জাতিসংঘ গতকাল বুধবার বলেছে, গাজা উপত্যকার প্রায় ৮৫ শতাংশ এলাকা হয় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে কিংবা উচ্ছেদ আদেশের মুখে। আবার কোথাও কোথাও উভয় অবস্থাই আছে।

জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, উচ্ছেদ আদেশগুলো মানুষকে জরুরি সহায়তা পাওয়া থেকে মারাত্মকভাবে বঞ্চিত করছে এবং বিপদের মধ্যে থাকা মানুষের কাছে ত্রাণকর্মীদের পৌঁছানো কঠিন করে তুলছে।

আরও পড়ুনগাজায় ইসরায়েলের গণহত্যায় সহায়তা করছে মাইক্রোসফটসহ বহু প্রতিষ্ঠান০২ জুলাই ২০২৫

স্টিফেন ডুজারিক জানান, খান ইউনিসের দুটি এলাকায় সর্বশেষ উচ্ছেদ আদেশ দেওয়া হয়েছে। ওই এলাকায় প্রায় ৮০ হাজার মানুষ বাস করেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন, জাতিসংঘের পানি, স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন নিয়ে কাজ করা অংশীজনেরা জানিয়েছেন, এই আদেশের কারণে আল সাতার নামের একটি গুরুত্বপূর্ণ জলাধারে এখন প্রবেশ করা যাচ্ছে না।

আল সাতার খান ইউনিসের প্রধান পানি সরবরাহ কেন্দ্র এবং ওই এলাকায় ইসরায়েলি পাইপলাইন থেকে আসা পানির একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। ডুজারিক বলেন, জলাধারটির কোনো ক্ষতি হলে শহরের পানি সরবরাহব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। ফলে ভয়াবহ মানবিক সংকট সৃষ্টি হবে।

আরও পড়ুনফিলিস্তিনে যুদ্ধবিরতির শর্তে ইসরায়েল রাজি - বললেন ট্রাম্প২০ ঘণ্টা আগে

উচ্ছেদ আদেশগুলো জরুরি পরিষেবার ওপর চাপ সৃষ্টি করছে এবং মানুষকে ক্রমেই আরও সংকীর্ণ এলাকার দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে সতর্ক করেছেন ডুজারিক। তিনি বলেন, মার্চে যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে গতকাল পর্যন্ত গাজায় প্রায় ৭ লাখ ১৪ হাজার মানুষ আবার জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। শুধু গত রোববার থেকে সোমবার পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ২৯ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

ডুজারিক বলেন, ‘গত চার মাসে গাজায় কোনো আশ্রয় সহায়তা পৌঁছেনি। আমাদের আশ্রয় সহায়তা দানকারী অংশীদারেরা জানিয়েছে, জরিপ করা স্থানগুলোর ৯৭ শতাংশ এলাকায় বাস্তুচ্যুত মানুষ খোলা আকাশের নিচে ঘুমাচ্ছেন।’

আরও পড়ুনগাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে আশাবাদ১৪ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

পাইপলাইনে তেল পরিবহন শুরু চলতি মাসেই

চট্টগ্রাম-ঢাকা জ্বালানি তেল ডিজেল পাইপলাইন বাণিজ্যিক পরিবহনের জন্য প্রস্তুত। পরীক্ষামূলক তেল পরিবহন সফলভাবে শেষ হয়েছে। চলতি মাসের মাঝামাঝি বাণিজ্যিকভাবে ডিজেল পরিবহন শুরু হবে। এতে বছরে প্রায় আড়াইশ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে বলে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) সূত্রে জানা গেছে। 
শুরুতে এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ২ হাজার ৮৬১ কোটি ৩১ লাখ টাকা। পরে সংশোধিত ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩ হাজার ৬৯৯ কোটি টাকায়। এটি বাস্তবায়ন করছে সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড। পাইপলাইনের দৈর্ঘ্য ২৩৭ কিলোমিটার। 

