আওয়ামীপন্থি ট্যাগ দিয়ে বাধা, পণ্ড শ্রমিক সম্মেলন
Published: 28th, June 2025 GMT
একাংশের নেতাকর্মীর বাধায় ফরিদপুরে পণ্ড হয়ে গেছে আন্তঃজেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সম্মেলন। এ সময় সম্মেলন আয়োজকদের ‘আওয়ামী লীগপন্থি’ আখ্যা দেন তারা। তবে আয়োজকদের ভাষ্য, তারা আওয়ামী লীগ-বিএনপি বুঝেন না, বুঝেন শ্রমিকদের কল্যাণ।
শনিবার শহরের পুরোনো বাসস্ট্যান্ডের বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ পৌর অডিটোরিয়ামে সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। ২৩ জুন হল ভাড়ার টাকাও পরিশোধ করা হয় পৌর কর্তৃপক্ষকে। এ অংশের নেতৃত্বে আছেন ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল মান্নান শেখ মানা। তিনি জেলা শ্রমিক দলের একাংশের যুগ্ম সম্পাদক। এদিকে বৃহস্পতিবার একই স্থানে ‘প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ’ সমাবেশের আবেদন করেন শ্রমিক ইউনিয়নের সহসভাপতি মো.
আব্দুল মান্নান শেখ মানার ভাষ্য, বিরোধ এড়াতে শুক্রবার রাতে চৌধুরী নায়াব ইউসুফের সঙ্গে দেখা করেন। নায়াব ইউসুফ তাঁকে সম্মেলন পিছিয়ে দিতে অনুরোধ করেন। সব প্রস্তুতির কথা জানিয়ে তিনি বলেন, জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে শ্রমিকরা আসবেন। এই অবস্থায় সম্মেলন স্থগিত সম্ভব নয়। তবে সীমিত পরিসরে করবেন।
শেখ মানা বলেন, ‘শ্রমিকরা শনিবার সকালে জড়ো হলে আরিফ হাসানসহ কয়েকজন সম্মেলনস্থলে এতে বাধা দিতে এলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। আমাদের কাউকে মিলনায়তনে ঢুকতে দেয়নি।’
আরিফ হাসানের অভিযোগ, ‘অধিকাংশ শ্রমিক নেতাকে না জানিয়ে আওয়ামী লীগের দোসরদের নিয়ে সম্মেলনের মাধ্যমে পকেট কমিটি করতে চেয়েছিল। তারা আওয়ামীপন্থি, আমরা বিএনপিপন্থি। ১৫ বছর তারা লুটপাট করে খেয়েছে। নতুন করে লুটপাটের উদ্যোগ নিয়েছে। সাধারণ শ্রমিকদের নিয়ে তাদের প্রতিহত করেছি।’
এ বিষয়ে শেখ মানা বলেন, ‘কিছুদিন আগে তো বিএনপি বলে কাউকে খুঁজে পাওয়া যেত না, সবাই আওয়ামী লীগ ছিল। এখন আওয়ামী লীগ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা আওয়ামী লীগ-বিএনপি বুঝি না, শ্রমিকদের কল্যাণ বুঝি।’
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
৩০ ঘণ্টা পরও খোলা হয়নি শাহ আমানত হল প্রাধ্যক্ষের কক্ষের তালা
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আমানত হলের প্রাধ্যক্ষের কক্ষে আবাসিক শিক্ষার্থীরা তালা দেওয়ার ৩০ ঘণ্টা পর আজ সোমবার দুপুরেও তা খোলা হয়নি। উল্টো আজ শিক্ষার্থীরা প্রধ্যক্ষের কক্ষের নামফলকও সরিয়ে ফেলেন। গতকাল রোববার সকালে আর্থিক অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীরা প্রাধ্যক্ষের কক্ষে তালা দেন। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অধ্যাপক চৌধুরী মোহাম্মদ মনিরুল হাসান আলোচনার প্রস্তাবও দিলেও শিক্ষার্থীরা তা ফিরিয়ে দিয়েছেন। নতুন প্রাধ্যক্ষ নিয়োগ ও অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত ছাড়া আলোচনায় বসবেন না বলে হল সংসদের নেতারা জানিয়েছেন।
আজ দুপুর ১২টার দিকে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক চৌ ধুরী মোহাম্মদ মনিরুল হাসান হলের গৃহশিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সঙ্গে নিয়ে হলে যান। তিনি হল সংসদের প্রাকর্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তবে আবাসিক শিক্ষার্থী ও হল সংসদের নেতারা সেখানে উপস্থিত হননি।
প্রাধ্যক্ষ দেখা করতে চাইলেও হল সংসদের সদস্যরা তাতে রাজি হননি বলে জানান শাহ আমানত হল সংসদের ভিপি জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, অভিযোগগুলো তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত আগের মতো সম্পর্ক বজায় রাখা সম্ভব নয়। তিনি আরও জানান, দাপ্তরিক কাজ যাতে ব্যাহত না হয়—এ জন্য হলের আরেকটি অফিস কক্ষ খোলা রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মনিরুল হাসান বলেন, ‘আমি গৃহশিক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে হলে গিয়েছিলাম আলোচনায় বসতে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা আসেননি। পরে সহউপাচার্যের (একাডেমিক) সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি আমাকে দাপ্তরিক কাজ চালিয়ে যেতে বলেন এবং উপাচার্য চীন সফর শেষে দেশে ফিরলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক শামীম উদ্দিন খান বলেন, গতকাল হল সংসদের প্রতিনিধিরা তাঁর কাছে একটি স্মারকলিপি দেন। তিনি সময় চেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আজ প্রাধ্যক্ষ এসে জানিয়েছেন, তিনি শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করেছেন এবং ভবিষ্যতেও করতে চান। কিন্তু উপাচার্য ও সহউপাচার্য (প্রশাসনিক) অনুপস্থিত থাকায় আপাতত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে না। উপাচার্য দেশে ফিরলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
গতকাল আবাসিক শিক্ষার্থীদের সম্মতিতে হল সংসদের প্রতিনিধিরা প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, দায়িত্বে অবহেলা, অসৌজন্যমূলক আচরণ, অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তাঁর কক্ষে তালা দেন। অভিযোগে বলা হয়—হল স্টোরের মালামাল নিয়মবহির্ভূতভাবে বিক্রি করা হয়েছে, দরজা-জানালার মেরামত হয়নি, দ্বিতীয় ডাইনিং চালু হয়নি এবং সাইকেল স্ট্যান্ডসহ মৌলিক সুবিধা নিশ্চিত করা হয়নি। এসব অভিযোগ তাঁরা সহ–উপাচার্যের কাছে লিখিতভাবে জমা দিয়েছেন। তবে প্রাধ্যক্ষ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, অনেক কাজই বাজেট ও প্রশাসনিক অনুমোদনের ওপর নির্ভরশীল এবং তিনি নিয়মিতভাবে উন্নয়ন কার্যক্রম এগিয়ে নিতে চেষ্টা করছেন।