই আহ্বান কামনা করছি। অনেক মানুষ এই পেরেশানির শিকার হচ্ছেন এবং অনেক সময় তা নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠছে। ঢাকা শহরের লোকাল বাস মালিক সমিতিগুলোর উচিত হবে যাত্রীদের এই প্রয়োজনীয় সেবা দিয়ে তাদের যাত্রার নিরাপত্তা ও জানমালের সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
লোকাল বাসের পরিবেশও সুস্থ রাখতে হবে। বৃদ্ধ ও শিশুদের প্রতি হেলপারদের সহনশীল হতে হবে। কিন্তু প্রায়ই চোখে পড়ে যাত্রীদের সঙ্গে বাড়তি ভাড়া নিয়ে হেনস্তা, নারীদের সঙ্গে বাজে আচরণ ইত্যাদি। এসব নিরসনে পুলিশ প্রশাসনের তদারকি জোরদার করার দাবি জানাচ্ছি।
ইসতিয়াক আহমেদ হৃদয়: শিক্ষার্থী,
নওগাঁ সরকারি কলেজ
redoy3271@gmail.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রাম বন্দর চালাচ্ছে দেশি প্রতিষ্ঠানগুলোই
চট্টগ্রাম বন্দরে চারটি টার্মিনাল আছে। এর মধ্যে সাইফ পাওয়ার টেক লিমিটেড পরিচালনা করছে দুই টার্মিনাল। এর একটি নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি)। অন্যটি চট্টগ্রাম কনটেইনার টার্মিনাল (সিসিটি)। এনসিটির পাঁচটি জেটির মধ্যে চারটি ব্যবহার করে সাইফ পাওয়ার টেক লিমিটেড। একটি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ব্যবহার করে। সিসিটি টার্মিনালে জেটির সংখ্যা দুই। বন্দরের বাকি দুই টার্মিনাল হলো–জেনারেল কার্গো বার্থ (জিসিবি) ও পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল (পিসিটি)।
এই টার্মিনালগুলোর মধ্যে এনসিটি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। আগামী ৬ জুলাই সাইফ পাওয়ার টেক লিমিটেডের পরিচালনার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। সরকার এখন এটি বিদেশি প্রতিষ্ঠান ডিপি ওয়ার্ল্ডকে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। বন্দর ব্যবহারকারী ও বিএনপি-জামায়াতসহ রাজনৈতিক দলগুলো এর বিরোধিতা করছে।
এনসিটি চট্টগ্রাম বন্দরের সবচেয়ে বড় টার্মিনাল। এটিতে এককভাবে বন্দরের মোট কনটেইনারের ৪৪ শতাংশ ওঠানামার কাজ হয়। আর সিসিটিতে কনটেইনার ওঠানামা হয় ২০ শতাংশ। জিসিবি টার্মিনালটি পরিচালনা করে ১২ জন বার্থ অপারেটর মিলে। এটিতে বন্দরের ৩৬ শতাংশ কনটেইনার ওঠানামা করে। এই টার্মিনালের ছয়টি কনটেইনার জেটি এবং ৬টি কার্গো জেটি ১২টি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছে। এরা বার্থ অপারেটর নামে পরিচিত।
পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালটি (পিসিটি) নতুন। গত দশ মাসে এর সক্ষমতায় মাত্র ১২ শতাংশ ব্যবহার করতে পেরেছে পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান সৌদি আরবের রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল ইন্টারন্যাশনাল (আরএসজিটিই)। গত বছর জুনে এটি কাজ শুরু করে। এ ছাড়া রাজধানীর কমলাপুরে একটি অভ্যন্তরীণ কনটেইনার ডিপো রয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষের, যেখানে ঢাকার কতিপয় ব্যবসায়ী কনটেইনার খালাস করেন।
