রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ (রাকসু) হল সংসদ ও সিনেট-এ ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের আচরণবিধি প্রকাশ করা হয়েছে।

আচরণবিধি ভঙ্গ করলে প্রার্থিতা বাতিল ও সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার কিংবা প্রয়োজনে রাষ্ট্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় বা রাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী অভিযুক্ত ব্যক্তি আরো কঠিন দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন। সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। তবে প্রয়োজনে তিনি স্বপ্রণোদিত হয়েও তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে পারবেন।

আরো পড়ুন:

যৌথ বিবৃতি প্রত্যাখান করে বাহা’কে বয়কট ঘোষণা শিক্ষার্থীদের

গোবিপ্রবিতে ২ বিভাগের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, প্রক্টর-প্রাধ্যক্ষসহ আহত ১৫

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড.

আমজাদ হোসেনের সাক্ষরিত একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রকাশিত আচরণবিধিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। নির্বাচন সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত এই আচরণবিধি কার্যকর থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিধি অনুযায়ী, প্রার্থী নিজে অথবা তার মনোনীত প্রতিনিধির মাধ্যমে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ এবং দাখিলের সময় কোনো প্রকার মিছিল বা শোভাযাত্রা করা যাবে না। প্রার্থী পাঁচজনের বেশী সমর্থক নিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে পারবে না। প্রার্থীকে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে হবে। মনোনয়নপত্র দাখিল এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় অন্য কেউ কোনো প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারবে না।

বিধিতে আরো বলা হয়েছে, ডোপ টেস্ট রিপোর্ট নেগেটিভ না হলে প্রার্থীর প্রার্থীতা বাতিল হবে। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার বা নির্বাচনী প্রচারণায় কোনোরূপ শোডাউন বা মিছিল করা যাবে না। নির্বাচনের দিন ভোটারদের আনা-নেওয়ার জন্য কোনো প্রকার যানবাহন ব্যবহার করা যাবে না।  নির্বাচনের দিন প্রধান রিটার্নিং অফিসার অনুমোদিত যানবাহন ছাড়া নির্বাচনী এলাকায় কোনো যান চলাচল করতে পারবে না। নির্বাচনের দিন কেন্দ্রে আসার ক্ষেত্রে নিজ উদ্যোগে বাইসাইকেল ও রিকশা ব্যবহার করতে পারবে।

প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, ভোটার তালিকা প্রকাশের পর থেকে নির্বাচনের দিন ভোটগ্রহণের ২৪ ঘণ্টা পূর্ব পর্যন্ত সব ধরনের নির্বাচনী প্রচারণা করতে পারবে। প্রচারণার সময় সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকবে। হল প্রতিনিধি নির্বাচনের প্রার্থী ও ভোটার ব্যতীত অন্য কেউ প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রচারণা চালাতে পারবে না। ক্লাস-পরীক্ষাসহ শিক্ষা কার্যক্রমে কোনো প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করা যাবে না।

তাদের আরো বলা হয়েছে, নির্বাচনী প্রচারণায় শুধু সাদা-কালো পোস্টার ব্যবহার করা যাবে। এক্ষেত্রে পোস্টারের আকার অনধিক ৬০×৪৫ সেন্টিমিটারের বেশি হবে না। নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো ভবনের দেয়ালে নির্বাচন সংক্রান্ত লেখনী ও পোস্টার লাগানো যাবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে এমন কোন বক্তব্য ব্যবহার করা যাবে না। ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিতব্য সভার স্থান ও সময় সম্পর্কে প্রক্টরের অনুমতি নিতে হবে। প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে অবশ্যই নিজ নিজ পরিচয়পত্র বহন করতে হবে। কোনো সময়ই বহিরাগত কেউ আবাসিক হলে অবস্থান করতে পারবে না। প্রার্থী পরিচিতি সভা ছাড়া অন্য কোনো সভায় মাইক ব্যবহার করা যাবে না।

ভোটাররা নিজ নিজ হলের বৈধ পরিচয়পত্র প্রদর্শন করে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করবে। অনুমোতি ছাড়া কোন বাক্তি ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবে না। রিটার্নিং অফিসারের অনুমতি সাপেক্ষে গণমাধ্যমকর্মীরা ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন। ভোটকেন্দ্রের অভ্যন্তরে লাইভ সম্প্রচার করা যাবে না। ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের পর মোবাইল ফোন ও ইলেকট্রনিক যোগাযোগের সব মাধ্যম বন্ধ রাখতে হবে। ভোট কেন্দ্রের ৫০ মিটারের মধ্যে ভোটার স্লিপ বিতরণ করা যাবে না।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ি আগামি ১৫ সেপ্টেম্বর রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবহ র কর ভ টক ন দ র আচরণব ধ প রব শ প রক শ

এছাড়াও পড়ুন:

মনোনয়ন নেওয়ার শেষ দিনে একটি হলে ছাত্রী সংস্থার প্যানেল

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদের মনোনয়নপত্র নেওয়ার মেয়াদ আজ মঙ্গলবার শেষ হচ্ছে। বেলা সাড়ে তিনটা পর্যন্ত প্রার্থীরা নির্দিষ্ট ফি দিয়ে নির্বাচন কমিশন থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন। আজ সকাল থেকে স্বতন্ত্র অনেক প্রার্থী মনোনয়নপত্র নিলেও দুপুর ১২টা পর্যন্ত ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদসহ বড় দলগুলোর বেশির ভাগ প্রার্থী মনোনয়নপত্র নেননি। এসব দলের নেতা-কর্মীরা প্যানেল গুছানো নিয়েই ব্যস্ত সময় পার করছেন।

