চাঁদপুর সিটি কলেজের একাডেমিক স্বীকৃতি স্থগিত, ভর্তি ও পাঠদান বন্ধের নির্দেশ
Published: 12th, August 2025 GMT
চাঁদপুর সিটি কলেজের একাডেমিক স্বীকৃতি স্থগিত করে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড। ফলে সেখানে ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীদের পার্শ্ববর্তী বোর্ড অনুমোদিত স্কুল-কলেজে স্থানান্তরের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
গতকাল সোমবার বিকেলে চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের শিক্ষা শাখায় কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক নুরুন্নবী আলম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, কলেজটি নিজস্ব জমিতে স্থানান্তর না হওয়া, এনটিআরসিএ সনদবিহীন শিক্ষক দিয়ে পাঠদান, অসন্তোষজনক ফল, পর্যাপ্ত শিক্ষার্থী না থাকা এবং ভবনের বিপুল ভাড়া বকেয়া থাকায় মালিক কর্তৃক তালাবদ্ধ করে দেওয়ার মতো সমস্যার কারণে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এসব বিষয় তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন, পাঠদান ও একাডেমিক স্বীকৃতি প্রদান নীতিমালা-২০২২ (সংশোধিত ২০২৩)-এর অনুচ্ছেদ ১১ অনুযায়ী কলেজটির পাঠদানের অনুমতি ও স্বীকৃতি স্থগিত করা হয়েছে।
চাঁদপুর শহরের ওয়্যারলেস এলাকায় ২০১১ সালে সহিদুল ইসলাম কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১৫ সালে কলেজের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি হন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী। ২০২৪ সালে কলেজটি এমপিওভুক্ত হয়। ওই বছরের ১৮ আগস্ট প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ সহিদুল ইসলাম পদত্যাগ করেন। বর্তমান অধ্যক্ষ মোজাহারুল ইসলামসহ কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে তাঁকে জোর করে পদত্যাগ করানোর অভিযোগ ওঠে। তাঁদের বিরুদ্ধে সহিদুল ইসলাম কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে অভিযোগ করেছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ল ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ থাকে, তাহলে নিয়ে আসেন না কেন: দুদক চেয়ারম্যান
দুর্নীতির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন। তিনি বলেন, ‘উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ থাকে, সেই অভিযোগ যদি সুনির্দিষ্ট হয়, তাহলে আপনারা (সাংবাদিক) নিয়ে আসেন না কেন।’
আজ মঙ্গলবার সকালে রংপুরে দুদকের সমন্বিত জেলা ও বিভাগীয় কার্যালয়ের ভবন নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ আবদুল মোমেন এসব কথা বলেন।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের যে বিধিবদ্ধ আইন, তাতেও ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। একটা ব্যাপার আমাদের নিশ্চিত করতে হবে, আমরা যে অভিযোগ করব, তা যেন সুনির্দিষ্ট হয়। আমরা যদি বলে থাকি, তিনি কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন, কোথা থেকে করেছেন, কীভাবে করেছেন, এই অংশগুলো যদি প্রমাণ করতে না পারি, তাহলে শেষ পর্যন্ত সেই অভিযোগ টিকবে না। এমনকি উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ থাকে, সেই অভিযোগ যদি সুনির্দিষ্ট হয়, তাহলে আপনারা (সাংবাদিক) নিয়ে আসেন না কেন।’
সম্প্রতি রাজধানীতে এক সেমিনারে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এ বি এম আবদুস সাত্তার অভিযোগ করেন, অন্তর্বর্তী সরকারের আটজন উপদেষ্টার ‘সীমাহীন দুর্নীতি’র প্রমাণ নিজের কাছে রয়েছে। এই উপদেষ্টাদের সঙ্গে যোগাযোগ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ হয় না, বদলিও হয় না। তবে তিনি উপদেষ্টাদের নাম বলেননি।
তবে এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এক বিবৃতিতে সরকার তাঁর (সাবেক সচিব) কাছে সব প্রমাণ যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে আহ্বান জানিয়েছে।
এ বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেন, ‘বিষয়টি পত্রিকায় এসেছে। সেটি আমাদের চোখে পড়েছে। এই সরকার সম্পর্কে ধারণা পাওয়া দরকার, এটা রাজনৈতিক সরকার নয়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই সরকারের নেতৃত্বে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি একেবারেই দুর্নীতির বিপক্ষে একজন মানুষ। এটা যদি তাঁর উপদেষ্টা পরিষদের কেউ হন, সে ক্ষেত্রেও তিনি বিন্দুমাত্র ছাড় দিতে রাজি নন।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুদকের মামলার বিষয়ে প্রশ্ন করেন একজন সাংবাদিক। এ সম্পর্কে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আমাদের এখানে কয়েকটি মামলা চলমান। আরও কয়েকটি বিষয় তদন্তাধীন। তদন্ত করে শেষ পর্যন্ত যদি প্রমাণিত হয়, আমরা মামলা-মোকদ্দমায় চলে যাব।’
সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোতে দুদকের অভিযান প্রসঙ্গে মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অভিযান করছি। বিশেষ করে সেবা প্রদানকারী যেসব প্রতিষ্ঠানে সেবা প্রদানকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকে সেবা গ্রহিতাদের। আমরা অভিযান করছি, যাতে এই অভিযোগগুলো না হয়। ‘
পরে দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে দুর্নীতি প্রতিরোধ ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সরকারি কর্মকর্তাদের ও কর্মচারীদের ভূমিকা শীর্ষক মতবিনিময় সভায় যোগ দেন।
রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার শহিদুল হকের সভাপতিত্বে সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল। উপস্থিত আছেন দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন, পুলিশের রংপুরের রেঞ্জের ডিআইজি আমিনুল ইসলাম, পুলিশ কমিশনার মজিদ আলী, পুলিশ সুপার আবু সাইম প্রমুখ।