রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের আচরণবিধি প্রকাশিত হয়েছে। নির্বাচনে প্রার্থী হলে ডোপ টেস্ট করাতে হবে এবং রিপোর্ট পজিটিভ হলে প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল হবে।

এ ছাড়া কোনো প্রার্থী বা তাঁর পক্ষে কেউ নির্বাচনী আচরণবিধি ভাঙলে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং প্রার্থিতা বাতিল বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার কিংবা রাষ্ট্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনানুযায়ী সব দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রাখা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে রাকসুর অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে এ আচরণবিধি প্রকাশ করা হয়। আচরণবিধিতে মনোনয়নপত্র, প্রার্থীদের ডোপ টেস্টের বাধ্যবাধকতা, নির্বাচনে প্রচারণা, ছাত্র ও ছাত্রীদের হলে প্রবেশের নিয়মাবলি ও আচরণবিধি লঙ্ঘনের শাস্তির বিধান বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়।

মনোনয়নপত্র সংগ্রহ, দাখিল ও প্রার্থিতা প্রত্যাহারের বিষয়ে আচরণবিধিতে বলা হয়েছে, প্রার্থী নিজে বা তাঁর মনোনীত প্রতিনিধির মাধ্যমে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও দাখিলের সময় কোনো ধরনের মিছিল বা শোভাযাত্রা করা যাবে না। প্রার্থী পাঁচজনের বেশি সমর্থক নিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে পারবেন না। প্রার্থীকে সশরীর উপস্থিত হয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে হবে। ডোপ টেস্টের রিপোর্ট নেগেটিভ না হলে প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল হবে।

নির্বাচনে যানবাহন ব্যবহারের বিধিনিষেধের বিষয়ে বলা হয়েছে, কোনো প্রার্থী বা তাঁর পক্ষে মনোনয়নপত্র জমাদান, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার বা নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো ধরনের যানবাহন, মোটরসাইকেল, রিকশা, ঘোড়ার গাড়ি, হাতি, ব্যান্ড পার্টি ইত্যাদি নিয়ে শোভাযাত্রা, শোডাউন বা মিছিল করা যাবে না। নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রে বা ভোটকেন্দ্র থেকে ভোটারদের আনা-নেওয়ার জন্য কোনো যানবাহন ব্যবহার করা যাবে না। নির্বাচনের দিন প্রার্থী, ভোটার, শিক্ষার্থীরা ভোটকেন্দ্রে আসার ক্ষেত্রে নিজ উদ্যোগে বাইসাইকেল ও রিকশা ব্যবহার করতে পারবে।

আচরণবিধিতে নির্বাচনী সভা, সমাবেশ ও শোভাযাত্রার বিষয়ে বলা হয়েছে, প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার দিন থেকে ভোট গ্রহণের ২৪ ঘণ্টা আগে পর্যন্ত সব ধরনের নির্বাচনী প্রচারণা করতে পারবে। প্রচারণার সময় সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকবে। প্রার্থী ও ভোটার ব্যতীত অন্য কেউ কোনোভাবেই কোনো প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রচারণা চালাতে পারবে না। নির্বাচনী প্রচারণায় শুধু সাদা-কালো পোস্টার ব্যবহার করা যাবে। এ ক্ষেত্রে পোস্টারের আকার অনধিক ৬০*৪৫ সেন্টিমিটারের বেশি হবে না। নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো ভবনের দেয়ালে নির্বাচনসংক্রান্ত লেখা ও পোস্টার লাগানো যাবে না।

কোনো প্রার্থী কিংবা তাঁর সমর্থকেরা অপর কোনো প্রার্থী বা তাঁর সমর্থকদের নির্বাচনী প্রচারে কোনো বাধা সৃষ্টি (যেমন পোস্টার লাগাতে না দেওয়া, পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা, পোস্টারের ওপর পোস্টার লাগানো, সভা ও মিছিলে বাধা, মাইক কেড়ে নেওয়া ইত্যাদি) করা যাবে না। একাডেমিক ভবনের অভ্যন্তরে মিছিল বা সমাবেশ এবং শ্রেণিকক্ষের অভ্যন্তরে কোনো নির্বাচনী প্রচারণা চালানো যাবে না। ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠেয় সভার স্থান ও সময় সম্পর্কে প্রক্টরকে আগে থেকে জানিয়ে অনুমতি নিতে হবে। প্রার্থী পরিচিতি সভা ছাড়া অন্য কোনো সভায় মাইক ব্যবহার করা যাবে না। আবাসিক হলের অভ্যন্তরে কোনো মিছিল করা যাবে না। নির্বাচনের দিনে ভোটার এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অনুমতিপ্রাপ্ত ব্যক্তি ব্যতীত ক্যাম্পাসে অন্য সবার প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে।

নির্বাচনী প্রচারণার উদ্দেশ্যে ছাত্রদের আবাসিক হলে ছাত্রী এবং ছাত্রীদের আবাসিক হলে ছাত্র সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমতি নিয়ে পরিচিতি সভায় প্রবেশ করতে পারবে বলে আচরণবিধিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ভোটাররা নিজ নিজ হলের বৈধ পরিচয়পত্র প্রদর্শন করে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করবে। প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তার ইস্যু করা পরিচয়পত্র দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট হলের রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমতি সাপেক্ষে গণমাধ্যমকর্মীরা ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর আচরণব ধ ত ভ টক ন দ র কর মকর ত প রব শ

এছাড়াও পড়ুন:

