প্রায় দুই লাখ প্রবাসী বাংলাদেশি বাস করেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের আজমান প্রদেশে। কিন্তু কনস্যুলার সেবা গ্রহণের জন্য তাদের যেতে হয় দুবাইয়ের বাংলাদেশ কনস্যুলেটে। দুবাই যেতে হলে অধিকাংশ প্রবাসী কর্মস্থল থেকে ছুটি নিতে হয়। এ ছাড়া বাড়তি যাতায়াত খরচ ও দূরত্বের কারণে অতিরিক্ত সময়ও ব্যয় করতে হতো সেবাগ্রহীতাদের। প্রবাসীদের এই ভোগান্তি কমাতে এবার আজমান প্রদেশেই বাংলাদেশ কনস্যুলেটের তত্বাবধানে কনস্যুলার সেবা চালু করেছে বাংলাদেশ সমিতি আজমান।

শুক্রবার বিকেলে আজমান রাশিদিয়া-৩ গ্র্যান্ড মল সংলগ্ন সমিতির কার্যালয়ে কনস্যুলার সেবা কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। নতুন ই-পাসপোর্টের আবেদন ও নবায়ন, জন্মনিবন্ধন, প্রবাসী কল্যাণ কার্ড, সনদ সত্যায়নের মতো সেবা চালু করা হয়েছে এখানে। প্রতিমাসে গড়ে এক হাজার প্রবাসী এই সেবা নিতে পারবেন। ছুটির দিনেও সেবা চালু রাখা হবে। উদ্যোক্তারা বলছেন, এতে করে প্রবাসীদের সময় ও খরচ দুটোই বাঁচবে। ধীরে ধীরে সেবার পরিধিও বাড়বে।

সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আবদুল কুদ্দুস জানান, স্থানীয়ভাবে এই সেবা চালু করায় নানান ভোগান্তি থেকে রক্ষা পাবেন প্রবাসীরা। এই সেবা ধারাবাহিক রাখার পাশাপাশি আরও সুযোগ সুবিধা সংযোজন করা হবে।

সমিতির সদস্য সচিব কামাল হোসাইন খান সুমন বলেন, আজমানে প্রায় পনে দুই লাখ প্রবাসী বাংলাদেশি বাস করেন। আমরা এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের কনস্যুলার সেবা নিশ্চিত করব। পাসপোর্ট নবায়ন, জন্মসনদ, সনদ সত্যায়নের মতো কাজগুলো সহজে প্রবাসীরা এখান থেকে করে নিতে পারবেন। ছুটির দিনেও তারা নিয়মিত সেবা নিতে পারবেন।  

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সমিতির আহবায়ক মোহাম্মদ আবদুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে ও সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মোস্তফা মাহমুদের সঞ্চালনায় অতিথি ছিলেন দুবাই বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনস্যুলার কর্মকর্তা (পাসপোর্ট) নাজমুল হাসান, কমিউনিটি নেতা জাকির হোসাইন, প্রকৌশলী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, মীর কামাল, শাহীনুর শাহীন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমিতির সদস্য সচিব কামাল হোসাইন খান সুমন। এসময় অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন শেখ সেলিম, আলতাফ হোসেন, হেলাল উদ্দিন, শহীদুল ইসলাম চৌধুরী, আবদুল মালেক, ফজলুর রহমান খান, নাজিম উদ্দিন, শেখ ফরিদ, জাহাঙ্গীর আলম রুপু প্রমুখ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স য ক ত আরব আম র ত কনস য ল র স ব কনস য ল র স ব প রব স আজম ন

এছাড়াও পড়ুন:

৩০ ঘণ্টা পরও খোলা হয়নি শাহ আমানত হল প্রাধ্যক্ষের কক্ষের তালা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আমানত হলের প্রাধ্যক্ষের কক্ষে আবাসিক শিক্ষার্থীরা তালা দেওয়ার ৩০ ঘণ্টা পর আজ সোমবার দুপুরেও তা খোলা হয়নি। উল্টো আজ শিক্ষার্থীরা প্রধ্যক্ষের কক্ষের নামফলকও সরিয়ে ফেলেন। গতকাল রোববার সকালে আর্থিক অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীরা প্রাধ্যক্ষের কক্ষে তালা দেন। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অধ্যাপক চৌধুরী মোহাম্মদ মনিরুল হাসান আলোচনার প্রস্তাবও দিলেও শিক্ষার্থীরা তা ফিরিয়ে দিয়েছেন। নতুন প্রাধ্যক্ষ নিয়োগ ও অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত ছাড়া আলোচনায় বসবেন না বলে হল সংসদের নেতারা জানিয়েছেন।

আজ দুপুর ১২টার দিকে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক চৌ ধুরী মোহাম্মদ মনিরুল হাসান হলের গৃহশিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সঙ্গে নিয়ে হলে যান। তিনি হল সংসদের প্রাকর্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তবে আবাসিক শিক্ষার্থী ও হল সংসদের নেতারা সেখানে উপস্থিত হননি।

প্রাধ্যক্ষ দেখা করতে চাইলেও হল সংসদের সদস্যরা তাতে রাজি হননি বলে জানান শাহ আমানত হল সংসদের ভিপি জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, অভিযোগগুলো তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত আগের মতো সম্পর্ক বজায় রাখা সম্ভব নয়। তিনি আরও জানান, দাপ্তরিক কাজ যাতে ব্যাহত না হয়—এ জন্য হলের আরেকটি অফিস কক্ষ খোলা রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মনিরুল হাসান বলেন, ‘আমি গৃহশিক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে হলে গিয়েছিলাম আলোচনায় বসতে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা আসেননি। পরে সহউপাচার্যের (একাডেমিক) সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি আমাকে দাপ্তরিক কাজ চালিয়ে যেতে বলেন এবং উপাচার্য চীন সফর শেষে দেশে ফিরলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক শামীম উদ্দিন খান বলেন, গতকাল হল সংসদের প্রতিনিধিরা তাঁর কাছে একটি স্মারকলিপি দেন। তিনি সময় চেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আজ প্রাধ্যক্ষ এসে জানিয়েছেন, তিনি শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করেছেন এবং ভবিষ্যতেও করতে চান। কিন্তু উপাচার্য ও সহউপাচার্য (প্রশাসনিক) অনুপস্থিত থাকায় আপাতত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে না। উপাচার্য দেশে ফিরলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

গতকাল আবাসিক শিক্ষার্থীদের সম্মতিতে হল সংসদের প্রতিনিধিরা প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, দায়িত্বে অবহেলা, অসৌজন্যমূলক আচরণ, অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তাঁর কক্ষে তালা দেন। অভিযোগে বলা হয়—হল স্টোরের মালামাল নিয়মবহির্ভূতভাবে বিক্রি করা হয়েছে, দরজা-জানালার মেরামত হয়নি, দ্বিতীয় ডাইনিং চালু হয়নি এবং সাইকেল স্ট্যান্ডসহ মৌলিক সুবিধা নিশ্চিত করা হয়নি। এসব অভিযোগ তাঁরা সহ–উপাচার্যের কাছে লিখিতভাবে জমা দিয়েছেন। তবে প্রাধ্যক্ষ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, অনেক কাজই বাজেট ও প্রশাসনিক অনুমোদনের ওপর নির্ভরশীল এবং তিনি নিয়মিতভাবে উন্নয়ন কার্যক্রম এগিয়ে নিতে চেষ্টা করছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