মেকআপ ছাড়াই পর্দা কাঁপাতেন সালমান শাহ
Published: 25th, October 2025 GMT
ঢাকাই চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সালমান শাহ একটি নাম, কিংবদন্তি। নব্বইয়ের দশকে যেন ধূমকেতুর মতো এসে আলোকিত করেছিলেন চলচ্চিত্র জগৎ। মাত্র চার বছরের ক্যারিয়ারে ২৭টি সিনেমা, আর প্রতিটিতেই দর্শক তাকে দেখেছেন নতুন রূপে। স্টাইল, ফ্যাশন, চুলের কাট, পোশাক— সব কিছুতেই তিনি ছিলেন সময়ের চেয়ে এগিয়ে। তার প্রতিটি লুকই হয়ে উঠত ট্রেন্ড। দর্শক শুধু অভিনয় নয়, তার হাঁটাচলা থেকে চুলের স্টাইল পর্যন্ত অনুকরণ করতেন।
তবে অবাক করার মতো তথ্য হলো— চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সময় সালমান শাহ কখনোই মেকআপ ব্যবহার করতেন না! তার সহচর মতিউর রহমান মতি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘ভাই (সালমান শাহ) সিনেমায় কোনো মেকআপ নিতেন না। আমার কাছে একটা ফ্লাস্ক থাকত, তার ভেতরে ভেজা কাপড়। প্রত্যেক শটের আগে ভাই মুখ মুছে নিতেন- এতটুকুই করতেন। মুখটা মুছে নিলেই চেহারা ঝলমলে হয়ে যেত।”
সালমান শাহর প্রথম সিনেমা ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’। এই একমাত্র সিনেমা যেখানে তিনি মেকআপ ব্যবহার করেছিলেন। গুণী নির্মাতা মালেক আফসারিও এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “সালমান কখনো মেকআপ নিতো না। এমনিতেই ওর মুখের উজ্জ্বলতা ছিল অন্যরকম। মুখটা একটু মুছে নিলেই টকটকে লাল হয়ে যেত। দর্শক বুঝতেই পারতেন না ওর মুখে মেকআপ নেই।”
মতির স্মৃতিচারণ আরও বলে দেয়, সালমান শাহ কতটা সহজ-সরল ছিলেন। মাত্র পাঁচ বছর বয়সে এফডিসিতে কাজ শুরু করেন মতি, আর ১২ বছর বয়সে প্রথমবার কাজ পান সালমান শাহর সিনেমার প্রোডাকশন বয় হিসেবে।
“শুটিংয়ের প্রথম দিন ভাই আমাকে পানি দিতে বললেন। তারপর নাম জিজ্ঞেস করলেন। সেদিনই প্রথম আলাপ। এরপর থেকে আর আলাদা হননি— যেখানেই যেতেন, আমাকে সঙ্গে রাখতেন,” স্মৃতিচারণ করেন মতি।
মেকআপ ছাড়াই তিনি পর্দায় আলো ছড়াতেন, আর তার সেই সহজ সৌন্দর্য, বিনয় ও ক্যারিশমা আজও ভক্তদের হৃদয়ে অম্লান হয়ে আছে। সালমান শাহ শুধু একজন নায়ক নন, ভক্তের হৃদয়ে তিনি ছিলেন এক অনুভব, এক যুগের আবেগ।
ঢাকা/রাহাত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচনের তফসিলকে স্বাগত জানালেও সতর্ক থাকার আহ্বান গণতান্ত্রিক সংস্কার জোটের
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ঘোষিত তফসিলকে স্বাগত জানিয়েছে তিন দলীয় মোর্চা ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’। তবে তারা নির্বাচন নিয়ে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে এক যৌথ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানানো হয়।
জোটের মুখপাত্র ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি হাসনাত কাইয়ূম ও আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু এ আহ্বান জানান। জোটের পক্ষে বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিদারুল ভূঁইয়া এ সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছেন।
জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণা করায় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে গণতান্ত্রিক সংস্কার জোটের নেতারা বলেছেন, এত দিন যেসব সুযোগসন্ধানী ও সংস্কারবিরোধী চক্র নির্বাচন হবে না বলে গল্প ছড়িয়েছিল, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার মাধ্যমে তাদের মুখে চুনকালি পড়েছে। সব জল্পনাকল্পনার অবসান ঘটিয়ে নির্বাচনের পথ প্রশস্ত করে সরকার জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে।
তবে নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে অস্বস্তি প্রকাশ করে জোটের নেতারা বলেন, সব দলের প্রতি সমান আচরণ এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব প্রার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এখনো সম্ভব হয়নি। বেশ কয়েক জায়গায় সম্ভাব্য প্রার্থীদের ওপর হামলা হয়েছে। এসব হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে তাঁরা বলেন, এ পরিস্থিতির উন্নতি না হলে ১ হাজার ৪০০ শহীদ এবং হাজারো আহত মানুষের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত গণ-অভ্যুত্থান ব্যর্থ হবে।
সম্প্রতি গঠিত জোটটির নেতারা বলেন, প্রধান উপদেষ্টা এবারের নির্বাচন ইতিহাসের সেরা নির্বাচন হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মনোভাব এখনো ততটা জনবান্ধব নয়। অতি দ্রুত পেশাদার ও নিরপেক্ষ আচরণ নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনকে তাগিদ দেন তাঁরা।
সব শর্ত পূরণ এবং হাইকোর্টের আদেশ সত্ত্বেও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনকে এখনো নিবন্ধন দেওয়া হয়নি উল্লেখ করে গণতান্ত্রিক সংস্কার জোটের বিবৃতিতে বলা হয়, এ ধরনের আচরণ জনমনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে শঙ্কা তৈরি করবে।
তবে সব নেতিবাচক আচরণ ও প্রশ্নবোধক কর্মকাণ্ড পরিহার করে নির্বাচন কমিশন ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিন দলীয় জোটটির নেতারা।