নেত্রকোনায় শ্রমিক দল নেতার বিরুদ্ধে জেলের নৌকা আটকে চাঁদা দাবির অভিযোগ
Published: 26th, October 2025 GMT
নেত্রকোনার খালিয়াজুরিতে ধনু নদে মাছ ধরতে যাওয়া এক জেলের নৌকা আটকে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় শ্রমিক দল নেতা কামরুল মিয়ার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী জেলে গতকাল শনিবার খালিয়াজুরি থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগে কামরুল মিয়াসহ অন্তত ১৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
অভিযুক্ত কামরুল মিয়া খালিয়াজুরি উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি। তিনিসহ অন্য অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পাঁচহাট গ্রামের বাসিন্দা। অভিযোগকারী জেলে মো.
স্থানীয় ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জীবিকার প্রয়োজনে মামুন মিয়া ধনু নদে মাছ ধরেন। উপজেলার পাঁচহাট এলাকায় ধনু নদে কামরুল মিয়াসহ কয়েকজন ব্যক্তি বাঁশের ঘের দিয়ে ‘মিম’ (মাছের আবাসস্থল) তৈরি করে রেখেছেন। স্থানীয় জেলেরা সেখানে মাছ ধরতে গেলে তাঁরা বাধা দেন। গতকাল দুপুরে মামুন মিয়া নদে মাছ ধরতে গেলে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা তাঁকে বাধা দেন এবং ঘের থেকে ৩০০ মিটার দূরে গিয়ে মাছ ধরতে বলেন। এতে আপত্তি জানালে তাঁরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁর ইঞ্জিনচালিত নৌকা, জাল ও বড়শি কেড়ে নিয়ে নিজেদের ঘাটে আটক রাখেন। এ সময় তাঁরা পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ আছে। টাকা না দিলে নৌকা ফেরত দেওয়া হবে না বলেও হুমকি দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত কামরুল মিয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মো. আলী উছমান বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি, তবে মামুন মিয়ার অভিযোগটি সত্য নয়। মামুন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। দীর্ঘদিন তিনি ধনু নদে চাঁদাবাজিসহ আমাদের দলের নেতা–কর্মীদের হয়রানি করেছেন। মামুনের কাছে এক ব্যক্তি টাকা পান। সেই কারণে ওই ব্যক্তি তাঁর নৌকা আটক করেছিলেন। এখন তিনি প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে আমাদের শ্রমিক দলের নেতার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন।’
খালিয়াজুরি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মকবুল হোসেন বলেন, অভিযোগের বিষয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফেরদৌস রহমানকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ঘটনা সত্য হলে এ ব্যাপারে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম ছ ধরত
এছাড়াও পড়ুন:
৯ সদস্যের নতুন শরিয়াহ অ্যাডভাইজরি কাউন্সিল গঠন
পুঁজিবাজারে নয় সদস্যের নতুন শরিয়াহ অ্যাডভাইজরি কাউন্সিল (এসএসি) গঠন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। পুঁজিবাজারে শরিয়াহসম্মত সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে বিএসইসি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
রবিবার (২৬ অক্টোবর) বিএসইসি থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আরো পড়ুন:
নয় মাসে ঢাকা ব্যাংকের মুনাফা কমেছে ২০.৩৬ শতাংশ
পুঁজিবাজারে সূচকের পতন, কমেছে লেনদেন
এর আগে, গত ২২ অক্টোবর বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মকসুদ স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করা হয়।
শরিয়াহ বিশেষজ্ঞ অ্যাডভাইজরি কাউন্সিল সদস্যরা হলেন- ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাসরুল্লাহ নাকিব মুহাম্মদ, ন্যাশনাল শরিয়াহ স্কলার ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনজুর-ই-এলাহী, জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মিরপুরের সিনিয়র মুফতি ও মুহাদ্দিস মুফতি মাসুম বিল্লাহ, জামিয়াহ শরিয়াহর সিনিয়র ডেপুটি মুফতি আব্দুল্লাহ মাসুম এবং মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. রুহুল আমিন।
অন্যদিকে, শিল্প ও আর্থিক খাতের বিশেষজ্ঞ অ্যাডভাইজরি কাউন্সিল সদস্যরা হলেন- যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব নিউ অরলিন্সের ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কবির হাসান, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট ব্যারিস্টার ওমর সাদাত, বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল আরবিট্রেশন সেন্টারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম মাজেদুর রহমান এবং ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের চিফ ফাইন্যান্স অফিসার মোহাম্মদ আব্দুর রহিম।
এ শরিয়াহ অ্যাডভাইজরি কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন অধ্যাপক ড. নাকিব মুহাম্মদ নাসরুল্লাহ।
বিএসইসির আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন মনে করে, ইসলামিক শরিয়াহ্ভিত্তিক সিকিউরিটিজ সঠিকভাবে ইস্যু করা, ইসলামী শরিয়াহ্র আলোকে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণ এবং বাংলাদেশের ইসলামিক মূলধন বাজারের উন্নয়নের জন্য একটি শরিয়াহ অ্যাডভাইজরি কাউন্সিল গঠন করা প্রয়োজন। তাই বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (সিকিউরিটিজ মার্কেট শরিয়াহ অ্যাডভাইজরি কাউন্সিল) বিধিমালা, ২০২২-এর বিধি ৪ ও ৫ অনুযায়ী মোট নয়জন সদস্য নিয়ে শরিয়াহ অ্যাডভাইজরি কাউন্সিল গঠন করা হয়েছে।
এর মধ্যে পাঁচজন শরিয়াহ বিশেষজ্ঞ এবং চারজন বিভিন্ন শিল্পক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞ। অতএব, উক্ত বিধিমালা, ২০২২-এর বিধি ৩-এর উপবিধি (১)- এর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে কমিশন নিম্নবর্ণিত নয় সদস্যবিশিষ্ট শরিয়াহ অ্যাডভাইজরি কাউন্সিল গঠন করেছে।
বিএসইসি জানায়, এই শরিয়াহ অ্যাডভাইজরি কাউন্সিল ইসলামিক শরিয়াহর আলোকে শরিয়াহভিত্তিক সিকিউরিটিজ ইস্যু, অনুমোদন ও তদারকি কার্যক্রমে পরামর্শ দেবে। পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা এবং ইসলামিক পুঁজিবাজারের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
কমিশন মনে করে, বাংলাদেশে ইসলামিক আর্থিক খাত দিন দিন সম্প্রসারিত হচ্ছে। ব্যাংকিংয়ের পাশাপাশি ইসলামিক বন্ড (সুকুক), শরিয়াহভিত্তিক মিউচ্যুয়াল ফান্ড ও অন্যান্য সিকিউরিটিজের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব কার্যক্রম যেন শরিয়াহ্র নীতিমালা অনুযায়ী পরিচালিত হয়, তা নিশ্চিত করতেই এই কাউন্সিল গঠন করা হয়েছে।
ইসলামিক পুঁজিবাজারে স্বচ্ছতা ও শরিয়াহ্ নিয়মের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করার জন্যই এই উপদেষ্টা কাউন্সিল গঠন করা হয়েছে। এটি দেশের আর্থিক খাতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। আদেশটি অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
ঢাকা/এনটি/মেহেদী