নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি করে চাকরি নেন গ্রেপ্তার মামুন, পরে যুক্ত হন চক্রের সঙ্গে
Published: 26th, October 2025 GMT
দিনাজপুর সরকারি কলেজে পড়ালেখা করার সময় শহরের ফকিরপাড়া এলাকার একটি মেসে ভাড়া থাকতেন মো. মামুন। ২০১৬ সালে ওই এলাকায় ‘স্বপ্নচূড়া’ নামের ছাত্রাবাসটি ভাড়া নিয়ে নিজেই পরিচালনা শুরু করেন। ২০১৮ সালে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে যুক্ত ঢাকায় ডাক বিভাগের এক কর্মকর্তার (এখনো কর্মরত আছেন) সঙ্গে যোগাযোগ হয় মামুনের। সেই কর্মকর্তার সহযোগিতায় জালিয়াতির মাধ্যমে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক পদে চাকরি নেন।
পরে মো.
গতকাল শনিবার সকালে ক্ষুদ্রাকৃতির গোল ডিভাইস নিয়ে খাদ্য অধিদপ্তরের উপপরিদর্শক পদে পরীক্ষা দিতে গিয়ে পুলিশের হাতে আটক হন কৃষ্ণপদ নামের পরীক্ষার্থী। পরে তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী পুলিশের হাতে আটক হন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষক মো. মামুন (৩৫) ও হর সুন্দর রায় ওরফে সবুজ (৩৮)। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির এ তথ্য। আজ রোববার দুপুরে দিনাজপুর পুলিশ সুপার মারুফাত হুসাইনে তাঁর কার্যালয়ে ব্রিফিংকালে এ কথা জানান।
পুলিশ সুপার জানান, গতকাল উপখাদ্য পরিদর্শক পরীক্ষায় একটি কেন্দ্রে এক পরীক্ষার্থীকে দুটি ডিভাইসসহ হাতেনাতে আটক করা হয়। পরে তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী প্রথমে হর সুন্দর রায় (সবুজ) নামের একজনকে আটক করা হয়। তিনি আটক ওই পরীক্ষার্থীকে চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ১৫ লাখ টাকা চুক্তি করেছিলেন। পরে সুন্দর রায়ের সহকর্মী মো. মামুনকে স্বপ্নচূড়া ছাত্রাবাস থেকে আটক করা হয়। সেখান কয়েকটি ডিভাইস, মুঠোফোন, ২৪টি প্রবেশপত্র, স্ট্যাম্প উদ্ধার করা হয়। মামুনকে জিজ্ঞাসাবাদে আরও কয়েকজনের নাম উঠে এসেছে। ঠিকানা অনুযায়ী, তাঁদের বাড়ি তল্লাশি করে পরীক্ষায় জালিয়াতিসংক্রান্ত নানা উপকরণ জব্দ করা হয়েছে। পুরো চক্রটি ধরতে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
আরও পড়ুনপ্রশ্নের সেট ‘পদ্মা’ হলে কাশি দেবেন, বারবার কাশি দিয়ে ধরা পড়লেন চাকরিপ্রার্থী২৫ অক্টোবর ২০২৫দিনাজপুর পুলিশ সুপার মারুফাত হুসাইনে তাঁর কার্যালয়ে রোববার দুপুরে ব্রিফিং করেনউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ক ষ য় জ ল য় ত ন য় গ পর ক ষ
এছাড়াও পড়ুন:
বড় জয়ে দ্বিতীয় স্থানে ইংল্যান্ড, বিদায়ী ম্যাচে হারে শেষ সোফির
ইংল্যান্ডের গুরুত্বপূর্ণ বোলার সোফি এক্লেস্টোনের কাঁধের ইনজুরি দলকে দমাতে পারেনি। ব্যাট হাতে অ্যামি জোন্সের অনবদ্য ইনিংসে নিউ জিল্যান্ডকে লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে বড় ব্যবধানে হারিয়ে সহজেই শেষ চার নিশ্চিত করেছে ইংল্যান্ড।
এক্লেস্টোন ফিল্ডিংয়ের সময় কাঁধে চোট পান। মাত্র চার বল করে একটি উইকেট নেন তিনি। তবে তার আগেই ইংল্যান্ড বাকি কাজটা সেরে ফেলে। ৩৯ ওভারের মধ্যেই নিউ জিল্যান্ডকে গুটিয়ে দেয় মাত্র ১৬৮ রানে।
আরো পড়ুন:
৪৩ ওভারের ম্যাচে টস হেরে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ
বৃথা গেল ব্রুকের ঝড়ো সেঞ্চুরি, নিউ জিল্যান্ডের জয়
