কুমিল্লা বিভাগ বাস্তবায়নের দাবিতে কয়েক হাজার মানুষের অংশগ্রহণে চৌদ্দগ্রামে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। সমাবেশে বক্তারা দাবির পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে বলেছেন, সব ধরনের যোগ্যতা থাকার পরও কুমিল্লাকে বিভাগ না দিয়ে যুগের পর যুগ ধরে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে। যখনই কুমিল্লা বিভাগ ঘোষণার সময় হয় বা দ্বারপ্রান্তে থাকে, তখনই শুরু হয় ষড়যন্ত্র। তবে কুমিল্লা বিভাগ ঘোষণা এখন আর কোনো দাবি নয়, এটা কুমিল্লাবাসীর অধিকার। তাই অবিলম্বে কুমিল্লা বিভাগ বাস্তবায়ন করতে হবে।

শনিবার বিকেলে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা সম্মিলিত স্বেচ্ছাসেবী ফোরামের উদ্যোগে চৌদ্দগ্রাম এইচ জে পাইলট হাইস্কুল মাঠে সমাবেশের আয়োজন করা হয়। পরে বিভাগের দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। কর্মসূচিতে কয়েক হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। এ সময় ‘কুমিল্লা, কুমিল্লা’, ‘তুমি কে আমি কে, কুমিল্লা কুমিল্লা’, ‘কুমিল্লা বিভাগ, কুমিল্লা বিভাগ, ‘মিল্লা জিল্লা, কুমিল্লা কুমিল্লা’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন সবাই।

সমাবেশে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কাজী এনাম ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান কাজী এনামুল হক জানান, ১৯৮৯ সাল থেকে কুমিল্লাকে বিভাগ ঘোষণার জন্য কুমিল্লাবাসী দাবি জানিয়ে আসছে। দেশের পঞ্চম বিভাগ হিসেবে কুমিল্লাকে কুমিল্লা নামেই বিভাগ ঘোষণার কথা ছিল। কিন্তু কুচক্রী মহলের অপতৎপরতায় তখন কুমিল্লা বিভাগ বাস্তবায়ন হয়নি। বিগত ১৭ বছর সমগ্র কুমিল্লার সর্বস্তরের মানুষের প্রাণের দাবিকে উপেক্ষা করে ওই সময়কার সরকারপ্রধান প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে কুমিল্লাকে বিভাগ ঘোষণা দেননি। ওই সময় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে কুমিল্লার একাধিক মন্ত্রী দায়িত্ব পালন করলেও বিভাগ বাস্তবায়নে তাঁদের কোনো ভূমিকা ছিল না।

এনামুল হক বলেন, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর কুমিল্লার সর্বস্তরের মানুষ বিভাগ বাস্তবায়নের জন্য টানা আন্দোলন সংগ্রাম কর্মসূচি পালন করে আসছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি উপদেষ্টা পরিষদে কুমিল্লাকে বিভাগ ঘোষণার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হওয়ার মুহূর্তে অদৃশ্য কারণে এখন পর্যন্ত কুমিল্লাকে বিভাগ ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে না। আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, বিভাগ ঘোষণা এখন আর দাবি নয়, এটা কুমিল্লাবাসীর অধিকার। অবিলম্বে কুমিল্লা বিভাগ ঘোষণা করতে হবে।’

সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন চৌদ্দগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম ফরায়েজী, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষে মিতালী ক্লাবের সভাপতি মো.

আবু মুসা, স্বপ্ন পূরণ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মোশাররফ হোসেন, পাঁচরা জনকল্যাণ সংস্থার সভাপতি নুর মোহাম্মদ, আপন ব্লাড ডোনেশনের প্রতিষ্ঠাতা আমান উল্লাহ আমান প্রমুখ।

চিওড়া ব্লাড ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ হোসেন নয়ন বলেন, বিভাগ হওয়ার মতো সব যোগ্যতা কুমিল্লার আছে। তাই যত দ্রুত সম্ভব কুমিল্লা নামেই বিভাগ ঘোষণা করে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। বৃহত্তর কুমিল্লাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি কুমিল্লাকে কুমিল্লা নামেই বিভাগ ঘোষণা করতে হবে। এটি এখন আর কোনো দাবি নয়, বরং এটি কুমিল্লাবাসীর অধিকার।

৪৯ বছর ধরে কুমিল্লার মানুষ বিভাগের জন্য আন্দোলন করছে। সম্প্রতি গুঞ্জন ছড়িয়েছে যেকোনো সময় কুমিল্লা বিভাগ ঘোষণা হতে যাচ্ছে। কুমিল্লা বিভাগ বাস্তবায়নের দ্বারপ্রান্তে থাকা অবস্থায় বিরোধিতা শুরু করে নিজেদের নামে বিভাগের দাবি করছে নোয়াখালী। এমন পরিস্থিতির মধ্যে কুমিল্লার মানুষ নিজেদের বিভাগ বাস্তবায়নের জন্য সমাবেশ, বিক্ষোভ, মোটরসাইকেল শোভাযাত্রাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে।

কুমিল্লার মানুষের দাবি, একটি বিভাগের সবকিছুই কুমিল্লা আছে। শুধু একজন বিভাগীয় কমিশনার আর ডিআইজি পদায়ন করা হলেই কুমিল্লা বিভাগের কার্যক্রম শুরু হতে পারে। নোয়াখালীর লোকজন বিভাগের দাবি করলেও এখনো ৩০টির বেশি দাপ্তরিক সুবিধা কুমিল্লা থেকে গ্রহণ করেন তাঁরা।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

ভেনেজুয়েলা নিয়ে ট্রাম্প কী লক্ষ্য অর্জন করতে চান

দুই মাস ধরে যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবীয় সাগরে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় সামরিক সমাবেশ ঘটাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, মাদকের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য এ আয়োজন। কিন্তু ওয়াশিংটনের প্রকৃত উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে কারাকাসকে বার্তা দিতে চায়।

যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে ছোট ছোট নৌযানে হামলা চালিয়ে কয়েকজনকে হত্যা করেছে। এই হামলাগুলোকে ঘিরে লাতিন আমেরিকা অঞ্চলজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। বিশেষজ্ঞরা প্রশ্ন তুলেছেন এর বৈধতা নিয়ে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকাণ্ড আসলে ইঙ্গিত দিচ্ছে—ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরোকে ভয় দেখাতে অভিযান চালানো হচ্ছে।

লন্ডনভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান চ্যাথাম হাউসের লাতিন আমেরিকা-বিষয়ক সিনিয়র ফেলো ক্রিস্টোফার সাবাতিনি বলেন, এটি মূলত সরকার পরিবর্তনের প্রচেষ্টা। তারা হয়তো সরাসরি আগ্রাসনে যাবে না, বরং শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে বার্তা দিতে চায়।

সাবাতিনির মতে, এই সামরিক আয়োজন আসলে শক্তি প্রদর্শন। এর উদ্দেশ্য ভেনেজুয়েলার সেনাবাহিনী ও মাদুরোর ঘনিষ্ঠ মহলে ভয় সৃষ্টি করা, যাতে তারা তাঁর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

সম্পর্কিত নিবন্ধ