বিপিসি চেয়ারম্যান আমিন উল আহসান সোমবার সমকালকে বলেন, ‘আশা করছি দুই-তিন সপ্তাহের মধ্যে সেনাবাহিনী পাইপলাইন প্রকল্পটি আমাদের কাছে হস্তান্তর করবে। তার পরই আমরা বাণিজ্যিক কাজ শুরু করে দেব। এরই মধ্যে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে পাইপলাইনে পরীক্ষামূলকভাবে ছয় হাজার টন ডিজেল পরিবহন করা হয়েছে।’ 
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় তেল পরিবহনের ক্ষেত্রে নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। যেমন  রেলওয়ের ওয়াগন থাকলেও লোকোমোটিভ পাওয়া যায় না। সড়কপথে পণ্য পরিবহনে যানজটসহ নানা সমস্যা হয়, দীর্ঘ সময় লাগে। জলপথেও সমস্যা হয়। পাইপলাইনটি চালু হলে এসব সমস্যা শূন্যের কোঠায় নেমে আসবে। তিনি বলেন, আমাদের ব্যবহৃত জ্বালানি তেলের মধ্যে ডিজেল ৬৫ শতাংশ। ডিজেলের সরবরাহ নিশ্চিত হবে পাইপলাইনটি চালু হলে। পেট্রোল ও অকটেন আগে যেভাবে সরবরাহ করা হতো, কখনও রেলওয়ে ওয়াগনে করে, কখনও নদীপথে ট্যাঙ্কারে করে– সেভাবেই আসবে।
জানা গেছে, গত ২৪ জুন থেকে পরবর্তী পাঁচ দিন সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে এই পাইপলাইনের মাধ্যমে ডিজেল নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল ডিপোতে পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষামূলক এই সরবরাহ শতভাগ সফল বলে বিপিসি কর্মকর্তারা জানান। 

দেশে ব্যবহৃত জ্বালানি তেলের ৯২ শতাংশ আমদানি করা হয়। বছরে জ্বালানি তেলের চাহিদা ৮০ থেকে ৯০ লাখ টন। পরিশোধিত তেলের মধ্যে সরকারিভাবে সবচেয়ে বেশি আমদানি করা হয় ডিজেল। বর্তমানে ঢাকায় তেল পরিবহনে প্রথমে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে নদীপথে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল ও ফতুল্লা ডিপোতে নেওয়া হয়। এর পর সেখান থেকে সড়কপথে ঢাকাসহ অন্যান্য জেলায়  তেল পরিবহন করা হয়। পরিবহনে ব্যবহৃত হয়  ১৫০টি ছোট-বড় জাহাজ। এতে বছরে ২০০ কোটি টাকার বেশি খরচ হয়।
বিপিসির এক পরিচালক জানান, পাইপলাইনটি চালু হলে সড়ক ও জলপথে পরিবহনের জন্য কোনো টাকা ব্যয় হবে না। শুধু পরিচালন, রক্ষণাবেক্ষণ, বিদ্যুৎ বিল, জমির ভাড়াসহ কিছু খাতে ব্যয় হবে ৯০ কোটি টাকা। বছরে প্রকল্পটি থেকে আয় হবে ৩২৬ কোটি টাকা। সাশ্রয় হবে আড়াইশ কোটি টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়নে যে টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে, তা আগামী ১৬ বছরের মধ্যে উঠে আসবে। এ ছাড়া প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে জ্বালানি তেল পরিবহন খরচ কমবে এবং নির্বিঘ্ন হবে সরবরাহ ব্যবস্থা। একই সঙ্গে পরিবেশ দূষণ কমবে। শুষ্ক মৌসুমে নৌপথে নাব্য কমে যাওয়ায় তেল পরিবহন করার যে সংকট, তাও আর থাকবে না। নদীপথে লাইটারেজে করে পরিবহনকে কেন্দ্র করে একটি বিশাল সিন্ডিকেট আছে। পাইপলাইন চালু হয়ে গেলে এসব বিষয়ও নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে মনে করছে বিপিসি। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গ্যাসের অপেক্ষা আর শেষ হয় না
  • মার্কিন অস্ত্র সহায়তা স্থগিতে রুশ হামলা জোরদারের শঙ্কায় ইউক্রেন
  • দাম বাড়ানোর পরও গুদামে ধান দিতে অনাগ্রহ কৃষকের
  • চীনকে মোকাবিলায় পরীক্ষার মুখে কোয়াডের ঐক্য
  • ৪০টি চৌকি আদালতে ৭১টি ডেস্কটপ কম্পিউটার সরবরাহ
  • বৃহস্পতিবার ১১ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়
  • ভরা মৌসুমেও ইলিশ সরবরাহ কম, দাম লাগামহীন
  • ইসরায়েলের কাছে ৫১০ মিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রি করছে যুক্তরাষ্ট্র
  • পাইপলাইনে তেল পরিবহন শুরু চলতি মাসেই