ইসলামে প্রতিটি নামাজের সময় সূর্যের গতির ওপর নির্ভর করে নির্ধারিত। আসরের নামাজের সময় শুরু ও শেষ—দুটোই সূর্যের অবস্থান দেখে নির্ধারিত হয়। আসর নামাজের গুরুত্ব কোরআনে বিশেষভাবে উল্লেখ আছে, ‘সূর্য হেলে পড়ার সময় থেকে রাতের অন্ধকার পর্যন্ত নামাজ কায়েম করো।’ (সুরা ইসরা, আয়াত: ৭৮)
আসরের নামাজের শুরু সময়আসর নামাজের সময় শুরু হয়, যখন কোনো বস্তুর ছায়া তার প্রকৃত দৈর্ঘ্যের সমান হয় (জোহরের ছায়া বাদে)। অর্থাৎ যখন সূর্য পশ্চিম দিকে ঢলে পড়ে এবং ছায়া বাড়তে শুরু করে, তখন আসর সময় শুরু হয়।
হাদিসে এসেছে, ‘আসর নামাজের সময় সেই সময় পর্যন্ত থাকে, যতক্ষণ না সূর্যের রং হলুদ হয়ে আসে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৬১৩)
আসর নামাজের শেষ সময়আসর নামাজের দুটি সময়সীমা আছে:
ক.
খ. মাকরুহ সময়, অর্থাৎ সূর্যাস্তের কাছাকাছি সময়। যখন সূর্যের রং ফ্যাকাশে বা লালচে হয়ে যায়, তখন পর্যন্ত আসর নামাজ আদায় করা যায়, কিন্তু এটি মাকরুহ সময়।
আরও পড়ুনমাগরিবের নামাজের সময় কতক্ষণ থাকে০৫ অক্টোবর ২০২৫রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সূর্য হলুদ হয়ে যাওয়ার আগে আসরের এক রাকাত পায়, সে আসর নামাজ পেয়ে গেছে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫৭৯)
এর মানে সূর্যাস্তের ঠিক আগে পর্যন্ত (অর্থাৎ সূর্যের ফ্যাকাসে আলো থাকা পর্যন্ত) নামাজ আদায় বৈধ, কিন্তু বিলম্ব করা অনুচিত।
ফিকহ অনুযায়ী পার্থক্যবিভিন্ন মাজহাব আসরের শুরু সময় নিয়ে সামান্য ভিন্নমত পোষণ করে।
১. হানাফি মাজহাবের মতে, আসরের শুরু সময় হলো যখন বস্তুর ছায়া তার প্রকৃত দৈর্ঘ্যের দ্বিগুণ হয়, আর শেষ সময় সূর্যাস্তের আগপর্যন্ত।
২. শাফেয়ি, মালিকি, হাম্বলি মাজহাবের মতে, আসরের শুরু সময় হলো যখন বস্তুর ছায়া তার এক গুণ হয় আর শেষ সময় সূর্যাস্তের আগপর্যন্ত। (আল-মাওসুআহ আল-ফিকহিয়্যাহ, কুয়েত, ২৭/৭৪, ২০০১)
বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার অধিকাংশ আলেম হানাফি মাজহাব অনুসারে নামাজের সময়সূচি নির্ধারণ করেন। তাই অনেক ক্যালেন্ডারে আসরের সময় একটু পরে দেখা যায়।
আরও পড়ুনতাহাজ্জুদ নামাজের সঠিক সময় কখন হয়০৪ অক্টোবর ২০২৫ঘড়ির সময়আধুনিক জ্যোতির্বিদ্যার হিসাবে, আসর নামাজের সময় সূর্যের উচ্চতা (solar altitude) প্রায় ৪৫ থেকে শূন্যের মধ্যে পড়ে। সূর্য যখন পশ্চিম আকাশে ঢলে যায় এবং ছায়া বাড়ে, তখন সূর্যের রশ্মি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ভেঙে ছড়িয়ে পড়ে, ফলে আলো ধীরে ধীরে নরম হয়।
বাংলাদেশে আসর নামাজের সময় সাধারণত—
গ্রীষ্মে: বেলা ৩:৩০ থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিবর্তিত হয়
শীতে: বেলা ৩:০০ থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিবর্তিত হয়
সূর্যাস্তের সময় অনুযায়ী সামান্য পরিবর্তিত হয়। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, সালাতের সময়সূচি ২০২৪ সংস্করণ, ঢাকা)
আসর নামাজের শেষ সময় সূর্যাস্তের ঠিক আগপর্যন্ত, তবে সূর্য হলুদ হওয়ার আগে পড়া উত্তম। নবী করিম (সা.) নামাজে বিলম্ব করাকে অপছন্দ করতেন।
আরও পড়ুনচাশতের নামাজের ওয়াক্ত কখন হয়১৬ আগস্ট ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আসর ন ম জ র সময় আসর ন ম জ র শ ষ ন ম জ র সময় স র ন ম জ র সময় সময় স র য র শ ষ সময় অর থ ৎ আসর র
এছাড়াও পড়ুন:
জাতীয় নির্বাচনের তফসিল: বিটিভি-বেতারে সিইসির ভাষণ রেকর্ড ১০ ডিসেম্বর
