বৈশ্বিক অর্থনীতি স্থিতিশীল রাখতে তেল উৎপাদনকারীদের জোট ওপেক ও সহযোগী আটটি দেশ অপরিশোধিত তেল উৎপাদন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী আগস্ট মাস থেকে প্রতিদিন ৫ লাখ ৪৮ হাজার ব্যারেল তেল উৎপাদন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্বের তেল উৎপাদনকারীদের সবচেয়ে বড় এই জোট। এই জোটভুক্ত দেশগুলো স্বেচ্ছায় তাদের সরবরাহ কমানোর পরিকল্পনা থেকে ধীরে ধীরে সরে আসছে।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই তেল উৎপাদনকারী জোটের মধ্যে আছে রাশিয়া ও সৌদি আরবের পাশাপাশি আলজেরিয়া, ইরাক, কাজাখস্তান, কুয়েত, ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। গত শনিবার সকালে ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তাদের এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। যদিও বৈঠকের আগে ধারণা করা হয়েছিল, দেশগুলো দৈনিক ৪ লাখ ১১ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত তেল উৎপাদন বাড়াবে।

ওপেক সচিবালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আগামী আগস্ট মাসে দৈনিক ৫ লাখ ৪৮ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত তেল উৎপাদন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশ্ব অর্থনীতিকে স্থিতিশীল ও বর্তমান সুস্থ বাজারের মৌলিক অবস্থা ঠিক রাখতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সিএনবিসির সংবাদে বলা হয়েছে, ওপেক জোট আনুষ্ঠানিক নীতির বাইর দুই ধরনের স্বেচ্ছামূলক উৎপাদন কমানোর নীতি প্রণয়ন করেছিল। এর মধ্যে প্রতিদিন ১ দশমিক ৬৬ মিলিয়ন বা ১৬ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেল তেল উৎপাদন হ্রাসের কথা ছিল আগামী বছরের শেষ সময় পর্যন্ত। দ্বিতীয়ত, প্রথম ত্রৈমাসিকের শেষ পর্যন্ত অতিরিক্ত ২২ লাখ মিলিয়ন ব্যারেল দৈনিক উৎপাদন হ্রাস।

তারা ২০২৬ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতি মাসে ১ লাখ ৩৭ হাজার ব্যারেল দৈনিক উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছিল। তবে শুধু এপ্রিলে দেশগুলো এই গতি বজায় রাখতে পেরেছিল। এরপর তারা মে, জুন ও জুলাই মাসে অপরিশোধিত তেল উৎপাদন তিন গুণ বাড়িয়ে প্রতিদিন ৪ লাখ ১১ হাজার ব্যারেল করেছিল। তবে আগামী আগস্ট মাসে উৎপাদন আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত এসেছে এবারের বৈঠকে।

গত কয়েক সপ্তাহে গ্রীষ্মকালীন চাহিদা বৃদ্ধি এবং ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে ১২ দিনের সংঘর্ষে তেলের দাম সাময়িকভাবে বেড়েছিল। এ সংঘর্ষে তেহরান ও হরমুজ প্রণালি দিয়ে তেল সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছিল।

গত শুক্রবারে পর্যন্ত সেপ্টেম্বরে মাসের জন্য ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম নির্ধারিত হয়েছে ব্যারেলপ্রতি ৬৮ দশমিক ৩০ ডলার। আগস্টে মেয়াদ শেষ হতে যাওয়া নিউইয়র্ক মেক্সিকোর ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি নির্ধারিত হয়েছে ৬৬ দশমিক ৫০ ডলার।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আগস ট

এছাড়াও পড়ুন:

চড়া মাছ-সবজি, দাম কমেছে ডিম-মুরগির

বাড়ছে চাল, সবজি ও মাছের দাম। গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে মাছ ও সবজির গড়ে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

শুক্রবার (৪ জুলাই) রাজধানীর নিউমার্কেট রায়েরবাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখন বাজারে মানভেদে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৮২ থেকে ৮৪ টাকা। যা গত সপ্তাহ বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ৮২ টাকায়। সে হিসেবে মিনিকেট চালের দাম বেড়েছে দুই টাকা। ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫৮ থেকে ৬২ টাকা। সেই হিসেবে এই জাতের চালের দাম বেড়েছে দুই থেকে তিন টাকা।

