নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে মাকসুদুল হাসান জনি হত্যা মামলার বাদী ও তার পরিবারকে হত্যার হুমকি প্রদানের অভিযোগ উঠেছে।

শনিবার (২ আগস্ট) দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বিক্ষোভ ও  মানববন্ধন করে নিহতের পিতা শুক্কর আলী ও স্ত্রী ইভা আক্তার এ অভিযোগ করেন। এসময় মামলার পলাতক আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবি জানান তারা।

নিহতের স্ত্রী ইভা আক্তার বলেন, আমাকে যারা অল্প বয়সে বিধবা ও ৩ বছরের প্রতিবন্ধী ছেলে জুনায়েদকে এতিম করেছে আমি তাদের ফাঁসি চাই। আসামিরা আমার স্বামীকে হত্যা করেছে এখন আবার হুমকিও দিচ্ছে।  

মামলার বাদী নিহতের পিতা শুক্কুর আলী বলেন, আমার ছেলেকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। মামলার এজাহার নামীয় ৩ জন আসামি গ্রেফতার হলেও মূল পরিকল্পনাকারী মহাসিন ভূঁইয়াসহ ৪ জন এখনো গ্রেফতার হয়নি।

তারা পলাতক থেকে তাদের লোকজনের মাধ্যমে মিমাংসা করে মামলা তুলে দেয়ার জন্য আমাকে ও আমার পরিবারের সদস্যদের বিভিন্ন হুমকি দিচ্ছে। এতে আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তাই পলাতক আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার ও জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানাচ্ছি।

নিহতের মা মাজেদা বেগম বলেন, আমার ছেলে নিখোঁজ হওয়ার পর আমি ও ছেলের বউ ইভা তার সন্ধান করতে নূরুল আনোয়ারের নির্মাণাধীন তাকওয়া ভবনের সামনে গেলে নিরাপত্তারক্ষী আলমগীর আমাদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়নি।

অথচ সে জানতো আমার ছেলেকে ওই ভবনের একটি কক্ষে হত্যা করেছে। লাশ ভনের লিফটের হাউজের নর্দমা পানিতে রয়েছে। আমি এ পাষাণদের ফাঁসি চাই। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন নিহতের ভাই জুয়েল, ফাহিম ও বোন সুমাইয়া।

মানববন্ধনে নিহতের স্বজন ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি আফজাল হোসেন, ফজলুল হক মাদবর, লিটন, মাসুদ, জসিম, আব্দুল মজিদ, সুমন, শাহিন, আসলাম ও বাধনসহ প্রমুখ।

উল্লেখ্য, নিখোঁজের ৩ দিন পর গত মাসের ১৮ জুলাই দুপুরে নিমাইকাশারী এলাকার নির্মাণাধীন তাকওয়া ভবনের লিফটের জন্য রাখা ফাঁকা জায়গায় জমে থাকা নর্দমা পানি থেকে জনির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ১৯ তারিখে নিহতের পিতা শুক্কুর আলী বাদী হয়ে ৭ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ৩ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। 

মামলার এজাহার নামীয় আসামি আলমগীর হোসেন, জাহাঙ্গীর হোসেন ও আকাশ হোসেনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব ও পুলিশ।

গ্রেফতারের পর তারা পুলিশের কাছে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন বলে নিশ্চিত করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহিনূর আলম। গ্রেফতাররা বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে বলে জানা গেছে।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: হ মক হত য স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ স দ ধ রগঞ জ ন হত র

এছাড়াও পড়ুন:

সুনামগঞ্জে জমি থেকে ৫ কোটি টাকার বালু চুরির অভিযোগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা

সুনামগঞ্জের ধোপাজান নদের তীরের ব্যক্তিমালিকানাধীন ফসলি জমি থেকে প্রায় পাঁচ কোটি টাকার বালু চুরির অভিযোগে ‘লিমপিড ইঞ্জিনিয়ারিং’ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর আদালতে মামলাটি করেন সুনামগঞ্জ পৌর শহরের দক্ষিণ আরপিননগর এলাকার বাসিন্দা গোলাম হোসেন। বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বিশ্বম্ভরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. নাজমুল হুদা মামলাটি দায়ের ও আদালতের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার রতারগাঁও মৌজায় ধোপাজান নদের তীরে তাঁর পরিবারের ২ একর ৪০ শতক ফসলি জমি রয়েছে। ওই জমি নিয়ে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা চলমান। কিন্তু লিমপিড ইঞ্জিনিয়ারিং ধোপাজান নদে বিটি বালু উত্তোলনের অনুমতি নিয়ে তাঁর জমি থেকে জোরপূর্বক নদের পাড় কেটে ও ফসলি জমি নষ্ট করে বালু উত্তোলন করেছে।

