রাজধানীর ডেমরায় আজ শুক্রবার ভোররাতে সিটি করপোরেশনের ময়লাবাহী গাড়ির সঙ্গে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। তাঁরা একটি গায়েহলুদের অনুষ্ঠান শেষে ফিরছিলেন।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন শিক্ষার্থী তাহসিন তপু (২৫) ও ইরাম হৃদয় (২৩)। দুজন বেসরকারি দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তাহসিন সপরিবার ডেমরার সানারপাড়ায় থাকতেন। আর ইরাম চিটাগং রোড এলাকার একটি বাসায় থাকতেন।

ডেমরা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো.

রুবেল হাওলাদার আজ সকালে ‌প্রথম আলোকে বলেন, ডেমরার মিনি কক্সবাজার রোডের ধার্মিকপাড়ায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) একটি ময়লাবাহী গাড়ির সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় মোটরসাইকেলে থাকা দুই শিক্ষার্থী রাস্তায় ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন। তাঁদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজে নেওয়ার পর দুজন মারা যান। ময়লাবাহী গাড়িটি জব্দ করা গেলেও চালক পালিয়ে গেছেন।

গায়েহলুদে অংশ নেওয়া ধর্মপাড়ার বাসিন্দা ও নিহত দুই শিক্ষার্থীর বন্ধু তাওসিফ হোসেন হাসপাতালে আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা এলাকার অনেকেই একই এলাকার এক বড় ভাইয়ের গায়েহলুদে গিয়েছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে তাঁরা কয়েকজন চা খাচ্ছিলেন। এ সময় তাহসিন ও ইরাম মোটরসাইকেলে ঘুরতে যান। কিছু দূর যেতেই তাঁরা বিকট শব্দ শুনতে পান। গিয়ে গাড়ির নিচে মোটরসাইকেলটি দেখতে পান। রাস্তায় ছিটকে পড়ে ছিলেন তাহসিন ও ইরাম। পরে তাঁদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজে নেওয়া হয়।

সকালে হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা পরিদর্শক মো. ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, ভোর পৌনে পাঁচটার দিকে চিকিৎসক তাহসিনকে পরীক্ষা–নিরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করেন। আর ইরাম চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে মারা যান। লাশ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

চালকবিহীন ট্যাক্সিতে শিশুর জন্ম

যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকো শহরে ওয়েমো কোম্পানির একটি চালকবিহীন ট্যাক্সিতে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন এক নারী। এই কোম্পানির স্বচালিত গাড়ি সাম্প্রতিক সময়ে নানা কারণে সমালোচিত হয়েছে। এসব গাড়ির নিচে চাপা পড়ে বিড়াল মারা গেছে, কখনো আবার পুলিশের সামনে নিষিদ্ধ জায়গায় ইউটার্ন নিয়েছে। কিন্তু নিরাপদে নবজাতকের জন্মদানের মাধ্যমে সমালোচনা থেকে কিছুটা রেহাই পেল ওয়েমোর স্বচালিত গাড়ি।

ঘটনাটি ঘটেছে গত সোমবার। সেদিন এক গর্ভবতী নারী সান ফ্রান্সিসকোর ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার মেডিকেল সেন্টারে যাচ্ছিলেন। যাওয়ার পথে হঠাৎ তাঁর প্রসববেদনা শুরু হয়। তিনি ওয়েমোর চালকবিহীন একটি গাড়িতে ছিলেন। সেখানে তিনি সন্তানের জন্ম দেন। বুধবার কোম্পানিটি এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

গাড়িটি রোবোট্যাক্সি নামে পরিচিত। এসব গাড়িতে কোনো চালক থাকেন না। সান ফ্রান্সিসকোসহ যুক্তরাষ্ট্রের কিছু শহরে এই গাড়ি পরিচালনার অনুমতি রয়েছে। এগুলো উবারের মতো ভাড়ায় চলে। ওয়েমো গুগলের মূল কোম্পানি অ্যালফাবেটের মালিকানাধীন।

ওয়েমো জানায়, যাত্রাপথে গাড়ির রাইডার সাপোর্ট টিম ‘অস্বাভাবিক গতিবিধি’ লক্ষ রে। এরপর তারা যাত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং জরুরি সেবাকর্মীদের খবর দেয়। গাড়িতে অস্বাভাবিক কিছু হচ্ছে, এটা তারা কীভাবে বুঝতে পেরেছে, তা কোম্পানি জানায়নি। তবে ট্যাক্সিটি যথাসময়ে মা ও নবজাতককে হাসপাতালে পৌঁছে দেয়।

ইউসিএসএফের মুখপাত্র জেস বার্থোল্ড জানান, মা ও সন্তানকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। তবে মা তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করতেরাজি হননি।

ওয়েমো বলেছে, প্রসূতি ও নবজাতককে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার পর গাড়িটিকে সেবা থেকে সাময়িকভাবে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সেটিকে পরিষ্কার করে আবার সেবায় নামানো হবে। তারা আরও জানায়, এবারই প্রথম নয়, এর আগেও তাদের ট্যাক্সিতে নবজাতকের জন্ম হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি শহরে সফলভাবে কার্যক্রম চালালেও ওয়েমোর স্বচালিত গাড়ি নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত রয়েছে। গত সেপ্টেম্বরে নিষেধাজ্ঞার সাইন থাকা সত্ত্বেও একটি ওয়েমোর গাড়ি ইউটার্ন নেয়। ক্যালিফোর্নিয়ার আইনের কাছে পুলিশ চালকবিহীন গাড়িটিকে জরিমানাও করতে পারেনি।

অক্টোবর মাসে মিশন ডিস্ট্রিক্ট এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রিয় ‘কিট ক্যাট’ নামের একটি বিড়াল ওয়েমোর ধাক্কায় মারা গেলে তীব্র সমালোচনা হয়। এসব সমালোচনা সত্ত্বেও নিজের সেবাকে আরও নিরাপদ করার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী ওয়েমো।

সম্পর্কিত নিবন্ধ