ভারতের উত্তরাখন্ডে আকস্মিক বন্যা, নিহত ৪
Published: 5th, August 2025 GMT
ভারতের উত্তরাখন্ড রাজ্যে মেঘ বিস্ফোরণের ফলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অনেকে। পানির তোড়ে ভেসে গেছে অসংখ্য বাড়িঘর। আজ মঙ্গলবার দুপুরে উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশী জেলার ধরালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা গেছে, আকস্মিক বন্যায় সড়কের ওপর থাকা মানুষজনসহ সবকিছু ভেসে যাচ্ছে। ভয় ও আতঙ্কে মানুষজন নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে দৌড়াচ্ছে।
ভিডিওতে আতঙ্কিত এক ব্যক্তিকে ‘বাপ রে বাপ’ বলতে শোনা যায়। চোখের সামনে ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ দেখে তিনি এমন কথা বলেন।
স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গঙ্গোত্রী যাওয়ার পথে পাহাড়ি গ্রাম ধরালীতে মেঘ বিস্ফোরণের কারণে আকস্মিক বন্যা দেখা দেয়। এ সময় তীব্র স্রোতের কারণে অসংখ্য বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ও ভেসে গেছে।
গঙ্গোত্রী যাওয়ার পথে ধরালী একটি যাত্রাবিরতি স্থান। সেখানে অনেক হোটেল, রেস্তোরাঁ এবং থাকার জায়গা রয়েছে। বন্যায় সেখানেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে পাওয়া বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা গেছে, তীব্র স্রোতের সঙ্গে কাদামাটি ভরা পানি পাহাড় বেয়ে নদীর তীরে থাকা বাড়িঘরের দিকে ধেয়ে যাচ্ছে।
উত্তরাখন্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর ধামি এক্সে (সাবেক টুইটার) লিখেছেন, ‘উত্তরকাশীর ধরালী এলাকায় বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর অত্যন্ত দুঃখজনক ও মর্মান্তিক। এসডিআরএফ, এনডিআরএফ, জেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট অন্য দলগুলো যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে নিয়োজিত রয়েছে। এ বিষয়ে আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি এবং নিবিড়ভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। সবার নিরাপত্তার জন্য আমি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছি।’
সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উত্তরাখন্ডের মাতলি এলাকায় অবস্থানরত ইন্দো-তিব্বত সীমান্ত পুলিশের (আইটিবিপি) ১২তম ব্যাটালিয়নের ১৬ সদস্যের একটি দল ধরালী পৌঁছেছে। একই ব্যাটালিয়নের ইউনিটকে দ্রুত ওই এলাকায় পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের নদীর তীর থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার অনুরোধ জানিয়েছে সরকার। পাশাপাশি শিশু ও গবাদিপশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়ালটন বাংলাদেশের গর্বের প্রতিষ্ঠান, বললেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী
“ওয়ালটন হেডকোয়ার্টার্সে নিজস্ব ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্টসে ৫০ হাজারেরও বেশি ধরনের পণ্য উৎপাদন করা হচ্ছে। ওয়ালটন যে কত বড় কর্মযজ্ঞ পরিচালনা করছে, এখানে না এলে তা জানতে পারতাম না। তাদের এত বিশাল কর্মযজ্ঞ দেখে আমরা অত্যন্ত অভিভূত। ওয়ালটন এখন বাংলাদেশের এক গর্বের প্রতিষ্ঠান।”
গত শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) গাজীপুরের চন্দ্রায় দেশের সর্ববৃহৎ ইলেকট্রনিক্স, ইলেকট্রিক্যাল, ইন্ডাস্ট্রিয়াল সলিউশনস ও প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদন প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন হেডকোয়ার্টার্স পরিদর্শন শেষে এমন মন্তব্য করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আব্দুল হাফিজ ও ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী।
