ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই পক্ষের বিরোধের জেরে প্রকাশ্যে গুলির ঘটনায় তিনজন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে শহরের কান্দিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহত ব্যক্তিরা হলেন কান্দিপাড়ার টুটুল মিয়া (৪৬), মো. শিহাব উদ্দিন ওরফে সোয়েব (২৭) ও  মো. সানজু (২২)।

স্থানীয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে কান্দিপাড়ার মাদ্রাসার রোডে পপুলার প্রেসের সামনে দাঁড়িয়ে টুটুল মিয়াসহ কয়েকজন চা পান করছিলেন। এ সময় একদল লোক এসে গুলি ছোড়ে। এতে টুটুল, শিহাব ও সানজু ছররা গুলিবিদ্ধ হন। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান।

আহত টুটুল মিয়া বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে সাকিলের বিভিন্ন অপকর্মের প্রতিবাদ করায় সে এ কাণ্ড ঘটিয়েছে।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নূর ইবনে বিন সিফাত জানান, একজনের পায়ে ২০-২৫টির মতো রাবার বুলেট রয়েছে। তবে আহত ব্যক্তিরা শঙ্কামুক্ত। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গুলি বের করার জন্য অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন পড়তে পারে।

অভিযুক্ত সাকিল সিকদার কান্দিপাড়ার বাসিন্দা ও সদর উপজেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি কাউকে গুলি করিনি। তারা নিজেরা গুলি করে আমার বিরুদ্ধে বলছে এখন।’

স্থানীয় সূত্র জানায়, গুলিবিদ্ধ টুটুল ও শিহাব জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেনের (দিলীপ) পক্ষের লোক। এ বিষয়ে জানতে চাইলে দেলোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সাকিলসহ কয়েকজন গুলি করেছে তিনি বলে শুনেছেন।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আজহারুল ইসলাম বলেন, এলাকায় সাকিল ও দিলীপের পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছে। আধিপত্য বিস্তারের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় তিনজন আহত হয়েছেন। তবে কেউ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন কি না, তা তিনি জানেন না। এ বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব র হ মণব ড় য়

এছাড়াও পড়ুন:

গঙ্গার ঢেউ কি বিহার থেকে বঙ্গের দিকে আসছে

প্রায় এক মাস হয়ে গেল বিহারের নির্বাচনের। ভারতের পূর্ব-দক্ষিণ অঞ্চলে এই নির্বাচনের ফল নিয়ে বিস্ময় কাটছেই না। বিজেপি জোট এখানে কেবল যে জিতেছে তা–ই নয়, বিপক্ষকে অনেকটা ধসিয়ে দিয়েছে। আগের চেয়ে কংগ্রেস জোটের প্রায় ৮০ আসন কমে গেছে। ২৪৩ আসনের বিধানসভায় বিজেপি জোটের দখলে গেল দুই শর বেশি আসন।

যদিও নিবিড় অনুসন্ধানে দেখা যায়, অধিকাংশ জায়গায় খুব অল্প অল্প ভোটে বিরোধীরা হেরেছে; কিন্তু আসনের বড় ব্যবধানে আরএসএস পরিবার দারুণ উজ্জীবিত। এখন তারা বলছে, গঙ্গার পানি বিহার থেকে পশ্চিমবঙ্গে ঢুকতে চলেছে জোয়ার হয়ে। কেন্দ্রীয় প্রধানমন্ত্রী সে রকমই হুঁশিয়ারি দিলেন কলকাতার অভিভাবকদের। সত্যি কি তা–ই ঘটতে চলেছে? গঙ্গার আসন্ন এই প্রবাহে পদ্মাপারের মানুষদের জন্যও বিশেষ বার্তা আছে কি?

এসআইআর তলোয়ার কাকে বধ করবে?

ভারতের রাজনীতিতে বিহার ও বাংলার চরিত্র এক রকম নয়। তা ছাড়া প্রতি স্থানীয় নির্বাচনই স্থানীয় চরিত্রের। ফেডারেল ভারতের সেটা এক সৌন্দর্যও বটে। ভোটের মনোনয়ন ও প্রচারে বিহারে জাতপাতের বিবেচনা যতটা তীব্র, বাংলায় সে রকম ঘটে ধর্মীয় পরিচয়ে।

ফলে এটা বেশ প্রশ্নবিদ্ধ দাবি, বিহারের নির্বাচনী কলাকৌশল পশ্চিমবঙ্গও মাত করবে। তবে মমতার জন্য মাঠপর্যায়ে উদ্বেগজনক অনেক কিছু আছে। প্রায় দেড় দশক তিনি ও তাঁর দল ক্ষমতায়। দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের বহু অভিযোগ জমেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।

তা ছাড়া সর্বভারতীয় বিজেপির তুলনায় তৃণমূল একান্তই প্রাদেশিক দল। পুরো বিজেপি ইতিমধ্যে প্রায় সব জনপদের উপযোগী দুর্দান্ত এক নির্বাচনী মেশিনে পরিণত হয়েছে। আবার ‘এসআইআর’–এর নামে পশ্চিমবঙ্গসহ কয়েকটি রাজ্যে সূক্ষ্ম পক্ষপাতদুষ্ট এক ব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে নির্বাচনের আগে-আগে। এর প্রয়োগ থেকে বিহারের মতোই বাংলায়ও রাজনৈতিক সুবিধা পেতে চাইছে বিজেপি।

আরও পড়ুনভারত: যে কারণে উত্তর জনসংখ্যা চায় কমাতে, দক্ষিণ চায় বাড়াতে ২৮ নভেম্বর ২০২৪

‘এসআইআর’ হলো স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন। সরল বাংলায় যাকে বলে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন। এই সংশোধনে বসে অনেক ভোটারের বেলায় প্রায় ১২টি নথি দেখাতে হবে। যে রাজ্যগুলোতে বিজেপিবিরোধীদের জমিন শক্ত, মুখ্যত সে রকম জায়গায় এটা শুরু হয়েছে। বিজেপির দাবি, পশ্চিমবঙ্গের মতো কিছু রাজ্যে কথিত বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা বড় সংখ্যায় ভোটার তালিকায় নাম তুলে ফেলেছে।

‘নিবিড় সংশোধন’ হলে বাদ পড়বে সেসব ‘অবৈধ বাংলাদেশি’ ও ‘রোহিঙ্গারা’।
বিহারের অভিজ্ঞতা বলছে, এসআইআরে বাদ পড়ছে প্রধানত প্রান্তিক মানুষ; যারা পারিবারিক সব ধরনের নথিপত্র ঠিকঠাক রাখার মতো দক্ষ নয়। বাংলায় এ রকম বেশি ঘটবে মুসলমান, মতুয়া ও আদিবাসী অঞ্চলগুলোতে। এর মধ্যে মুসলমানেরা এখানে তৃণমূল, কংগ্রেস ও বামদের সমর্থক। বিহারে বিধানসভা ভোটের আগে ভোটার তালিকায় এ রকম নিবিড় সংশোধন চালানো হয় অতি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভরা আসনগুলোতে। স্থানীয়রা যেগুলোকে বলে ‘মার্জিনাল সিট’।

বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে চলছে এসআইর তথা ভোটার তালিকা সংশোধন

সম্পর্কিত নিবন্ধ