বিএনপি–জামায়াত দুই দিকেই দরজা খোলা রাখছে এনসিপি
Published: 27th, October 2025 GMT
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী—দুই দলের সঙ্গেই যোগাযোগ রাখছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটি এখন পর্যন্ত কোনো জোটে যাওয়ার ঘোষণা দেয়নি। তবে সম্ভাব্য আসন সমঝোতা ও রাজনৈতিক বোঝাপড়ার বিষয়ে দুই দলের দিকেই দরজা খোলা রাখছে। উভয় দলের সঙ্গেই অনানুষ্ঠানিক আলাপ-আলোচনা করছেন এনসিপির নেতারা।
এনসিপি নেতাদের ভাষ্য, দলীয় প্রতীক এবং জুলাই জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তির বিষয়টি সুরাহার পর তাঁরা আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী কার্যক্রমে প্রবেশ করবেন। দলীয় প্রতীক ও জুলাই সনদের বিষয়টি শিগগিরই সুরাহা হয়ে যেতে পারে বলে দলটির অনেকের ধারণা।
যদিও অনানুষ্ঠানিকভাবে ইতিমধ্যে নির্বাচনকেন্দ্রিক কিছু তৎপরতা শুরু করেছে এনসিপি। দলটির সম্ভাব্য প্রার্থীদের অনেকেই পছন্দের আসনের ভোটারদের কাছে পরিচিত হওয়ার চেষ্টা করছেন। তাঁরা জনসংযোগ করছেন, বিভিন্ন সামাজিক কাজে যুক্ত হওয়ার চেষ্টা করছেন। এমন নেতার সংখ্যা প্রায় অর্ধশত।
আরও পড়ুনশুধু কয়েকটি সিট পাওয়ার জন্য এনসিপি কোনো জোট করবে না: সারজিস আলম১২ ঘণ্টা আগেজুলাই সনদ ও দলীয় প্রতীকের বিষয়টি ইতিবাচকভাবে অগ্রসর হওয়ার পর নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এনসিপির একটি খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হতে পারে। এই তালিকায় দলের ১৫০-১৬০ জন প্রার্থীর নাম থাকতে পারে।আরিফুল ইসলাম আদীব, এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়কদলীয় সূত্র থেকে জানা গেছে, এনসিপি ইতিমধ্যে দেড় শতাধিক আসনের জন্য খসড়া প্রার্থী তালিকা তৈরির কাজ করছে। এ বিষয়ে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব প্রথম আলোকে বলেন, ‘জুলাই সনদ ও দলীয় প্রতীকের বিষয়টি ইতিবাচকভাবে অগ্রসর হওয়ার পর নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এনসিপির একটি খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হতে পারে। এই তালিকায় দলের ১৫০-১৬০ জন প্রার্থীর নাম থাকতে পারে।’
গত সেপ্টেম্বরে জুলাই সনদ নিয়ে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বিপরীতমুখী অবস্থানের মধ্যে মাঝামাঝি সমাধানের পথ খুঁজতে আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছিল ৯টি দল। এর মধ্যে ছিল গণতন্ত্র মঞ্চভুক্ত ছয়টি দল এবং এনসিপি, এবি পার্টি ও গণ অধিকার পরিষদ। একপর্যায়ে এমন আলোচনাও ছিল যে বিএনপি ও জামায়াতের বাইরে এই ৯ দলের উদ্যোগে একটি তৃতীয় নির্বাচনী জোট হতে পারে। অবশ্য এখন আর এই আলোচনা নেই। গণতন্ত্র মঞ্চভুক্ত বিভিন্ন দল বিএনপির সঙ্গে আসন সমঝোতার আলোচনা করছে।
অন্যদিকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃত্বদানকারী তরুণদের দল এনসিপিও বিএনপির সঙ্গে আলাদাভাবে যোগাযোগ রাখছে। আসন সমঝোতার লক্ষ্যে অনানুষ্ঠানিক আলোচনাও দল দুটির মধ্যে শুরু হয়েছে বলে উভয় দলের সূত্র থেকে জানা গেছে।