মনোনয়ন নেওয়ার শেষ দিনে একটি হলে ছাত্রী সংস্থার প্যানেল

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদের মনোনয়নপত্র নেওয়ার মেয়াদ আজ মঙ্গলবার শেষ হচ্ছে। বেলা সাড়ে তিনটা পর্যন্ত প্রার্থীরা নির্দিষ্ট ফি দিয়ে নির্বাচন কমিশন থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন। আজ সকাল থেকে স্বতন্ত্র অনেক প্রার্থী মনোনয়নপত্র নিলেও দুপুর ১২টা পর্যন্ত ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদসহ বড় দলগুলোর বেশির ভাগ প্রার্থী মনোনয়নপত্র নেননি। এসব দলের নেতা-কর্মীরা প্যানেল গুছানো নিয়েই ব্যস্ত সময় পার করছেন।

এদিকে দিকে আজ দুপুরে ছাত্রীদের আবাসিক প্রীতিলতা হল সংসদ নির্বাচনের জন্য ১২ সদস্যদের প্যানেল ঘোষণা করে মনোনয়নপত্র নিয়েছে ইসলামী ছাত্রী সংস্থা। প্যানেলের নাম দেওয়া হয়েছে—সংঘবদ্ধ ছাত্রী জোট।

আজ সরেজমিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চাকসু ভবনের পাশের কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ঝুপড়িতে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে প্রার্থী ও প্যানেল নিয়ে আলোচনা করছেন। কোন দলের প্যানেলে কোন প্রার্থী থাকবেন, এসব নিয়েই সবার আগ্রহ। তবে দুপুর ১২টা পর্যন্ত প্যানেল সম্পর্কে বিস্তারিত জানায়নি ছাত্রশিবির, ছাত্রদল, গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ।

জানতে চাইলে শাখা ছাত্রশিবিরের প্রচার সম্পাদক ইসহাক ভূঞা দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের এখন পর্যন্ত একক প্যানেল করার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে শিবির–সমর্থিত শিক্ষার্থী জোট হিসেবে প্যানেলটা হতে পারে। আজই কেন্দ্রীয় সংসদ ও হল সংসদের সব কটির পদের জন্য ফরম নেব। প্যানেলের নাম এবং কে কোন পদে লড়বেন, এটা পরে জানানো হবে।’

অন্যদিকে ছাত্রদলও একক প্যানেল দেওয়ার কথা ভাবছে বলে জানিয়েছেন দলটির নেতা-কর্মীরা। এ দল থেকে ভিপি (সহসভাপতি) পদে জালাল উদ্দিন মেসবাহর নাম আলোচনায় রয়েছে। তিনি শাখা ছাত্রদলের সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক। জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ আমরা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করব। আজকের মধ্যে প্যানেলের নাম ঠিক করা হবে। নাম ঠিক করার পরই একক প্যানেল দেওয়া হবে, নাকি জোট করা হবে, তা জানানো হবে।’

অবশ্য গতকাল সোমবার দুপুরে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের একাংশ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছে। দলটি থেকে কেন্দ্রীয় সংসদে লড়তে ১২ জন ও হল সংসদে ১৫ জন মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। তবে তাঁরা কে কোন পদে লড়বেন, তা উল্লেখ করা হয়নি।
অন্যদিকে বাম ধারার পাঁচটি সংগঠনের গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটও আলাদা প্যানেল দেবে বলে জানান গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলর সংগঠক ধ্রুব বড়ুয়া। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা আজ ৫০টি পদের জন্য ফরম নেব। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় সংসদে ২৬টি ও হল সংসদে ২৪টি পদের জন্য ফরম নেওয়া হবে। বিভিন্ন সংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।’

বেলা সাড়ে তিনটার মধ্যেই কেন্দ্রীয় পদের জন্য মনোনয়ন দেবে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ। সংগঠনটির বিশ্ববিদ্যালয় শাখার মুখ্য সংগঠক সাব্বির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরাও প্যানেল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে কে কোন পদে লড়বেন, সেটা মনোনয়ন ফরম নেওয়ার সময় তাঁরা জানাবেন।

ইসলামী আন্দোলন–সমর্থিত ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্র আন্দোলনও আলাদা প্যানেল দিচ্ছে। তাঁদের প্যানেলের নাম ‘সচেতন শিক্ষার্থী সংসদ’। তাঁরা এখন পর্যন্ত ১৮টি পদে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। এ প্যানেল থেকে ভিপি পদে লড়বেন ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী ও সংগঠনটির শাখা সভাপতি আবদুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, নারী শিক্ষার্থী ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্ত করে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করা হবে।

প্রার্থীদের পরিচয় যাচাই করে মনোনয়নপত্র দিচ্ছেন নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা। আজ বেলা ১২টায় কমিশনের কার্যালয়ে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জকসু নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা, ভোট ২৭ নভেম্বর
  • ছাত্রশিবিরের ভরসা ওএমআর মেশিনে, ছাত্রদল চায় হাতে ভোট গণনা
  • গকসু নির্বাচন: জিএস প্রার্থীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ
  • হল সংসদে মনোনয়নপত্র নিলেন ডাকসু ভিপি সাদেক কায়েমের ছোট ভাই
  • চাকসু ও হল সংসদে ২৩২ পদে মনোনয়নপত্র নিলেন ১ হাজার ৮৮ জন প্রার্থী
  • চাকসু: ফয়জুন্নেছা হলে ১৪ পদে ১৪ মনোনয়নপত্র বিক্রি
  • চাকসু নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ
  • মনোনয়নপত্র নিতে এসে স্লোগান, আচরণবিধি ভাঙলেন এক শিক্ষার্থী
  • মনোনয়ন নেওয়ার শেষ দিনে একটি হলে ছাত্রী সংস্থার প্যানেল
  • রাকসুর নির্বাচনি প্রচার শুরু, মানতে হবে যেসব নির্দেশনা