এছাড়া এখন বাজারে নাজিরশাইল চাল ৭৫ থেকে ৮০ টাকা, কাটারিভোগ ৭০ থেকে ৭৬ টাকা, স্বর্ণা গুটি চাল ৫৬ থেকে ৫৮ টাকা এবং চিনি গুঁড়া পোলাও চাল মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৫০ টাকায়।

আরো পড়ুন:

চাল-মাছের দাম বেড়েছে, কমেছে ডিম-মুরগির দাম

ট্যানারি মালিকদের অপেক্ষায় নাটোরের চামড়া ব্যবসায়ীরা

বেড়েছে সবজি ও মাছের দাম
গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে সবজির দাম বেড়েছে। এখন বাজারে বেগুন মানভেদে প্রতি কেজি ৭০ থেকে ৮০টাকা, করলা ৮০ টাকা, গাজর (দেশি) ১২০ টাকা, কাঁচামরিচ ১২০টাকা, প্রতিটি পিস লাউ ৫০, টমেটো ১৪০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০, দেশি শশা ৬০, বরবটি ৮০, ঢেড়শ ৫০, জালি কুমড়া ৫০ টাকা পিস, মিষ্টি কুমড়া কেজি ৩০ টাকা, পটোল ৫০ টাকা, কাঁকরোল ৭০ টাকা, কচুরমুখী ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে এখন প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৫৫ থেকে ৬০, রসুন ১৮০ ও দেশি আদা ১২০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে, গত সপ্তাহের তুলনায় মাছের দামও বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরবরাহ ভালো থাকলেও বাজারে মাছ কম থাকায় দাম বেড়েছে। বাজারে এখন এখন মাঝারি সাইজের চাষের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে থেকে ৩৫০ টাকা। চাষের পাঙাস কেজি ১৯০ থেকে ২০০টাকা, তেলাপিয়া ২০০ থেকে ২২০, কৈ ২২০ থেকে ২৫০, দেশি শিং ৫০০ থেকে ৫৫০টাকা, বড় সাইজের পাবদা ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০টাকা, দেশি পাঁচমিশালি ছোট মাছ ৫০০ থেকে ৬০০টাকা, এক কেজি ওজনের ওপরে ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৪০০ থেকে ২৫০০ টাকা।

কমেছে ডিম ও মুরগির দাম
বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ ভালো থাকার কারণে গত সপ্তাহের তুলনায় এই সপ্তাহে ডিম ও মুরগির দাম কমেছে। এখন বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা। সোনালি মুরগির এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা। এছাড়া বাজারে ফার্মের মুরগির ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকায়।

রাজধানীর রায়েরবাজার কেনাকাটা করতে আসা চাকরিজীবী রাজিব সিকদার রাইজিংবিডিকে বলেন, “এখন বাজারের চালসহ সবজি ও মাছের দাম বেড়েছে। সরকারের কাছে অনুরোধ, সাধারণ মানুষের জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।”

নিউমার্কেটের সবজি বিক্রেতা আজাদ হোসেন রাইজিংবিডিকে বলেন, “দেশে বিভিন্ন স্থানে টানা বৃষ্টির জন্য কৃষকরা ঠিকমত সবজি সরবরাহ করতে পারছেন না। গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে সবজি দাম কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। সরবরাহ বাড়লে আবার সবজি দাম স্বাভাবিক হবে।”

ঢাকা/রায়হান/সাইফ 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সোমবার ১১ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়
  • সাজা মাথায় নিয়ে ঘুরছিলেন ধামাকার চেয়ারম্যান মোজতবা আলী
  • ধামাকার চেয়ারম্যান কারাগারে, সাজা মাথায় নিয়ে ঘুরছিলেন
  • রেকর্ড উৎপাদন, বেড়েছে মজুত, তবুও চালের বাজারে উত্তাপ
  • হামলা চালিয়ে যাবে মস্কো, পুতিনে হতাশ ট্রাম্প
  • কার্ড কৃষকের, গুদামে ধান দেন মিলার-নেতারা
  • কার্ড কৃষকের, গুদামে ধান দেন মিলার- নেতারা
  • পাকিস্তানকে মোকাবিলায় দেশীয় ড্রোন তৈরিতে বিপুল প্রণোদনা ভারতের
  • চড়া মাছ-সবজি, দাম কমেছে ডিম-মুরগির