আরও পড়ুনজামায়াতের ৮০% প্রার্থীই নতুন ১৯ ঘণ্টা আগেএনসিপির সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক যোগাযোগ আছে। তবে জোটবদ্ধ হব কি হব না; তারা হবে কি হবে না, সেটা রাজনীতির মাঠে আগে থেকেই কোনো কিছু বলে দেওয়া যায় না।সালাহউদ্দিন আহমদ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যএনসিপির রাজনৈতিক পর্ষদের একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিএনপির সঙ্গে এনসিপির আসন সমঝোতা নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। এনসিপিকে ২০টি আসনে ছাড় দেওয়া নিয়ে কথা হয়েছে। আমাদের ধারণা, ঢাকার অন্তত চারটি আসনে বিএনপির সঙ্গে এনসিপির সমঝোতা হতে পারে।’
এনসিপির এই নেতা জানান, আসন সমঝোতা হোক বা না হোক, ঢাকার কয়েকটি এলাকায় এনসিপি অবশ্যই প্রার্থী রাখবে। এই এলাকাগুলো হলো যাত্রাবাড়ী, বাড্ডা, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, উত্তরা ও সাভার। এসব এলাকা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনের ‘হটস্পট’ ছিল। ফলে এসব এলাকায় এনসিপির সমর্থন তুলনামূলক বেশি বলে দলটি মনে করে।
এনসিপির সঙ্গে বিএনপির কোনো যোগাযোগ আছে কি না, তাদের সঙ্গে জোট বা সমঝোতা হতে পারে কি না, এ বিষয়ে গত শুক্রবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদের কাছে সাংবাদিকেরা জানতে চান। জবাবে তিনি বলেন, ‘এনসিপির সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক যোগাযোগ আছে। তবে জোটবদ্ধ হব কি হব না; তারা হবে কি হবে না, সেটা রাজনীতির মাঠে আগে থেকেই কোনো কিছু বলে দেওয়া যায় না।’
আরও পড়ুননির্বাচনী প্রস্তুতিতেই এখন পূর্ণ মনোনিবেশ বিএনপির ২৫ অক্টোবর ২০২৫নির্বাচন কাছাকাছি আসলে যোগাযোগ, সম্পর্কের মতো বিষয়গুলো আরও পরিষ্কার হবে। এখন প্রতিটি দলই একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে।মিয়া গোলাম পরওয়ার, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেলএনসিপির সঙ্গে আসন নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘এমন কিছু নয় যে রাজনীতিতে শেষ পর্যন্ত কিছু হবে না, তেমন নয়। আমরা আলাপ-আলোচনার মধ্যে আছি। তবে জোটে আসার বিষয়ে তাদের সঙ্গে সরাসরি কোনো আলোচনা হয়নি।’
এনসিপির শীর্ষ পর্যায়ের একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপির পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গেও এনসিপির নেতাদের অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হচ্ছে। তাঁরা পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করছেন। বিএনপি বা জামায়াতের সঙ্গে এনসিপির সরাসরি জোট হওয়ার সম্ভাবনা নেই, তবে আসন সমঝোতা হতে পারে।
এদিকে এনসিপির একজন যুগ্ম আহ্বায়ক ও একজন যুগ্ম সদস্যসচিব দাবি করছেন, জামায়াতও নির্বাচনে এনসিপিকে সঙ্গে রাখতে চায়। তারা এনসিপিকে বিএনপির চেয়েও বেশি আসন ও সুবিধা দেওয়ার কথা বলেছে। কিন্তু এনসিপি তাদের সঙ্গে এখনো কোনো অঙ্গীকারে যায়নি।
