ভুয়া মামলার আসামিরা প্রাথমিক তদন্তেই রেহাই পাবেন: আসিফ নজরুল
Published: 29th, June 2025 GMT
উপদেষ্টা পরিষদের আজ রোববারের বৈঠকে ফৌজদারি কার্যবিধির একটি সংশোধন অনুমোদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। তিনি বলেছেন, নতুন এই সংশোধন অনুযায়ী, ভুয়া মামলা কিংবা মামলার ভুয়া আসামিরা এখন থেকে প্রাথমিক তদন্তের পরেই সংশ্লিষ্টতা না থাকা সাপেক্ষে রেহাই পাবেন।
আজ রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন আসিফ নজরুল।
আইন উপদেষ্টা বলেন, নতুন বিধানে বলা হয়েছে, কমিশনার, এসপি বা এসপি পদমর্যাদার কোনো পুলিশ কর্মকর্তা তাঁর নিয়ন্ত্রণাধীন কোনো মামলার বিষয়ে যদি মনে করেন, তদন্ত কর্মকর্তার কাছে প্রাথমিক প্রতিবেদন চাওয়া যৌক্তিক, তাহলে তিনি তা চাইতে পারবেন। প্রতিবেদন প্রস্তুত হলে তখন তা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেবেন। ম্যাজিস্ট্রেট যদি দেখেন, মামলায় কোনো আসামিকে বিনা অপরাধে জড়ানো হয়েছে, যাঁর বিরুদ্ধে যথাযথ কোনো প্রমাণ নেই, তখন তিনি (ম্যাজিস্ট্রেট) সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে (বিনা অপরাধে জড়ানো ব্যক্তি) মুক্তি দিতে পারবেন।
আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমরা আশা করছি, আমাদের পুলিশ প্রশাসন ও আদালত প্রশাসন একসঙ্গে কাজ করবে। যেসব মামলায় গ্রেপ্তার বা মামলা বাণিজ্য হচ্ছে, তাঁদের আদালত প্রিট্রায়াল স্টেজে মামলা থেকে মুক্তি দিতে পারবেন।’
এ উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে অনেক নিরপরাধ মানুষ হয়রানি থেকে বেঁচে যাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন আইন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, তখন মামলা–বাণিজ্য থেকে অনেকে রেহাই পাবেন। কিন্তু এর মানে এই নয় যে মামলার তদন্ত থেমে থাকবে। তদন্ত চলতে থাকবে। আবার পুলিশ যদি পরবর্তী সময়ে দেখে, আগে যাঁদের মামলা থেকে রেহাই দেওয়া হয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে পরে প্রকৃত প্রমাণ পাওয়া গেছে, তখন তাঁদের নাম আবার মামলায় যুক্ত করতে পারবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সাবেক গভর্নর ও ডেপুটি গভর্নরদের পরিবারের সদস্যদের হিসাব তলব
বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) সাবেক ৩ গভর্নর, ডেপুটি গভর্নর, সাবেক বিএফআইইউ প্রধান এবং তাদের পরিবারের সদস্য তথা স্ত্রী-সন্তান-জামাতা-পূত্রবধূর হিসাবও তলব করেছে। এসব ব্যক্তির হিসাবের যাবতীয় তথ্য জানাতে দেশের সব তফসিলি ব্যাংককে এ সংক্রান্ত চিঠি দিয়েছে বিএফআইইউ।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) বিএফআইইউর একজন কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুরোধে সাবেক গভর্নর, ডেপুটি গভর্নর এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তাদের হিসাব তলব সংক্রান্ত চিঠি বুধবার ব্যাংকগুলোকে দিয়েছে বিএফআইইউ।
আরো পড়ুন:
সাবেক ৩ গভর্নর ও ৬ ডেপুটি গভর্নরের ব্যাংক হিসাব তলব
১২ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এল ১০৫ কোটি ডলার
বাংলাদেশ ব্যাংকের শীর্ষ পদে দায়িত্ব পালন করা এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আর্থিক খাতের বিভিন্ন অনিয়ম, ব্যাংক দখলের মাধ্যমে অর্থ লোপাট এবং অতিরিক্ত টাকা ছাপিয়ে ঋণ বিতরণের মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে দুদক তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। হিসাবের যাবতীয় তথ্য পাওয়ার পর এসব ব্যক্তির হিসাবে অস্বাভাবিক কোন লেনদেন হয়েছে কিনা সে বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।
যাদের হিসাব তলব করা হয়েছে তাদের মধ্যে আছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান, ফজলে কবির এবং আব্দুর রউফ তালুকদার। অভিযোগ অনুযায়ী, ফজলে কবিরের মেয়াদে রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাংকগুলোর দখল নিয়ে লুটপাট শুরু হয় এবং তা অব্যাহত থাকে আব্দুর রউফ তালুকদারের সময়েও। বিশেষ করে রউফ তালুকদারের সময় টাকা ছাপিয়ে ব্যাংক খাতে ঋণ বিতরণের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ লোপাটের সুযোগ তৈরি হয়েছিল বলে তদন্তে উঠে এসেছে।
হিসাব তলব করা সাবেক ডেপুটি গভর্নরদের মধ্যে রয়েছেন এস কে সুর চৌধুরী, এস এম মনিরুজ্জামান, কাজী ছাইদুর রহমান এবং আবু ফরাহ মো. নাছের। এর মধ্যে এস কে সুর চৌধুরী বর্তমানে দুর্নীতি মামলায় কারাবন্দি। একই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন বিএফআইইউর সাবেক প্রধান মো. মাসুদ বিশ্বাসও।
অন্যদিকে সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস এম মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে সরকারি ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের অবৈধ আর্থিক সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। আর আবু ফরাহ মো. নাছেরের বিরুদ্ধে নীতিমালা শিথিল করে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
বিএফআইইউর সাবেক প্রধান আবু হেনা মো. রাজী হাসান এবং মো. মাসুদ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। বিএফআইইউ থেকে ব্যাংকগুলোকে পাঠানো চিঠিতে তাদের পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব, লেনদেন বিবরণী, হিসাব খোলার ফরম এবং পরিচয় সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য ব্যাংকগুলোর কাছে চাওয়া হয়েছে। কোনো হিসাব বর্তমানে বন্ধ থাকলেও, সেটির তথ্য আলাদাভাবে জানাতে বলা হয়েছে।
ঢাকা/নাজমুল/সাইফ