সাইফ পাওয়ার টেক লিমিটেড দুটি টার্মিনাল পেয়েছে প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র ছাড়া সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে। একবার নয়, ১১ বার এভাবে কাজ পেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। আবার উন্মুক্ত দরপত্রেও একবার কাজ পেয়েছে তারা। বন্দরের মোট ২১ জেটির ৬টি এই দুই টার্মিনালের অধীন। বাকি জেটিগুলোর ১২টি জিসিবি টার্মিনালের অধীনে। পিসিটির অধীনে জেটি আছে দুটি। অবশিষ্ট একটি জিটি জাহাজ বেশি নোঙর করলে ব্যবহার হয়। জেটিগুলোর মধ্যে ছয়টি ব্যবহৃত হয় কার্গো পণ্য ওঠানামার কাজে। ১৪টিতে কনটেইনার ওঠানামা করা হয়।
চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, ‘বন্দর স্পর্শকাতর স্থাপনা। এখানে যে কেউ এসে ব্যবসা করতে পারবে না। এ জন্য অভিজ্ঞদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। আইনি জটিলতার কারণে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে আগে কয়েকবার দরপত্র দিলেও এখন হচ্ছে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে।’
শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আরিফ বলেন, ‘ঘুরেফিরে একই প্রতিষ্ঠান বার্থ অপারেটর থাকায় কমছে না পণ্য পরিবহন খরচ। প্রতিযোগিতা থাকলে ব্যতিক্রম হতো। মন্ত্রণালয় ও বন্দর কর্তৃপক্ষের যোগসাজশ ছাড়া ১৭ বছর ধরে একই প্রতিষ্ঠানের ঘুরেফিরে কাজ পাওয়া সম্ভব নয়।’
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চট্টগ্রাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আখতার কবীর চৌধুরী বলেন, ‘নির্দিষ্ট কিছু অপারেটরের কাছে জিম্মি চট্টগ্রাম বন্দর। তাদের হয়ে কাজ করেন মন্ত্রণালয় ও বন্দরের অসাধু কর্মকর্তারা। তারাই শর্তের জালে নতুনদের ঠেকিয়ে রেখেছেন।’
টার্মিনাল অপারেটর সাইফ পাওয়ার টেক
গত বছর চট্টগ্রাম বন্দর ২০ ফুট এককের (টিইইউএস) কনটেইনার হ্যান্ডল করে প্রায় ৩২ লাখ। এর মধ্যে এনসিটি ও সিসিটি টার্মিনালের ছয় জেটি হ্যান্ডল করে ১৮ লাখ ১৫ হাজার টিইইউএস কনটেইনার। জিসিবি হ্যান্ডল করে ১০ লাখ ২০ হাজার কনটেইনার। এ হিসাবে এনসিটি ও সিসিটি মোট কনটেইনারের ৬৪ এবং জিসিবি টার্মিনাল হ্যান্ডল করে ৩৬ শতাংশ।
২০২০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে বন্দরে মোট এসেছে ১ কোটি ৩৮ লাখ কনটেইনার। এর মধ্যে ৮৪ লাখ ৮৭ হাজার হ্যান্ডল করেছে এনসিটি ও সিসিটি; জিসিবি ৫৩ লাখ ২১ হাজার। সাইফ পাওয়ার টেকের নিয়ন্ত্রণে থাকা দুই টার্মিনালের ছয় জেটি হ্যান্ডল করেছে গড়ে ৬২ শতাংশ কনটেইনার, বাকি ৩৮ শতাংশ জিসিবি।
২০০৬ সালে বন্দরে গ্যান্ট্রি ক্রেন পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের স্থানীয় প্রতিনিধি হিসেবে হাতেখড়ি সাইফ পাওয়ার টেকের। সেনাসমর্থিত ওয়ান-ইলেভেন সরকার আসার পরই ভাগ্যের চাকা ঘোরে প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার তরফদার রুহুল আমিনের। ২০০৭ সালে প্রথমে সিসিটি টার্মিনাল অপারেট করার সুযোগ পায়। পরের বছর প্রতিযোগিতামূলক দরপত্রে অংশ না নিলেও সিসিটির এক্সটেনশন ধরে এনসিটি পরিচালনার কাজ দেওয়া হয় সাইফ পাওয়ার টেককে। ২০১৫ সালে উন্মুক্ত দরপত্রের উদ্যোগ নেয় বন্দর। অভিযোগ রয়েছে, সেবারও মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন ছাড়াই প্রতিষ্ঠানটিকে কাজ দেওয়া হয়। এ নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ আপত্তিও জানায়। তখন নৌ পরিবহনমন্ত্রী ছিলেন শাজাহান খান।