তবে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার গতকাল রোববার প্রথম আলোকে বলেন, ‘এনসিপির সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ আছে। প্রায়ই জুলাই সনদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ইস্যুতে কথা হয়।’
আরও পড়ুনবিএনপি-জামায়াত দুই দলকেই কথায় বিদ্ধ করলেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী২৪ অক্টোবর ২০২৫যদি অবস্থানগত ঐক্য হয়, তাহলে যেকোনো দলের সঙ্গেই জোট বা সমঝোতার বিষয়ে আমরা এখনো ওপেন রয়েছি।আখতার হোসেন, সদস্যসচিব, এনসিপিএনসিপির সঙ্গে রাজনৈতিক জোট বা সমঝোতার সম্ভাবনা আছে কি না; এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, সময়ের বাস্তবতায় সামনে বিষয়টি আরও পরিষ্কার হবে। চূড়ান্ত করে এখন কোনো দলই জোট বা সমঝোতার বিষয়টি বলতে পারবে না। এখনো সেই সময় হয়নি। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কাছাকাছি আসলে যোগাযোগ, সম্পর্কের মতো বিষয়গুলো আরও পরিষ্কার হবে। এখন প্রতিটি দলই একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে।’
অবশ্য এনসিপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়সহ বিভিন্ন স্তরে নানা মতের নেতা আছেন। একেক অংশের ঝোঁক একেক দিকে। যেমন বিএনপি ও জামায়াতের বাইরে অন্য তিনটি দলের সঙ্গে মিলে জোট করার সম্ভাব্যতা নিয়েও এনসিপিতে আলোচনা আছে। অন্য তিন দল হলো বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, গণ অধিকার পরিষদ ও এবি পার্টি। এই চার দল মিলে জোট হলেও বিএনপি বা জামায়াতের সঙ্গে এনসিপির কিছু আসনে সমঝোতা হতে পারে বলে দলের শীর্ষ পর্যায়ের একজন নেতা জানিয়েছেন।
আরও পড়ুনবিএনপির ২০০ আসনে প্রার্থী এ মাসেই পাচ্ছেন ‘গ্রিন সিগন্যাল’ ২৪ অক্টোবর ২০২৫বিএনপি, জামায়াত বা অন্য কোনো দলের সঙ্গে এনসিপির জোট হতে পারে কি না—এ বিষয়ে জানতে চাইলে দলটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘যদি অবস্থানগত ঐক্য হয়, তাহলে যেকোনো দলের সঙ্গেই জোট বা সমঝোতার বিষয়ে আমরা এখনো ওপেন রয়েছি। যদিও এখনো কারও সঙ্গেই আমাদের সুনির্দিষ্ট করে জোটনির্ভর কোনো আলোচনা হয়নি। মধ্যমপন্থী আরও কিছু দলের সঙ্গে আমাদের আলাপ-আলোচনা চলমান রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘জোটনির্ভর রাজনীতি বা নির্বাচনের ব্যাপারে আমরা এখনো সুনিশ্চিত কোনো সিদ্ধান্তে উপনীত হইনি। আমরা সবার জন্য এখন পর্যন্ত ওপেন রয়েছি।’
আরও পড়ুনশুধু সরকার নয়, একে অন্যকেও কি চাপে ফেলতে চায় বিএনপি–জামায়াত–এনসিপি ২৪ অক্টোবর ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অন ন ষ ঠ ন ক প রথম আল ক আসন সমঝ ত জ ল ই সনদ ব এনপ র স র র জন ত র জন ত ক সমঝ ত র র ব ষয়ট র একজন দল র স আম দ র পর য য় প রক শ য় দল র ইসল ম এখন প সদস য করছ ন হওয় র
এছাড়াও পড়ুন:
সাহায্যের ছলে অসহায় নারীদের ওপর যৌন নিপীড়নের অভিযোগ, তুরস্কে দাতব্য সংস্থার মালিক গ্রেপ্তার