এদিকে দিকে আজ দুপুরে ছাত্রীদের আবাসিক প্রীতিলতা হল সংসদ নির্বাচনের জন্য ১২ সদস্যদের প্যানেল ঘোষণা করে মনোনয়নপত্র নিয়েছে ইসলামী ছাত্রী সংস্থা। প্যানেলের নাম দেওয়া হয়েছে—সংঘবদ্ধ ছাত্রী জোট।

আজ সরেজমিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চাকসু ভবনের পাশের কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ঝুপড়িতে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে প্রার্থী ও প্যানেল নিয়ে আলোচনা করছেন। কোন দলের প্যানেলে কোন প্রার্থী থাকবেন, এসব নিয়েই সবার আগ্রহ। তবে দুপুর ১২টা পর্যন্ত প্যানেল সম্পর্কে বিস্তারিত জানায়নি ছাত্রশিবির, ছাত্রদল, গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ।

জানতে চাইলে শাখা ছাত্রশিবিরের প্রচার সম্পাদক ইসহাক ভূঞা দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের এখন পর্যন্ত একক প্যানেল করার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে শিবির–সমর্থিত শিক্ষার্থী জোট হিসেবে প্যানেলটা হতে পারে। আজই কেন্দ্রীয় সংসদ ও হল সংসদের সব কটির পদের জন্য ফরম নেব। প্যানেলের নাম এবং কে কোন পদে লড়বেন, এটা পরে জানানো হবে।’

অন্যদিকে ছাত্রদলও একক প্যানেল দেওয়ার কথা ভাবছে বলে জানিয়েছেন দলটির নেতা-কর্মীরা। এ দল থেকে ভিপি (সহসভাপতি) পদে জালাল উদ্দিন মেসবাহর নাম আলোচনায় রয়েছে। তিনি শাখা ছাত্রদলের সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক। জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ আমরা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করব। আজকের মধ্যে প্যানেলের নাম ঠিক করা হবে। নাম ঠিক করার পরই একক প্যানেল দেওয়া হবে, নাকি জোট করা হবে, তা জানানো হবে।’

অবশ্য গতকাল সোমবার দুপুরে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের একাংশ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছে। দলটি থেকে কেন্দ্রীয় সংসদে লড়তে ১২ জন ও হল সংসদে ১৫ জন মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। তবে তাঁরা কে কোন পদে লড়বেন, তা উল্লেখ করা হয়নি।
অন্যদিকে বাম ধারার পাঁচটি সংগঠনের গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটও আলাদা প্যানেল দেবে বলে জানান গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলর সংগঠক ধ্রুব বড়ুয়া। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা আজ ৫০টি পদের জন্য ফরম নেব। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় সংসদে ২৬টি ও হল সংসদে ২৪টি পদের জন্য ফরম নেওয়া হবে। বিভিন্ন সংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।’

বেলা সাড়ে তিনটার মধ্যেই কেন্দ্রীয় পদের জন্য মনোনয়ন দেবে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ। সংগঠনটির বিশ্ববিদ্যালয় শাখার মুখ্য সংগঠক সাব্বির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরাও প্যানেল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে কে কোন পদে লড়বেন, সেটা মনোনয়ন ফরম নেওয়ার সময় তাঁরা জানাবেন।

ইসলামী আন্দোলন–সমর্থিত ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্র আন্দোলনও আলাদা প্যানেল দিচ্ছে। তাঁদের প্যানেলের নাম ‘সচেতন শিক্ষার্থী সংসদ’। তাঁরা এখন পর্যন্ত ১৮টি পদে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। এ প্যানেল থেকে ভিপি পদে লড়বেন ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী ও সংগঠনটির শাখা সভাপতি আবদুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, নারী শিক্ষার্থী ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্ত করে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করা হবে।

প্রার্থীদের পরিচয় যাচাই করে মনোনয়নপত্র দিচ্ছেন নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা। আজ বেলা ১২টায় কমিশনের কার্যালয়ে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জকসু নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা, ভোট ২৭ নভেম্বর
  • ছাত্রশিবিরের ভরসা ওএমআর মেশিনে, ছাত্রদল চায় হাতে ভোট গণনা
  • গকসু নির্বাচন: জিএস প্রার্থীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ
  • হল সংসদে মনোনয়নপত্র নিলেন ডাকসু ভিপি সাদেক কায়েমের ছোট ভাই
  • চাকসু ও হল সংসদে ২৩২ পদে মনোনয়নপত্র নিলেন ১ হাজার ৮৮ জন প্রার্থী
  • চাকসু: ফয়জুন্নেছা হলে ১৪ পদে ১৪ মনোনয়নপত্র বিক্রি
  • চাকসু নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ
  • মনোনয়নপত্র নিতে এসে স্লোগান, আচরণবিধি ভাঙলেন এক শিক্ষার্থী
  • মনোনয়ন নেওয়ার শেষ দিনে একটি হলে ছাত্রী সংস্থার প্যানেল
  • রাকসুর নির্বাচনি প্রচার শুরু, মানতে হবে যেসব নির্দেশনা