ঢাকাই চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সালমান শাহ একটি নাম, কিংবদন্তি। নব্বইয়ের দশকে যেন ধূমকেতুর মতো এসে আলোকিত করেছিলেন চলচ্চিত্র জগৎ। মাত্র চার বছরের ক্যারিয়ারে ২৭টি সিনেমা, আর প্রতিটিতেই দর্শক তাকে দেখেছেন নতুন রূপে। স্টাইল, ফ্যাশন, চুলের কাট, পোশাক— সব কিছুতেই তিনি ছিলেন সময়ের চেয়ে এগিয়ে। তার প্রতিটি লুকই হয়ে উঠত ট্রেন্ড। দর্শক শুধু অভিনয় নয়, তার হাঁটাচলা থেকে চুলের স্টাইল পর্যন্ত অনুকরণ করতেন।

তবে অবাক করার মতো তথ্য হলো— চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সময় সালমান শাহ কখনোই মেকআপ ব্যবহার করতেন না! তার সহচর মতিউর রহমান মতি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘ভাই (সালমান শাহ) সিনেমায় কোনো মেকআপ নিতেন না। আমার কাছে একটা ফ্লাস্ক থাকত, তার ভেতরে ভেজা কাপড়। প্রত্যেক শটের আগে ভাই মুখ মুছে নিতেন- এতটুকুই করতেন। মুখটা মুছে নিলেই চেহারা ঝলমলে হয়ে যেত।”

সালমান শাহর প্রথম সিনেমা ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’। এই একমাত্র সিনেমা যেখানে তিনি মেকআপ ব্যবহার করেছিলেন। গুণী নির্মাতা মালেক আফসারিও এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “সালমান কখনো মেকআপ নিতো না। এমনিতেই ওর মুখের উজ্জ্বলতা ছিল অন্যরকম। মুখটা একটু মুছে নিলেই টকটকে লাল হয়ে যেত। দর্শক বুঝতেই পারতেন না ওর মুখে মেকআপ নেই।”
মতির স্মৃতিচারণ আরও বলে দেয়, সালমান শাহ কতটা সহজ-সরল ছিলেন। মাত্র পাঁচ বছর বয়সে এফডিসিতে কাজ শুরু করেন মতি, আর ১২ বছর বয়সে প্রথমবার কাজ পান সালমান শাহর সিনেমার প্রোডাকশন বয় হিসেবে।

“শুটিংয়ের প্রথম দিন ভাই আমাকে পানি দিতে বললেন। তারপর নাম জিজ্ঞেস করলেন। সেদিনই প্রথম আলাপ। এরপর থেকে আর আলাদা হননি— যেখানেই যেতেন, আমাকে সঙ্গে রাখতেন,” স্মৃতিচারণ করেন মতি।

মেকআপ ছাড়াই তিনি পর্দায় আলো ছড়াতেন, আর তার সেই সহজ সৌন্দর্য, বিনয় ও ক্যারিশমা আজও ভক্তদের হৃদয়ে অম্লান হয়ে আছে। সালমান শাহ শুধু একজন নায়ক নন, ভক্তের হৃদয়ে  তিনি ছিলেন এক অনুভব, এক যুগের আবেগ। 

ঢাকা/রাহাত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম কআপ

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারের বিরুদ্ধে তিনটি দলকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার অভিযোগ ইসলামী আন্দোলনের

সরকারের বিরুদ্ধে তিনটি দলকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার অভিযোগ করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম। তিনি বলেন, সরকারের আচরণ নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার সমান সুযোগ) নষ্ট করছে।

আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর পল্টনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নিয়মিত মাসিক বৈঠক চরমোনাই পীর এ কথা বলেন। পরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৈঠকের বিষয়ে জানানো হয়।

ইসলামী আন্দোলনের আমির বলেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের অর্থ হলো নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিবর্গের মানসিকতা নিরপেক্ষ থাকা এবং কার্যক্রমে তার প্রতিফলন থাকা। মাঠপর্যায়ে কর্মকর্তাদের মানসিকতা গঠন হয় সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির ওপরে। তাই নির্বাচনকালীন সরকারকে সব দলের সঙ্গে সমান আচরণ করা উচিত। কিন্তু বর্তমান সরকার নির্দিষ্ট কিছু দলের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ করে যাচ্ছে।

সৈয়দ রেজাউল করীম বলেন, লন্ডনে বিশেষ একটি দলের সঙ্গে বৈঠক করা, জাতিসংঘের বৈঠকে তিনটি দলকে নিয়ে যাওয়া এবং সম্প্রতি তিনটি দলকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার মাধ্যমে সারা দেশে এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিশেষ ধারণা দেওয়া হচ্ছে। এটা নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের পক্ষপাতমূলক আচরণে উৎসাহিত করবে। আগামী নির্বাচনে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

আগামী নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে মন্তব্য করে চরমোনাই পীর বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে অবশ্যই দলনিরপেক্ষ আচরণ করতে হবে।

দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চলছে মন্তব্য করে ইসলামী আন্দোলনের আমির বলেন, দেশ নিয়ে অব্যাহত ষড়যন্ত্র চলছে। সম্প্রতি ধারাবাহিক অগ্নিকাণ্ড, ধর্মীয় বিষয়ে উসকানি দেওয়ার মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চলছে। এ বিষয়ে সরকারকে সতর্ক আচরণ করতে হবে, বস্তুনিষ্ঠ তদন্ত করে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

চরমোনাই পীর আরও বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নপদ্ধতি নিয়ে এখনো কোনো সুরাহা হয়নি। দ্রুততার সঙ্গে জুলাই সনদ বাস্তবায়নপদ্ধতি নিশ্চিত করতে হবে। তফসিলের আগে গণভোট দিতে হবে। গণহত্যার বিচার করতে হবে। ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।

বৈঠকে অন্যদের মধ্যে ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমানসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