ঠিকাদারের সঙ্গে বিতণ্ডার জেরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রকৌশলীকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে কর্তৃপক্ষ। গতকাল সোমবার বরখাস্তের এ আদেশ দেওয়া হয়। পরে আজ মঙ্গলবার বিষয়টি জানাজানি হয়।

বরখাস্ত হওয়া ওই প্রকৌশলীর নাম মাহফুজুর রহমান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ঠিকাদারি কাজের তত্ত্বাবধান করতেন। এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি কমিটিও করেছে কর্তৃপক্ষ। এতে বন ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক আকতার হোসেনকে আহ্বায়ক করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, গত মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের আবাসিক শহীদ ফরহাদ হোসেন হলে গভীর নলকূপ স্থাপন নিয়ে ঠিকাদার নূরুল কবির তালুকদারের সঙ্গে মাহফুজুর রহমানের বিতণ্ডা হয়। নূরুল কবির স্থানীয় হাটহাজারী উপজেলা যুবদলের সদস্যসচিব। এ ঘটনায় নূরুল কবির চলতি মাসের ১ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারকে লিখিত অভিযোগ দেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেয়।

প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমানের অভিযোগ, তিনি ঠিকাদারকে শহীদ ফরহাদ হোসেন হলের গভীর নলকূপের পানির নমুনা পরীক্ষার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। কারণ, এ নলকূপের পানি ব্যবহারের কারণে অনেকের শরীরে চর্মরোগ দেখা দিয়েছিল। এসব নিয়ে ওই ঠিকাদারের সঙ্গে তাঁর বিতণ্ডা হয়। পরে ওই ঠিকাদার নিজেকে স্থানীয় এক বিএনপি নেতার অনুসারী হিসেবে পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন হুমকি দেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করে বিষয়টি সমাধান হয়। এরপরও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁকে বহিষ্কার করেছে।

জানতে চাইলে মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘ঠিকাদার নূরুল কবির আমাকে রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। আমি কোনো ভুল করিনি। আমি আমার পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছি।’

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন ঠিকাদার নূরুল কবির। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান অকথ্য ভাষায় আমাকে গালাগাল করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তিনি কোনো ধরনের হুমকি দেননি। রাজনৈতিক পরিচয়ের কোনো ক্ষমতাও দেখাননি।’

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘মাহফুজুর রহমানের বিরুদ্ধে গুরুতর লিখিত অভিযোগ এসেছে। এ কারণে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। কোনো রাজনৈতিক প্রভাব এতে ছিল না। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বরখ স ত

এছাড়াও পড়ুন:

লক্ষ্মীপুরে কাঠমিস্ত্রির রহস্যজনক মৃত্যু, হত্যার অভিযোগ পরিবারের 

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে আরিফ হোসেন (৪০) নামের এক যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। আরিফের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় অজ্ঞাতদের আসামি করে রায়পুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন নিহতের বোন নাসরিন আক্তার।

নিহতের স্ত্রী নাসিমা আক্তার বলেছেন, তিন দিন আগে শনিবার রাতে আরিফের মোবাইল ফোনে কল আসে। কিন্তু, তিনি ঘর থেকে বের হননি। পরে কে যেন বাইরে থেকে তাকে ডাক দিয়েছে। তখন আরিফ বের হয়ে যান, পরে আর ফিরেননি। পরদিন সকালে স্থানীয়রা বাড়ির অদূরে একটি গভীর নলকূপের পাশে তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। 

নিহতের মেয়ে মুন্নি আক্তার বলেছেন, আমার বাবার মাথায়, ডান হাতে আঘাতের চিহ্ন ছিল। তার পা ভাঙা ছিল। কে যেন বাবাকে ডেকে নিয়েছে। 

আরিফ কাঠমিস্ত্রি ছিলেন। তিনি রায়পুর পৌরসভার গোলাম রহমান সর্দার বাড়ির মানিক মিয়ার ছেলে। 

নিহতের ভাই শরীফুল ইসলাম ও বোন নাসরিন আক্তার জানিয়েছেন, বাড়ির সামনে কবরস্থানের জমি নিয়ে রায়পুর পৌরসভার সাবেক নারী কাউন্সিলর শামছুন্নাহার লিলিদের সঙ্গে তাদের বিরোধ আছে। এর জের ধরে ১০ অক্টোবর লিলির নেতৃত্বে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে শরীফুলের মাথায় জখম হয়। এ ঘটনায় লিলিরা আবার থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় তারা (শরীফুল ও তার পরিবারের সদস্যরা) জামিন পান। এরপর প্রকাশ্যে হুমকি দেন লিলির পক্ষের লোকজন। লিলিরা পরিকল্পিতভাবে শনিবার (১৮ অক্টোবর) রাতে ডেকে নিয়ে আরিফকে হত্যা করে মরদেহ ফেলে রেখে যায়। পরদিন রোববার (১৯ অক্টোবর) সকালে তার মরদেহ দেখে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। বিকেলে নাসরিন বাদী হয়ে রায়পুর থানা মামলা দায়ের করেন।  

নাসরিন আক্তার বলেছেন, আমার ভাই শরীফের মাথায় রক্তাক্ত জখম করেছে লিলি ও মামুনরা। এরপর তারা মামলা দিয়েছে আমাদের নামে। পরে জামিন পাওয়ায় তারা আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। আমাদেরকে হুমকিও দিয়েছে। তারাই পরিকল্পিতভাবে আমার ভাই আরিফকে হত্যা করেছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, প্রতিবশী লিলিদের সঙ্গে জমি নিয়ে আরিফদের বিরোধ আছে। কিছুদিন আগেও তাদের মধ্যে মারামারি হয়েছে। আরিফের মৃত্যু রহস্যজনক। দ্রুত মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করা প্রয়োজন।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে সাবেক কাউন্সিলর শামছুন্নাহার লিলির মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। বাড়িতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। 

লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) অরুপ পাল বলেছেন, আরিফের মরদেহের ডান পায়ের হাড়ে একাধিক অংশ ভাঙা ছিল। তবে, পায়ে দৃশ্যমান কোনো আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়নি। কপালের ডান পাশে চোখের কাছে থেঁতলানো জখম ছিল। 

রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া বলেছেন, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে। পরিবারের পক্ষ থেকে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।

ঢাকা/জাহাঙ্গীর/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • লেমন কার্ড পাভলোভার রেসিপি
  • ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হত্যাকাণ্ডে বর্ষাসহ তিনজনের স্বীকারোক্তি
  • শেষ বিকেলের দুই আঘাতে এগিয়ে গেল পাকিস্তান
  • লক্ষ্মীপুরে কাঠমিস্ত্রির রহস্যজনক মৃত্যু, হত্যার অভিযোগ পরিবারের 
  • ‘তুমি না মরলে আমি মাহীরের হব না’, বলেন বর্ষা
  • শান মাসুদের ব্যাটে প্রথম দিন এগিয়ে পাকিস্তান
  • মান্ধানা সেঞ্চুরি পাননি, ভারতও জেতেনি, ৪ রানের জয়ে ইংল্যান্ড সেমিফাইনালে
  • সৈয়দ আব্দুল হাদীর জীবনের গান
  • ২২৩ দিন পর ভারতের জার্সিতে ফিরে ০ রানে আউট কোহলি