পটুয়াখালীতে বরফ কলের গ্যাস ছড়িয়ে অসুস্থ ২০
Published: 23rd, October 2025 GMT
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার মহিপুরে গাজী আইস প্ল্যান্ট নামে একটি বরফ কলের কর্নেসার পাইপ লিকেজ থেকে এ্যামোনিয়া গ্যাস ছড়িয়ে অন্তত ২০ জন অসুস্থ হয়েছেন। তাদের মধ্যে পাঁচজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার রাত ২টার দিকে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) সকালে কলাপাড়া ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন অফিসার আবুল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
খাগড়াছড়ি হাসপাতালে ২০ দিনে ১২ শিশুর মৃত্যু
একনেকে মানসিক হাসপাতালের উন্নয়নে প্রকল্প পাসে খুশি পাবনার মানুষ
হাসপাতালে ভর্তি রোগীরা হলেন- সুজাউদ্দিন (৫০), মো.
ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাতে হঠাৎ বরফ কলের বাইরের একটি কর্নেসার পাইপ লিকেজ হয়। মুহূর্তেই ওই এলাকায় গন্ধ ছড়িয়ে পরে। বরফ কলের আশেপাশে থাকা অনেকের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। স্থানীয়রা অসুস্থ হয়ে পড়া কয়েকজনকে উদ্ধার করে কুয়াকাটার তুলাতলীর হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে থেকে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা গুরুতর পাঁচজনকে কলাপাড়া হাসপাতালে নিয়ে যান। তারা বরফ কলের মধ্যেই ঘুমিয়ে ছিলেন।
অসুস্থ সুজাউদ্দিন বলেন, “আমরা সবাই জেলে। আমাদের ট্রলার খাপড়াভাঙ্গা নদীতে নোঙ্গর করা ছিল। আমাদের অনেকে বরফ কলের মধ্যেই ঘুমিয়ে ছিলেন। গ্যাসের গন্ধে শাসকষ্ট শুরু হওয়ায় আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ি।”
তিনি বলেন, “রাত হওয়ায় বেশি মানুষ অসুস্থ হননি। শ্বাস নিতে প্রচুর সমস্যা হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি আছি।”
কলাপাড়া ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন অফিসার আবুল হোসেন বলেন, “অ্যামোনিয়া মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ গ্যাস। এ গ্যাস ছড়িয়ে পড়ার পর আমরা অসুস্থদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। এর আগেও আরো কয়েকটি বরফ কলে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে।”
হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, পাঁচজনই শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হয়েছেন। রাতে তাদের অবস্থা গুরুতর ছিল। চিকিৎসায় তাদের অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। এখন সবাই শঙ্কামুক্ত।
ঢাকা/ইমরান/মাসুদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সম্পূরক বৃত্তির দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
সম্পূরক বৃত্তির দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করেছেন ‘আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন’ পরিচালিত আবাসন প্রকল্পে থাকা শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বেসরকারি এই প্রকল্পকে ‘হল’ হিসেবে দেখিয়ে আবাসন বৃত্তি থেকে তাঁদের বঞ্চিত করছে, এমন অভিযোগে আজ বুধবার দুপুরে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের ফটক অবরোধ করে অবস্থান নেন।
এর আগে দুপুর নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাত্তরের গণহত্যা ভাস্কর্য চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, বিজ্ঞান অনুষদ প্রাঙ্গণ ঘুরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে শেষ হয়।
এ সময় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। তাঁদের স্লোগানের মধ্যে ছিল: ‘আস–সুন্নাহে বৃত্তি দে, ভুজুংভাজুং ছেড়ে দে’, ‘এক দুই তিন চার, বৃত্তি আমার অধিকার’ এবং ‘আস–সুন্নাহে বৃত্তি দে, নইলে গদি ছেড়ে দে’।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তি নীতিমালায় আস–সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের মেধাবী প্রকল্পকে ‘হল’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ফলে তাঁরা আবাসন বৃত্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাঁরা বলছেন, প্রকল্পটি বেসরকারি হওয়ায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব হল না হওয়ায় তাঁদের বৃত্তি থেকে বাদ দেওয়া যাবে না।
বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হাবিবুল বাশার সুমন বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের জন্য কোনো হল নেই। আস–সুন্নাহ ফাউন্ডেশন নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান তাদের মেধাবী প্রজেক্ট নামের একটি প্রকল্প আমাদের জন্য করেছে। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যত কোনো হল নয়।’
শিক্ষার্থী সুমন আরও বলেন, ‘বৃত্তি নীতিমালায় সুকৌশলে আস–সুন্নাহ প্রজেক্টকে হল হিসেবে উপস্থাপন করে বৃত্তি থেকে আমাদের বাদ দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমরা এ পাঁয়তারাকে রুখে দিতে প্রতিবাদ করছি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘আস–সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের মেধাবী প্রকল্প থেকে যখন আগামী জানুয়ারিতে শিক্ষার্থীরা বের হয়ে যাবে, তখন তাদের আশ্রয়স্থল কোথায়? আমাদের দাবি মানা না হলে আমরা আরও কঠিন আন্দোলন করব।’
শিক্ষার্থীরা প্রায় বিকেল চারটা পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের ফটক অবরোধ করে থাকেন। পরে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে করে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন পরিচালিত আবাসন প্রকল্পে ফিরে যান।
জানা যায়, আস–সুন্নাহ ফাউন্ডেশন পরিচালিত মেধাবী প্রকল্পের আওতায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩, ২০২৩-২৪ এবং ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের প্রায় ৭০০ শিক্ষার্থীকে আবাসন সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। সেখানে শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি দিয়ে থাকেন। এই প্রকল্পে থাকা–খাওয়ার ব্যবস্থার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের দক্ষতা উন্নয়নে বিভিন্ন প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা রয়েছে।