বন্দরের টাকায় অত্যাধুনিক সব যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়েছে এনসিটিতে। অবশ্য যন্ত্রপাতি পরিচালনা করতে টার্মিনালে দক্ষ জনবল নিয়োগ দেওয়ায় বেড়েছে সক্ষমতা। এনসিটি ও সিসিটিকে ঘিরে সক্ষমতা বৃদ্ধির সুবিধাও গেছে রুহুল আমিনের ঘরে। অন্যদের তুলনায় সমৃদ্ধ হয় তার অভিজ্ঞতাও। দরপত্র দেওয়ার সময় বন্দরও এটিকে সামনে এনে কাজ দিচ্ছে সাইফ পাওয়ার টেককে।
বন্দরে আধিপত্য ধরে রাখতে টার্মিনাল অপারেটর হিসেবে কৌশলও খাটিয়েছেন রুহুল আমিন। এ জন্য একটি দরপত্রে তখন আওয়ামী লীগ নেতা আ জ ম নাছিরের প্রতিষ্ঠান এম এইচ চৌধুরী লিমিটেড ও একরামুল করিম চৌধুরীর প্রতিষ্ঠান এ অ্যান্ড জে ট্রেডার্সকে ৩০ শতাংশ করে মোট ৬০ শতাংশ শেয়ার দেন তিনি। ফলাফল নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনায় আর দরপত্র হয়নি।
সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ছয় মাস মেয়াদে বারবার কাজ পেয়েছে সাইফ পাওয়ার টেক। গত বছরের জুলাইতে ১১তম বারের মতো তাদের কাজ দেওয়া হয়, যার মেয়াদ শেষ হয় গত ৭ জানুয়ারি। অন্তর্বর্তী সরকারও মেয়াদ বাড়িয়ে সাইফ পাওয়ার টেকেই আস্থা রেখেছে।
আরও দূরে সাইফ পাওয়ার টেকের জাল
গত ১১ বছর ধরে ঢাকার কমলাপুর কনটেইনার ডিপো এবং কেরানীগঞ্জে চট্টগ্রাম বন্দরের পানগাঁও নৌ টার্মিনাল পরিচালনা করছে সাইফ পাওয়ার টেক। আওয়ামী লীগ আমলে সাইফ লজিস্টিকস অ্যালায়েন্স লিমিটেডের (এসএলএএল) নামে নতুন মাল্টি-মডেল কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা করে। এর অংশ হিসেবে রেলওয়ের প্রতিষ্ঠান কনটেইনার কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিসিবিএল) মহানগরীর হালিশহরের বন্দর কলোনিসংলগ্ন এলাকায় ২১ দশমিক ২৯ একর জমিতে প্রাইভেট অফডক নির্মাণ ও পরিচালনার উদ্যোগ নেয়। কাজটি করার জন্য দরপত্রে সাইফ লজিস্টিকস অ্যালায়েন্সসহ ১৪ প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। তবে দরপত্রের শর্তের কারণে শুধু সাইফ লজিস্টিকস অ্যালায়েন্সই নথি জমা দিতে পেরেছিল।
বন্দরে যন্ত্রপাতি সরবরাহের কাজেও সাইফ পাওয়ার টেক। গত ১৭ বছর বন্দরে যেসব যন্ত্রপাতি স্থাপন হয়েছে, এককভাবে সবচেয়ে বেশি কার্যাদেশ পেয়েছে প্রতিষ্ঠানের বিদেশি এজেন্ট।
সাইফ পাওয়ার টেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তরফদার রুহুল আমিন বলেন, ‘নিয়ম মেনে যোগ্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে বন্দরে কাজ করছি। এনসিটি ও সিসিটিতে প্রতিদিন ৫ হাজারের বেশি কনটেইনার হ্যান্ডল করছি। অন্য টার্মিনালগুলো মিলেও এর অর্ধেক পারফরম্যান্স দেখাতে পারছে না। তাই বারবার আমাদের ওপর আস্থা রাখছে সরকার।’ বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের যথাযথ অনুমোদন নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ব্যবসা করছি। অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই।’
