ঢাকা বা ঢাকার বাইরে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় কোনো অগ্রগতি খুঁজে পাননি বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। তিনি বলেন, ঢাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু অনেক বেশি। অপর দিকে শহরের বাইরে মহাসড়কগুলোতে দুর্ঘটনার সংখ্যা ও মৃত্যু বেশি।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ঢাকা রোড ট্রাফিক সেফটি প্রজেক্ট’–এর এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিএমপি কমিশনার এ কথাগুলো বলেন। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ও জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) উদ্যোগে ডিআরএসপি নামের একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এই প্রকল্পের প্রচারণা নিয়ে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে ডিএমপি কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী বলেন, এখানে বেশির ভাগ সড়ক ব্যবহারকারী অসচেতন। মাত্র ১০০ মিটার দূরে একটি পদচারী–সেতু আছে, তবুও পথচারীদের নিয়ম ভঙ্গ করে রাস্তা পার হতে দেখা যায়। সিটি করপোরেশনের রাস্তা তদারকির দায়িত্বে থাকা বিভাগও উদাসীন। ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি কাঠামো তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি। ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা কার্যকর করতে গণসচেতনতা সৃষ্টি করা প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশে জাইকার চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ তোমোহিদে ইচিগুচি বলেন, প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ ঢাকার রাস্তায় পা রাখেন, যাঁদের মধ্যে শিশুরা স্কুলে যায়, কর্মজীবীরা কাজে যান। কিন্তু সড়কে নিরাপত্তা না থাকায় বহু মানুষের জন্য এই যাত্রা ঝুঁকিপূর্ণ। ঢাকাকে নিরাপদ করতে একটি ‘প্রতিশ্রুতিমূলক’ প্রকল্পের মাধ্যমে ডিএমপির সঙ্গে জাইকা নিবিড়ভাবে কাজ করছে।

সেমিনারে জানানো হয়, ২০২২ সালের মার্চ থেকে জাইকার সহযোগিতায় ডিআরএসপি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে ডিএমপি। রাজধানীর সড়ক নিরাপত্তা উদ্যোগ বাস্তবায়নের সক্ষমতা উন্নত করা, দুর্ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করা এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা ছিল প্রকল্পের প্রধান লক্ষ্য।

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) জিল্লুর রহমান। তিনি বলেন, সড়ক নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয়। সরকার, উন্নয়ন সহযোগী, চালক, পথচারী থেকে শুরু করে নগর পরিকল্পাবিদ, শিক্ষাবিদসহ সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সবার সহযোগিতায় একটি সুরক্ষিত, সুশৃঙ্খল এবং নিরাপদ ট্রাফিক পরিবেশ তৈরি করা সম্ভব হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ট র ফ ক ব যবস থ প রকল প ড এমপ সহয গ

এছাড়াও পড়ুন:

অস্ট্রেলিয়ায় সামাজিক মাধ্যমে বন্ধ হয়ে গেল ১৬ বছরের কম বয়সীদের লাখো অ্যাকাউন্ট

অস্ট্রেলিয়ায় আজ বুধবার দিনের প্রথম প্রহরে কার্যকর হয়েছে নতুন একটি আইন। দেশটিতে এর আওতায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ১৬ বছরের কম বয়সীদের লাখো অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে গেছে।

শিশু-কিশোরদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কেন্দ্রিক সহিংসতা ও আসক্তির হাত থেকে রক্ষা করতে নতুন এ আইন কার্যকর করেছে অস্ট্রেলিয়া সরকার।

নতুন এ আইনের আওতায় অস্ট্রেলিয়ার ১৬ বছরের কম বয়সী শিশু–কিশোরেরা এখন থেকে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, এক্স, স্ন্যাপচ্যাট, টিকটক, ইউটিউবের মতো জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোয় নিজেরা অ্যাকাউন্ট খুলতে এবং সেসব ব্যবহার করতে পারবে না।

২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ এ আইন প্রণয়নের ঘোষণা দেন। পরে সেটি দেশটির পার্লামেন্টে পাস হয়। সে সময় অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দেন, আইন লঙ্ঘন করলে শিশু–কিশোরদের কোনো ধরনের শাস্তি দেওয়া হবে না।

ব্যবহারকারীর বয়স অন্তত ১৬ বছর—এটা নিশ্চিত করার জন্য যুক্তিসংগত ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব প্ল্যাটফর্মের। কাজেই সবচেয়ে গুরুতর বিচ্যুতির জন্য তাদের সর্বোচ্চ ৪ কোটি ৪৯ লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলার (৩ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার) জরিমানা দিতে হবে।

আইনটির সমর্থকেরা বলছেন, এটি শিশুদের আসক্তিকর অ্যালগরিদমের হাত থেকে বাঁচতে সাহায্য করবে, যে অ্যালগরিদম সহিংসতা, পর্নোগ্রাফি ও ভুল তথ্যের মতো ক্ষতিকর কনটেন্ট তাদের সামনে এনে দেয়।

এমনও বলা হচ্ছে, এটি সাইবার হেনস্তা (বুলিং) এবং অনলাইনে শিশুদের যৌন ও অন্যান্য শোষণ কমাবে। এ ছাড়া এটি শিশুদের বাইরে খেলতে বাধ্য করবে, তাদের ঘুম ভালো হবে, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ভালো হবে।

আরও পড়ুনঅস্ট্রেলিয়ায় ১৬ বছরের কম বয়সীদের জন্য নিষিদ্ধ হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার০৭ নভেম্বর ২০২৪

অন্যদিকে নতুন আইনের সমালোচনাকারীদের মতে, নিষেধাজ্ঞা কাজে প্রয়োগ করবে যে প্রযুক্তি, তার নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে উদ্বেগ আছে। পাশাপাশি ভয় আছে, এটা নাজুক শিশুদের কোণঠাসা, একাকী করে ফেলতে পারে। অন্যদেরও অনলাইনের অন্ধকার এবং কম নিয়ন্ত্রিত অংশের দিকে ঠেলে দিতে পারে।

আরও পড়ুনশিশুদের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধ করে অস্ট্রেলিয়ায় প্রস্তাব পাস২৮ নভেম্বর ২০২৪আরও পড়ুনসামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শিশুদের দূরে রাখতে পারবেন কি০৮ ডিসেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