বাদীর অভিযোগ, ২৭ অক্টোবর রাতে তিনি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লিমপিডের লোকজনকে ড্রেজার দিয়ে বালু তুলতে দেখেন। বাধা দিলে তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। তাঁর দাবি, আসামিপক্ষ তাঁর জমি থেকে প্রায় পাঁচ কোটি টাকার বালু তুলে বিক্রি করেছে। এতে তাঁর জমির একাংশ নদে বিলীন হয়ে গেছে।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জ সদর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলাজুড়ে বিস্তৃত ধোপাজান নদ। ভারত সীমান্তের ওপার থেকে নেমে আসা এই নদের ইজারা ২০১৮ সাল থেকে বন্ধ রয়েছে। ড্রেজার দিয়ে অবাধ বালু উত্তোলনের ফলে এলাকায় ব্যাপক ভাঙন ও পরিবেশগত ক্ষতি হওয়ায় সরকার ওই সময় ইজারা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়। নদটি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন।

ইজারা বন্ধ থাকলেও বিভিন্ন সময়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলেছে। বিশেষ করে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে এই নদে প্রকাশ্যে বালু লুট শুরু হয়। প্রায় আড়াই মাসে এখান থেকে প্রায় ১০০ কোটি টাকার বালু লুট হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এখনো ধোপাজান নদ থেকে নানাভাবে বালু উত্তোলন চলছে। এর মধ্যেই গত জুলাই মাসে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) লিমপিড ইঞ্জিনিয়ারিং নামের প্রতিষ্ঠানটিকে ১ কোটি ২১ লাখ ঘনফুট বিটি বালু উত্তোলনের অনুমতি দেয়। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের চলমান কাজে এ বালু ব্যবহার করা হবে। তবে ধোপাজান নদ বিআইডব্লিউটিএর আওতাভুক্ত নয়। এরপর আগস্টে জেলা প্রশাসন থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়, ধোপাজান নদে বিটি বালু নেই, এখানে রয়েছে উন্নতমানের সিলিকা বালু। এ বালু উত্তোলনের অনুমতি দিলে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে এবং অনুমোদনপ্রক্রিয়াটিও বিধিসম্মত হয়নি বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। এর পর থেকেই লিমপিড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বালু উত্তোলনের বিরোধিতা করে বিভিন্ন সংগঠন মানববন্ধন, সমাবেশ, স্মারকলিপি প্রদানসহ নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে। গত বুধবার একই দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

নদের তীরের মুসলিমপুর গ্রামের বাসিন্দা ও সুনামগঞ্জ পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সভাপতি এ কে এম আবু নাছার বলেন, নানাভাবে এই বালু তোলা বন্ধে প্রতিবাদ হচ্ছে, কিন্তু ফল হচ্ছে না। এর সঙ্গে বড় বালুখেকোরা জড়িত। তাঁরা স্থানীয় প্রভাবশালীসহ সুবিধাভোগীদের ম্যানেজ করে বালু তুলে বিক্রি করছেন। এই বালু লুট বন্ধ করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩০ জন শিক্ষক-কর্মকর্তাকে বরখাস্ত ও ৩৩ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত
  • সালমান শাহ হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারসহ ৫ দফা দাবি
  • চারঘাটে পদ্মার ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন
  • আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবি, সালমান শাহ ভক্তদের মানববন্ধন
  • পদ্মার চরে জোড়া খুনের ঘটনায় ‘কাকন বাহিনীর’ সদস্যদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন
  • ক্ষুব্ধ-বিরক্ত আঁখি বললেন, ভণ্ডামি থেকে মুক্তি চাই
  • ‘বয়স বাড়ছে, বুঝে ফেলি কে মিথ্যা বলে’—ফেসবুকে আঁখি আলমগীর
  • সুনামগঞ্জে জমি থেকে ৫ কোটি টাকার বালু চুরির অভিযোগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা
  • “উচ্চশিক্ষা স্বপ্ন নয়, বাস্তবতার পথ” নারায়ণগঞ্জে অনুপ্রেরণামূলক শিক্ষা সেমিনার অনুষ্ঠিত
  • আন্দোলনকারী ছাত্রীদের পোশাক নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে বরখাস্তের দাবি