চট্টগ্রাম পুলিশের তালিকাভুক্ত দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী, ৩৫ মামলার আসামি মো. সবুজ ওরফে বার্মা সবুজকে (৩৬) গ্রেপ্তার করেছে সিএমপি’র বায়েজিদ বোস্তামি থানা পুলিশ। একইসাথে তার দুই সহযোগীকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

শনিবার (২৮ জুন) রাতে নগর পুলিশের পক্ষ থেকে এই সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানানো হয়। 

বায়েজিদ বোস্তামী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান, শনিবার (২৮ জুন) বায়েজিদ বোস্তামী থানার হিলভিউ আবাসিক এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচলনা করে বার্মা সবুজকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

গত ২৭ জুন বার্মা সবুজের নেতৃত্বে সুমন খান ও মো.

জনিসহ ১২/১৩ জনের একটি দল মোহাম্মদ ইউসুফ নামে একজনের বাসায় আগ্নেয়াস্ত্রসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে প্রবেশ করে ত্রাস সৃষ্টি করে। এসময় তারা ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে বিল্ডিংয়ের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেওয়াসহ বাদীকে হত্যার হুমকি প্রদান করে।

এরপর আবার শনিবার সকালে সবুজের নেতৃত্ব ১২-১৩ জনের গ্রুপটি ইউসুফের বাসায় আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে প্রবেশ করে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে ত্রাস সৃষ্টি করে নির্মাণাধীন বিল্ডিংয়ের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী থানায় মামলা করেন।

বায়েজিদ বোস্তামি থানার ওসি জানান, মামলা দায়েরের পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে থানার আওতাধীন হিলভিউ আবাসিক এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ৩৫ মামলার আসামি মো. সবুজ বার্মা সবুজসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত অপর আসামিদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, এই আসামিরা চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী, পাঁচলাইশ, খুলশী থানা এলাকায় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে দলবদ্ধভাবে চাঁদাবাজি ও জায়গা দখল ও আদিপত্য বিস্তার করে আসছিল। তারা আদিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়ে ত্রাসসৃষ্টি করে এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে আতংক সৃষ্টি করে।

ঢাকা/রেজাউল/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ র প ত র কর র আস ম

এছাড়াও পড়ুন:

৩০ ঘণ্টা পরও খোলা হয়নি শাহ আমানত হল প্রাধ্যক্ষের কক্ষের তালা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আমানত হলের প্রাধ্যক্ষের কক্ষে আবাসিক শিক্ষার্থীরা তালা দেওয়ার ৩০ ঘণ্টা পর আজ সোমবার দুপুরেও তা খোলা হয়নি। উল্টো আজ শিক্ষার্থীরা প্রধ্যক্ষের কক্ষের নামফলকও সরিয়ে ফেলেন। গতকাল রোববার সকালে আর্থিক অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীরা প্রাধ্যক্ষের কক্ষে তালা দেন। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অধ্যাপক চৌধুরী মোহাম্মদ মনিরুল হাসান আলোচনার প্রস্তাবও দিলেও শিক্ষার্থীরা তা ফিরিয়ে দিয়েছেন। নতুন প্রাধ্যক্ষ নিয়োগ ও অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত ছাড়া আলোচনায় বসবেন না বলে হল সংসদের নেতারা জানিয়েছেন।

আজ দুপুর ১২টার দিকে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক চৌ ধুরী মোহাম্মদ মনিরুল হাসান হলের গৃহশিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সঙ্গে নিয়ে হলে যান। তিনি হল সংসদের প্রাকর্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তবে আবাসিক শিক্ষার্থী ও হল সংসদের নেতারা সেখানে উপস্থিত হননি।

প্রাধ্যক্ষ দেখা করতে চাইলেও হল সংসদের সদস্যরা তাতে রাজি হননি বলে জানান শাহ আমানত হল সংসদের ভিপি জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, অভিযোগগুলো তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত আগের মতো সম্পর্ক বজায় রাখা সম্ভব নয়। তিনি আরও জানান, দাপ্তরিক কাজ যাতে ব্যাহত না হয়—এ জন্য হলের আরেকটি অফিস কক্ষ খোলা রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মনিরুল হাসান বলেন, ‘আমি গৃহশিক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে হলে গিয়েছিলাম আলোচনায় বসতে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা আসেননি। পরে সহউপাচার্যের (একাডেমিক) সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি আমাকে দাপ্তরিক কাজ চালিয়ে যেতে বলেন এবং উপাচার্য চীন সফর শেষে দেশে ফিরলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক শামীম উদ্দিন খান বলেন, গতকাল হল সংসদের প্রতিনিধিরা তাঁর কাছে একটি স্মারকলিপি দেন। তিনি সময় চেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আজ প্রাধ্যক্ষ এসে জানিয়েছেন, তিনি শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করেছেন এবং ভবিষ্যতেও করতে চান। কিন্তু উপাচার্য ও সহউপাচার্য (প্রশাসনিক) অনুপস্থিত থাকায় আপাতত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে না। উপাচার্য দেশে ফিরলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

গতকাল আবাসিক শিক্ষার্থীদের সম্মতিতে হল সংসদের প্রতিনিধিরা প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, দায়িত্বে অবহেলা, অসৌজন্যমূলক আচরণ, অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তাঁর কক্ষে তালা দেন। অভিযোগে বলা হয়—হল স্টোরের মালামাল নিয়মবহির্ভূতভাবে বিক্রি করা হয়েছে, দরজা-জানালার মেরামত হয়নি, দ্বিতীয় ডাইনিং চালু হয়নি এবং সাইকেল স্ট্যান্ডসহ মৌলিক সুবিধা নিশ্চিত করা হয়নি। এসব অভিযোগ তাঁরা সহ–উপাচার্যের কাছে লিখিতভাবে জমা দিয়েছেন। তবে প্রাধ্যক্ষ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, অনেক কাজই বাজেট ও প্রশাসনিক অনুমোদনের ওপর নির্ভরশীল এবং তিনি নিয়মিতভাবে উন্নয়ন কার্যক্রম এগিয়ে নিতে চেষ্টা করছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