স্পিনার লিনসি স্মিথ শুরুতে কিছুটা সংগ্রাম করলেও পরে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে নেন তিন উইকেট। পার্ট-টাইম অফ স্পিনার অ্যালিস ক্যাপসি ও পেসার ন্যাট শিভার-ব্রান্ট পান দুটি করে উইকেট। এরপর ব্যাট হাতে জোন্সের অপরাজিত ৮৬ রানে ইংল্যান্ড সহজেই লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে।
এই জয়ে ইংল্যান্ড পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে থেকে শেষ করেছে। অস্ট্রেলিয়া আছে শীর্ষে। ফলে সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচটি যদি বৃষ্টিতে ধুয়েও যায়, তাহলে পয়েন্ট টেবিলের সুবিধায় ইংল্যান্ডই ফাইনালে উঠবে।
অন্যদিকে, নিউ জিল্যান্ড অধিনায়ক সোফি ডিভাইনের জন্য এটি ছিল বিদায়ী ওয়ানডে। কিন্তু ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচটি তার প্রত্যাশামতো হলো না। ব্যাটাররা ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ, বোলাররাও পারেননি ইংল্যান্ডের টপ অর্ডারে চাপ তৈরি করতে।
ইংল্যান্ডের জয়টা যেমন ছিল সহজ, তেমনি এক্লেস্টোনের ইনজুরি কিছুটা দুশ্চিন্তার। ইংলিশ মেয়েরা শুরুতে বল হাতে ও ফিল্ডিংয়ে কিছু ভুল করলেও দ্রুত তারা ঘুরে দাঁড়ায়।
অ্যামি জোন্স ও ট্যামি বোমন্ট ৭৫ রানের জুটি গড়ে রান তাড়ার ভিত গড়ে দেন। এরপর জোন্স অধিনায়ক হিদার নাইটের সঙ্গে আরও ৮৩ রানের জুটি গড়ে ম্যাচটি নাগালে নিয়ে আসেন।
পুরো লিগ পর্বেই ইংল্যান্ডের শীর্ষ চার ব্যাটার দারুণ ফর্মে ছিলেন। নাইট ও শিভার-ব্রান্ট করেছেন সেঞ্চুরি, বোমন্ট ও জোন্স ফিফটি ছুঁয়েছেন একাধিকবার। এই ম্যাচে অভিজ্ঞ ড্যানি ওয়ায়াট-হজকে নামানো হয় ছয় নম্বরে ভালো করতে না পারা এমা ল্যামের বদলে। তবে সুযোগ পান মাত্র সাত বল খেলার।
বোমন্টের ইনিংস ছিল ঝড়ো। মাত্র ২০ বলে ২৬ রান, যার মধ্যে চারটি চার এসেছিল জেস কেয়ারের এক ওভারেই। আমেলিয়া কেয়ারের বিপক্ষে টানা দুটি চার মেরে ৪০-এর দোরগোড়ায় পৌঁছান। কিন্তু লিয়া তাহুহুর ইন-সুইংয়ে প্যাডে লাগিয়ে ফেরেন এলবিডব্লিউ হয়ে।
একদিকে এক্লেস্টোনের ইনজুরি চিন্তা বাড়াচ্ছিল, অন্যদিকে নাইট ও জোন্স ব্যাট হাতে নিশ্চিত করছিলেন জয়ের রাস্তা। নাইট ৩৩ রানে এলবিডব্লিউ হন ডিভাইনের বলে। তবে জোন্স ছিলেন অবিচল। স্কোরবোর্ডে রান জমাতে থাকেন ঠাণ্ডা মাথায়, শেষ পর্যন্ত টানা দুটি চার মেরে দলকে এনে দেন জয়ের আনন্দ। মাঠ ছাড়ার সময় নিউ জিল্যান্ড অধিনায়ক ডিভাইনকে বিদায়ী সম্মান জানায় দুই দলের খেলোয়াড়রা।
এর আগে ম্যাচের শুরুতেই চোট পান ইংল্যান্ডের এক্লেস্টোন। সুজি বেটসের একটি শট আটকাতে গিয়ে পড়ে যান মাটিতে এবং ব্যথা পান কাঁধে। তবু নামেন বল করতে এবং মাত্র চার বলের মধ্যেই উইকেট তুলে নেন।
তবে নিউ জিল্যান্ডের ইনিংস এগোয়নি। কেয়ারের চারটি চারে কিছুটা আশা জাগলেও ইংল্যান্ডের স্পিনাররা দ্রুতই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন। ক্যাপসির দুর্দান্ত ক্যাচে আউট হন ম্যাডি গ্রিন, পরে শিভার-ব্রান্ট দারুণ এক অফ-কাটারে ফেরান ডিভাইনকে (২৩)।
শেষদিকে স্মিথ পুরনো বলে দারুণ নিয়ন্ত্রণ দেখিয়ে তুলে নেন আরও দুটি উইকেট। শিভার-ব্রান্ট ও ডিনের ধারাবাহিক আঘাতে ৩৯ ওভারের মধ্যেই গুটিয়ে যায় কিউইরা।
শেষ পর্যন্ত, ইংল্যান্ড পেল একটি সহজ কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ জয়। যা সেমিফাইনালের আগে আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর মতোই। আর নিউ জিল্যান্ডের জন্য এটি ছিল এক যুগের সমাপ্তি। সোফি ডিভাইনের বিদায়ে শেষ হলো তাদের এক উজ্জ্বল অধ্যায়।
ঢাকা/আমিনুল