১২ জেনারেল জেটি যাদের নিয়ন্ত্রণে
বর্তমানে জিসিবির (জেনারেল কার্গো বার্থ) ছয় কনটেইনার জেটি পরিচালনা করছে ১৩ নম্বর বার্থে এমএইচ চৌধুরী লিমিটেড, ১১ নম্বর বার্থে এ অ্যান্ড জে ট্রেডার্স, ৯ নম্বর বার্থে ফজলী অ্যান্ড সন্স লিমিটেড, ১২ নম্বর বার্থে এভারেস্ট পোর্ট সার্ভিসেস লিমিটেড, ৭ নম্বর বার্থে এফ কিউ খান অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেড এবং ৮ নম্বর বার্থে বশির আহমদ অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেড।
একইভাবে জিসিবির ছয় জেটি পরিচালনা করছে ২ নম্বর বার্থে রুহুল আমিন ব্রাদার্স, ৩ নম্বর বার্থে এ ডব্লিউ খান, ৪ নম্বর বার্থে ফোর জুয়েল, ৫ নম্বর বার্থে পঞ্চরাগ উদয়ন, ৬ নম্বর বার্থে কসমস এন্টারপ্রাইজ এবং ১০ নম্বর বার্থে ইউনাইটেড ট্রেডিং। পাঁচ বছর পরপর দরপত্র হলেও ঘুরেফিরে এরাই কাজ পাচ্ছে।
বার্থ অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফজলে একরাম চৌধুরী বলেন, ‘যোগ্যতার কারণেই দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করছি। বন্দর যে শর্ত দিচ্ছে, সেটি পূরণ করেই কাজ পেয়েছি।’
আরেক বার্থ অপারেটর শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, ‘অনেকেই দরপত্রের নথি নেন। কিন্তু কারিগরি ও আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় তারা জমা দিতে পারেন না। কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে নিয়মের কোনো ব্যত্যয় ঘটছে বলে মনে হয় না।’
৪২ কোটি টাকা বরাদ্দে নতুন প্রস্তাব
এনসিটি পরিচালনা করা সাইফ পাওয়ার টেকের চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ৬ জুলাই। টার্মিনালটি নিজেরাই পরিচালনার প্রস্তুতি নিচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি অনুসরণ করে টার্মিনালটি ছয় মাস পরিচালনা করলে ৪২ কোটি টাকা খরচ হবে ধারণা দিয়েছে তারা। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন চেয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) মোহাম্মদ জাফর আলম বলেন, ‘বন্দর কর্তৃপক্ষ কখনও নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনা করেনি। ২০০৭ সালে লেবার বোর্ডের মাধ্যমে করেছে। লেবার বোর্ড এখন বিলুপ্ত। ফলে কাজ নিলে বন্দরকে বিপাকে পড়তে হবে। বন্দরের সক্ষমতা কমে যাওয়ার ঝুঁকিও রয়েছে।’
তবে বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান ১৯ জুন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, এনসিটির বর্তমান অপারেটরের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সরকার রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজন ও জনস্বার্থে এ পরিচালন ব্যয় সরাসরি ক্রয় পদ্ধতির মাধ্যমে করতে পারবে। এ জন্য অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন প্রয়োজন। প্রতি মাসে আনুমানিক ৭ কোটি টাকা করে ছয় মাসে মোট ৪২ কোটি টাকা খরচ হবে বলে জানানো হয় চিঠিতে।