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণা এবং প্রচারের লক্ষ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের ভাষণ আগামী ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বাংলাদেশ বেতারে রেকর্ড করা হবে।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সোমবার (৮ ডিসেম্বর) এক ব্রিফিংয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ এ তথ্য জানান।
আরো পড়ুন:
‘বিএনপি ক্ষমতায় গেলে নারীদের জন্য ফ্যামিলি কার্ড চালু হবে’
কুষ্টিয়ায় আমীর হামজার নির্বাচনী গণ-মিছিল ও সমাবেশ
তিনি বলেন, “আগামী ১০ ডিসেম্বর সিইসি বিটিভি ও বেতারের জন্য তফসিল-সংক্রান্ত একটি ভাষণ রেকর্ড করবেন। ভাষণের বিষয়বস্তু এবং রেকর্ডিংয়ের সুনির্দিষ্ট সময় সিইসি নির্ধারণ করবেন।” খবর বাসসের।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, রেকর্ডিংয়ের তারিখ নিশ্চিত হলেও ভাষণের বিষয়বস্তু বা সময় সম্পর্কে এখনো সচিবালয় অবহিত নয়। সিইসি বিষয়টি চূড়ান্ত করলেই তা গণমাধ্যমকে জানানো হবে। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কমিশনের সাক্ষাতের সময়সূচিও এখনো নির্ধারণ হয়নি, তবে আগামীকাল তা জানানো হতে পারে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
তফসিল ঘোষণার পর দেশে যারা পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দেওয়ার যোগ্য, তাদের নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পর্কেও ইসি সচিব বিস্তারিত তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “তফসিল ঘোষণার পর ১৫ দিনের মধ্যে সরকারি চাকরিজীবী এবং আইনি হেফাজতে থাকা ব্যক্তিদের পোস্টাল ব্যালটের জন্য নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে। অন্যদিকে পুলিশ, সেনাবাহিনী, আনসারসহ যারা নির্বাচনি দায়িত্বে পরে মাঠে ডেপ্লয়মেন্ট পাবেন, তাদের নিবন্ধন সময়সীমা পরবর্তীতে নির্ধারিত হবে।”
তিনি জানান, এসব ব্যতিক্রম ছাড়া তফসিল ঘোষণার পর ১৫ দিনের মধ্যেই সাধারণ যোগ্য ভোটারদের নিবন্ধন শেষ করতে হবে।
সিইসির ভাষণ রেকর্ডিংয়ের জন্য সোমবার বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারকে চিঠি পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট উপলক্ষ্যে সিইসি জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন এবং ভাষণটি বিটিভি ও বেতারে একযোগে প্রচার করা হবে। রেকর্ডিংয়ের সময় চূড়ান্ত হওয়ার পর বিটিভির একটি রেকর্ডিং টিমকে তাৎক্ষণিকভাবে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে পাঠানোর প্রস্তুতিও রাখতে বলা হয়েছে। রেকর্ডকৃত ভাষণ নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে প্রচারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধও করা হয়েছে।
এদিকে, রবিবার (৭ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশনের দশম সভা শেষে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ সাংবাদিকদের জানান, খুব শিগগিরই জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং গণভোটের তফসিল ঘোষণা করা হবে। তফসিল ঘোষণার আগে রেওয়াজ অনুযায়ী কমিশন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে এবং সিইসির বক্তব্য রেকর্ড করার জন্য বিটিভি ও বেতারে চিঠি পাঠানো হবে। তফসিল-পূর্ব বেশ কিছু কার্যক্রম ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে বলেও তিনি জানান।
ঢাকা/এসবি