যৌন নির্যাতনের অভিযোগে তুরস্কের একটি দাতব্য সংস্থার মালিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিবিসির এক অনুসন্ধানে তাঁর বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ প্রকাশ পেয়েছিল।
বিবিসি নিউজ টার্কিশের খবরে বলা হয়েছে, সাদেত্তিন কারাগোজ নামের ওই ব্যক্তি অসহায় নারীদের সাহায্য দেওয়ার নাম করে তাঁদের ওপর যৌন নিপীড়ন চালিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে কারাগোজ এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
২০১৪ সালে তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় নিজের দাতব্য সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন কারাগোজ। সহায়তার জন্য মরিয়া সিরীয় শরণার্থীরা বলেন, শুরুতে তাঁকে ‘ফেরেশতার মতো’ মনে হয়েছিল।
তিন সন্তানকে একা লালন–পালন করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছিলেন মাদিনা। তিনি অসহায় অবস্থায় সাহায্য চাইতে সাদেত্তিন কারাগোজের মালিকানাধীন দাতব্য সংস্থাটিতে যান। দাতব্য সংস্থাটির নাম হোপ চ্যারিটি স্টোর। সংস্থাটি শরণার্থীদের জন্য ডায়াপার, পাস্তা, দুধ ও পোশাকের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস সংগ্রহ করত।তেমনই একজন শরণার্থী মাদিনা (ছদ্মনাম)। তিনি ২০১৬ সালে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ থেকে পালিয়ে তুরস্কে আশ্রয় নেন। দুই বছর পর তাঁর এক সন্তান মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়ে। আর তাঁর স্বামী তাঁকে ছেড়ে চলে যান। তাঁর পরিচয় গোপন রাখার জন্য ‘মাদিনা’ ছদ্মনামটি ব্যবহার করা হয়েছে।
তিন সন্তানকে একা লালন–পালন করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছিলেন মাদিনা। তিনি অসহায় অবস্থায় সাহায্য চাইতে সাদেত্তিন কারাগোজের মালিকানাধীন দাতব্য সংস্থাটিতে যান। দাতব্য সংস্থাটির নাম হোপ চ্যারিটি স্টোর। সংস্থাটি শরণার্থীদের জন্য ডায়াপার, পাস্তা, দুধ ও পোশাকের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস সংগ্রহ করত।
দাতব্য সংস্থার ভবনটি দোতলা। এর দেয়াল লাল, সাদা ও সবুজ রঙে রাঙানো। দেয়ালে হাঁস ও শিশুদের ছবি আঁকা। মানুষকে বেশি বেশি দুধ পান ও ফলমূল-সবজি খেতে উদ্বুদ্ধ করতে সেখানে কিছু স্লোগান লেখা আছে।
কারাগোজের সঙ্গে কথোপকথনের প্রসঙ্গ টেনে মাদিনা বলেন, ‘তিনি (কারাগোজ) বলেছিলেন, যদি কোথাও যাওয়ার জায়গা না থাকে, আমার কাছে এসো। আমি তোমার দেখভাল করব।’
কিন্তু পরে কারাগোজের কাছে যাওয়ার পর তাঁর ভিন্নরূপ দেখতে পান মাদিনা।
মাদিনা বলেন, ‘তিনি আমাকে অফিসের পেছনে পর্দা দেওয়া এক জায়গায় যেতে বলেন। তিনি বলেছিলেন সেখান থেকে কিছু জিনিস দেবেন। তিনি আমাকে আঁকড়ে ধরেন এবং চুমু খেতে শুরু করেন...আমি তাঁকে দূরে যেতে বলি। যদি আমি চিৎকার না করতাম, তিনি হয়তো আমাকে ধর্ষণের চেষ্টা করতেন।’
মাদিনা জানান, তিনি কোনোরকমে সেই ভবন থেকে পালিয়ে আসেন। কিন্তু পরে কারাগোজ নিজেই তাঁর বাড়িতে হাজির হন। মাদিনা বলেছেন, তিনি দরজা খোলেননি। কারাগোজ তাঁকে সিরিয়ায় ফেরত পাঠানোর হুমকি দিয়েছিলেন।