আরো পড়ুন:
ওয়ালটন লিফটসহ অন্যান্য পণ্য উৎপাদন প্ল্যান্টস পরিদর্শন করলেন ডেভেলপাররা
বাংলাদেশ বিজনেস অ্যাওয়ার্ডে আবারো বর্ষসেরা ওয়ালটন
এদিন তারা ওয়ালটন হেডকোয়ার্টার্সে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন অত্যাধুনিক প্রযুক্তির বিভিন্ন পণ্যের প্রোডাকশন প্ল্যান্টস ঘুরে দেখেন। পরিদর্শনকালে তারা ইলেকট্রিক্যাল, ইলেকট্রনিক্স ও হাই-টেক পণ্য উৎপাদনে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন ও রপ্তানি কার্যক্রম সম্পর্কে সম্যক ধারণা এবং অভিজ্ঞতা লাভ করেন।
এর আগে ওয়ালটন হেডকোয়ার্টার্সে পৌঁছালে তাদেরকে স্বাগত জানান ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম মাহবুবুল আলম।
হেডকোয়ার্টার্স প্রাঙ্গণে অতিথিরা প্রথমে ওয়ালটনের বিভিন্ন পণ্যের উৎপাদন প্রক্রিয়ার ওপর নির্মিত ভিডিও ডকুমেন্টারি উপভোগ করেন। এরপর তারা ওয়ালটনের সুসজ্জিত প্রোডাক্টস ডিসপ্লে সেন্টারসহ সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ফ্রিজ, ভিআরএফ এসি, মোল্ড অ্যান্ড ডাই ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্টসসহ সারফেস মাউন্টিং টেকনোলজি বা এসএমটি প্রজেক্ট ঘুরে দেখেন।
এরপর তারা ওয়ালটনের তৈরি বিভিন্ন পণ্যে সুসজ্জিত ডিসপ্লে সেন্টার প্রত্যক্ষ করেন। পরে অতিথিরা দিনব্যাপী ওয়ালটনের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ফ্রিজ, ভিআরএফ এয়ার কন্ডিশনার, সারফেস মাউন্টিং টেকনোলজি বা এসএমটি প্রজেক্ট ও মোল্ড এবং ডাই পণ্যের ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্ট পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শন শেষে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, “সরকারের একার পক্ষে দেশের শিল্প, আর্থ-সামাজিক এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে বেসরকারি খাতের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। সরকারি-বেসরকারি খাতের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমাদের উন্নয়ন কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে হবে। এজন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সরকারের যোগাযোগ বাড়াতে হবে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সব ধরনের সহায়তা প্রদানে সরকারও প্রস্তুত। এভাবে সরকার ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা দ্রুত উন্নত দেশে রূপান্তরিত হতে সক্ষম হব।”
ওয়ালটনের তৈরি মাদারবোর্ড দেখছেন প্রধান উপদেষ্টার দুই বিশেষ সহকারী।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আব্দুল হাফিজ বলেন, “এই প্রথম ওয়ালটনে এলাম। ওয়ালটন হেডকোয়ার্টার্সে এসে আমাদের দেশীয় ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে ব্যাপক ধারণা ও অভিজ্ঞতা লাভ করার সুযোগ পেলাম। দেশের উন্নয়নে ওয়ালটন অভাবনীয় কাজ করে চলছে। ওয়ালটনের প্রোডাকশন প্ল্যান্টগুলো ঘুরে দেখার পর ওয়ালটন সম্পর্কে আমাদের ধারণা সম্পূর্ণ বদলে গেল। বিভিন্ন উচ্চ প্রযুক্তি সম্পন্ন পণ্য উৎপাদন করে ওয়ালটন যে অতি দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছে তা সত্যি প্রশংসনীয়। যা আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়।”
হেডকোয়ার্টার্স পরিদর্শনকালে অতিথিদের সঙ্গে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন হাই-টেকের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর (এএমডি) ইউসুফ আলী, ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের এএমডি লিয়াকত আলী, হেডকোয়ার্টার্সের হেড অব অ্যাডমিন মেজর (অব.) জাহিদুল হাসান প্রমুখ।
ঢাকা/মাহফুজ/সাইফ