প্রযোজককে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি, গ্রেপ্তার ৬
Published: 28th, June 2025 GMT
প্রয়াত জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহকে ভালোবেসে নায়কের সবচেয়ে সুপারহিট সিনেমা ‘স্বপ্নের ঠিকানা’ নামে কয়েক বছর আগে একটি শুটিং স্পট নির্মাণ করেন চলচ্চিত্র প্রযোজক মো. রাশেদুল ইসলাম রাশেদ। নিয়মিত সেখানে নাটক-সিনেমার শুটিং হয়। সালমান শাহ ভক্ত-প্রযোজক রাশেদকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে পূর্বাচল এলাকায় প্রকাশ্য দিবালোকে এই প্রযোজক ও ব্যবসায়ীকে অপহরণ করা হয়েছে বলে গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন রাশেদ নিজেই।
তিনি বলেন, “২০১৮ সালে একটি ধর্ষণ ও হত্যা মামলা দায়ের করি। সেই মামলা তুলে না নেওয়ায় এই অপরহণ করা হয়। মামলা তুলে নিতে দীর্ঘদিন চাপ সৃষ্টি করে আসছিল এই চক্রটি। মামলাটি তুলে না নেওয়ায় শুক্রবার দুপুরে পূর্বাচল ১৩ নম্বর সেক্টরের অফিস থেকে আমাকে অপহরণ করা হয়। অপহরণের পর আমার পরিবারের কাছে ৭০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা।”
রাশেদের ভাষ্য অনুযায়ী, পূর্বাচলের কথিত যুবদল নেতা রাসেল আহমেদের নেতৃত্বে ৮-১০ জন যুবক দুপুর আড়াইটার দিকে অফিসে ঢুকে জোরপূর্বক তাকে তুলে নিয়ে যায়। রাসেল ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে আমার চাচাতো ভাই রাকিবের মেয়ে সূর্বনাকে অপহরণ, ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে মামলা রয়েছে। সেই মামলা তুলে নেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে হুমকি দিয়ে আসছিল অভিযুক্ত চক্রটি।
জানা যায়, অপহরণের খবর পেয়ে রাশেদের পরিবার দ্রুত পূর্বাচল সেনা ক্যাম্পে অভিযোগ জানায়। এতে অপহরণকারীরা চাপে পড়ে যায় এবং রাশেদকে ‘আওয়ামী লীগ কর্মী’ পরিচয়ে রূপগঞ্জ থানায় সোপর্দ করার চেষ্টা করে। পরে পুলিশ উভয় পক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেয়।
রূপগঞ্জ থানার ওসি তরিকুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় অভিযুক্ত যুবদল নেতা রাসেল মিয়াসহ চক্রের ছয় সদস্য— রাসেল, শান্ত, রনি, শিপলু সাব্বির ও রনিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মেহেদী ইসলাম বলেন, “তাকে (রাশেদুল ইসলাম রাশেদ) আওয়ামী লীগ কর্মী হিসেবে থানায় সোপর্দ করার চেষ্টা করা হলেও এখন পর্যন্ত তার সে রকম কোনো রাজনৈতিক পরিচয়ের প্রমাণ আমরা পাইনি। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
রাশেদ ‘নিশ্চুপ ভালোবাসা’ নামে সিনেমা প্রযোজনা করেছেন। পাশাপাশি বেশ কিছু নাটক, সিনেমা এবং মিউজিক ভিডিওতে অভিনয় করেছেন। এ ঘটনায় চলচ্চিত্রপাড়ায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
ঢাকা/রাহাত//
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
র্যাবের অভিযান টের পেয়ে সন্ত্রাসীর এলোপাতাড়ি গুলি, গৃহবধূ গুলিবিদ্ধ
নারায়ণগঞ্জ শহরের মাসদাইর এলাকায় এক সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীকে ধরতে অভিযানে যায় র্যাবের গোয়েন্দা দল। অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়েন জাহিদ ও তাঁর সহযোগীরা। এতে পাশের বাড়ির এক গৃহবধূ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। রোববার বিকেলে মাসদাইর গাইবান্ধা বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ গৃহবধূর নাম জবা আক্তার (২২)। তিনি গাইবান্ধা বাজার এলাকার ভাড়াটিয়া মো. রহিম উদ্দিনের স্ত্রী। গুরুতর অবস্থায় তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের ভাষ্য, গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় মাসদাইর এলাকায় কৃষক দলের নেতা পারভেজের ওপর হামলা ও গুলি চালান সন্ত্রাসী জাহিদ ও তাঁর সহযোগীরা। এ ঘটনার পর জাহিদকে ধরতে তৎপরতা শুরু করে র্যাব-১১। আজ বিকেলে মাসদাইর গাইবান্ধা বাজার এলাকায় র্যাবের গোয়েন্দা দলের সোর্স যান। বিষয়টি বুঝতে পেরে জাহিদ ও তাঁর সহযোগীরা এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে পালিয়ে যান। এতে পাশের বাড়িতে রান্না করার সময় এক নারী গুলিবিদ্ধ হন।
গৃহবধূর স্বামী মো. রহিম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর স্ত্রী বাড়িতে রান্না করছিলেন। হঠাৎ একটি গুলি এসে তাঁর বুকে লাগে। খবর পেয়ে তিনিসহ আশপাশের লোকজন তাঁকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) মো. হাসিনুজ্জামান বলেন, সন্ত্রাসী জাহিদ ও তাঁর সহযোগীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
যোগাযোগ করা হলে র্যাব-১১-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সন্ত্রাসী জাহিদ ও তাঁর সহযোগীদের বিষয়ে খোঁজখবর নিতে র্যাবের সোর্স সেখানে যান। র্যাবের অভিযানকারী দল পৌঁছানোর আগেই সন্ত্রাসী জাহিদ ও তাঁর সহযোগী এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় এক নারী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সন্ত্রাসী জাহিদ মাদক ব্যবসায়ী। তাঁর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কার্যক্রমসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ আছে। পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লোকজনের ওপর হামলার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা আছে।