মাদিনা বলেছেন, ভয়ের কারণে তিনি কখনো পুলিশের কাছে যাননি। ঘটনাটি তিনি কাউকে জানাননি।
অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মী সাদেত্তিন কারাগোজ অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বিবিসিকে বলেন, তাঁর সংস্থা এখন পর্যন্ত ৩৭ হাজারের বেশি মানুষকে সাহায্য করেছে। তাঁর দাবি, সংস্থার ত্রাণ বিতরণ এলাকা ছোট, জনাকীর্ণ এবং সেখানে সারাক্ষণ সিসিটিভি ক্যামেরায় নজরদারি চলে। তাই কোনো নারীর সঙ্গে একা থাকার প্রশ্নই ওঠে না।
বছরের পর বছর ধরে কারাগোজের সংস্থাটি ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে এবং ২০২০ সালে স্থানীয় একটি পত্রিকার পুরস্কারও জিতেছে। জাতীয় টেলিভিশনে সংস্থাটি নিয়ে খবরও প্রচার হয়েছে। তিনি বলেন, সংস্থাটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সমর্থন পেয়েছে। চলতি বছরের মার্চে তিনি সংস্থার তুর্কি নাম পরিবর্তন করে রেখেছেন ‘মাই হোম মিল অ্যাসোসিয়েশন’।বছরের পর বছর ধরে কারাগোজের সংস্থাটি ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে এবং ২০২০ সালে স্থানীয় একটি পত্রিকার পুরস্কারও জিতেছে। জাতীয় টেলিভিশনে সংস্থাটি নিয়ে খবরও প্রচারিত হয়েছে। তিনি বলেন, সংস্থাটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সমর্থন পেয়েছে। চলতি বছরের মার্চে তিনি সংস্থার তুর্কি নাম পরিবর্তন করে রেখেছেন ‘মাই হোম মিল অ্যাসোসিয়েশন’।
মাদিনাসহ তিন নারী বিবিসিকে বলেছেন, কারাগোজ তাঁদের ওপর যৌন নিপীড়ন চালিয়েছেন।
আর সংস্থার দুই সাবেক কর্মীসহ সাত ব্যক্তি বলেছেন, তাঁরা ২০১৬ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে কারাগোজকে নিপীড়ন চালাতে দেখেছেন কিংবা তাৎক্ষণিকভাবে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে অভিযোগ শুনেছেন।
২৭ বছর বয়সী সিরীয় শরণার্থী নাদা (ছদ্মনাম) বলেন, কারাগোজ তাঁকে বলেছিলেন, সাহায্য পেতে হলে তাঁকে ফাঁকা একটি ফ্ল্যাটে যেতে হবে। সেখানে না গেলে সাহায্য দেওয়া হবে না।
নাদা বলেন, একবার কারাগোজ তাঁর ছেলের জন্য ডায়াপার দেওয়ার কথা বলে পর্দার পেছনে নিয়ে যৌন নিপীড়নের চেষ্টা চালিয়েছিলেন।
বিবিসির কাছে কারাগোজের বিরুদ্ধে যে তৃতীয় নারী অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর নাম বাতুল। তিনি পরে জার্মানিতে চলে গেছেন। তিনি একজন একা মা (সিঙ্গেল মাদার)। তিনিও অভিযোগ করেছিলেন, কারাগাজের কাছে সাহায্য চাইতে গিয়ে তিনি যৌন হয়রানির শিকার হয়েছিলেন।
কারাগোজের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এবারই প্রথম নয়; এর আগে ২০১৯ সালেও তাঁর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু তখন তদন্তকারী কর্মকর্তারা বলেছিলেন, মামলা করার জন্য পর্যাপ্ত প্রমাণ নেই।
পুলিশ বলেছে, ভুক্তভোগী বা সাক্ষীরাও আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করার জন্য এগিয়ে আসতে ইচ্ছুক ছিলেন না।