গাজীপুরের শ্রীপুরে ১২ বছরের এক ছেলেশিশুকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে মাদ্রাসার এক শিক্ষককে আটক করে পিটিয়ে পুলিশে দিল জনতা। গতকাল শুক্রবার রাত ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

আটক শিক্ষকের নাম মো. মহসিন (৩৫)। তাঁর বাড়ি নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার কাচুটিয়া গ্রামে। তিনি শ্রীপুরের একটি মাদ্রাসার শিক্ষক।

শিশুটির পরিবারের ভাষ্য, শিশুটি যে মাদ্রাসায় পড়ে, সেখানকার শিক্ষক তাকে যৌন নির্যাতন করেন। গতকাল দুপুরে মাদ্রাসার ভেতরে এ ঘটনা ঘটে। বিকেলে শিশুটি দাদার সঙ্গে বাড়ি ফিরে বিষয়টি জানালে তাঁরা মাদ্রাসায় গিয়ে ওই শিক্ষককে আটক করে মারধর করেন। পরে স্থানীয় লোকজন ওই শিক্ষককে একটি পুলিশ বক্সে নিয়ে যান।

রাত ১০টার দিকে ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শতাধিক লোক সেখানে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রথমে শ্রীপুর থানা–পুলিশের দুটি দল ঘটনাস্থলে গেলেও উত্তেজনা থামেনি। পরে রাত ১১টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে এবং ওই শিক্ষককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আবদুল বারিক বলেন, আটক শিক্ষককে থানায় আনা হয়েছে। শিশুটির পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ ক ষকক

এছাড়াও পড়ুন:

সোনারগাঁয়ে কাবাডি খেলায় হাজারো দর্শক, ফিরে এলো হারানো ঐতিহ্য

 

গ্রামবাংলার মাঠে-মাঠে একসময় জমজমাটভাবে অনুষ্ঠিত হতো কাবাডি বা হাডুডু খেলা। সময়ের পরিক্রমায় আধুনিক খেলাধুলার ভিড়ে হারিয়ে যেতে বসেছে বাংলাদেশের এই জাতীয় খেলা। তবে দীর্ঘদিন পর সেই হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার ঐতিহাসিক চেঙ্গাকান্দী গ্রামের তরুণরা। 

শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বিকেলে চেঙ্গাকান্দী বালুর মাঠে আয়োজিত হয় এক চমৎকার কাবাডি প্রতিযোগিতা। আশপাশের এলাকা থেকে হাজার হাজার দর্শক মাঠে ভিড় জমান। দর্শকদের উচ্ছ্বাসে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা যেন ফিরে এসেছে গ্রামবাংলার সেই সোনালি দিন।

খেলার আয়োজক শরীফ বলেন, হাডুডু আমাদের জাতীয় খেলা হলেও আজ প্রায় বিলুপ্তির পথে। তাই গ্রামের ঐতিহ্য ধরে রাখতে আমরা এই আয়োজন করেছি। এলাকাবাসীর সহায়তায় আজ তা সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

প্রতিযোগিতায় লাল দল ও নীল দল মুখোমুখি হয়। টানটান উত্তেজনায় ভরপুর এই ম্যাচে দুই দলই সমানভাবে জয় ভাগাভাগি করে নেয়।

খেলা দেখতে আসা স্থানীয় দর্শক মো. সিদ্দিক বলেন, এখন সবাই ক্রিকেট আর ফুটবলে ব্যস্ত। কিন্তু কাবাডিই তো আমাদের শিকড়ের খেলা। আজ এত মানুষ দেখে মনে হলো পুরোনো সময় ফিরে এসেছে।

দর্শক তারা মিয়া বলেন, এই খেলা আমাদের গ্রামের মানুষকে একসাথে করে। আজকে ছেলেমেয়েরা, বৃদ্ধ সবাই মিলে মাঠে এসেছে এটাই তো আসল আনন্দ। এমন আয়োজন বারবার হলে গ্রামের সংস্কৃতি টিকে থাকবে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সোনারগাঁ উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক ও বারদী ইউনিয়ন যুবদলের আহবায়ক আব্দুল আলী বলেন, কাবাডি আমাদের জাতীয় খেলা হলেও আজ তা হারিয়ে যাচ্ছে। এ ধরনের আয়োজন নিয়মিত করা গেলে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে আগ্রহ বাড়বে এবং ঐতিহ্য টিকবে।”

কাবাডি খেলোয়াড় শুক্কুর আলী বলেন, “কাবাডিতে এখনো অনেক প্রতিভা আছে, কিন্তু সুযোগের অভাবে তারা উঠে আসতে পারে না। সরকার ও স্থানীয় প্রশাসন যদি উদ্যোগ নেয়, কাবাডি আবারও জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট সমাজসেবক জাকির সরকার এবং উদ্বোধক ছিলেন এডভোকেট সানাউল্লাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দি বারাকাহ হাসপাতালের পরিচালক ড. আবদুল মালেক।

উল্লেখ্য, এশিয়া মহাদেশেই কাবাডির উৎপত্তি। স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশে কাবাডি ফেডারেশন গঠিত হয় এবং এটিকে জাতীয় খেলার স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