পারস্পরিক বিরোধ আমলে নিয়ে বাণিজ্যচুক্তির কাঠামোর বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি কর্মকর্তারা। চলতি সপ্তাহের শেষভাগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বৈঠক করবেন। সে বৈঠকে এই দুই নেতাই কাঠামোর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।

এ কাঠামো চূড়ান্ত হলে চীনের পণ্যে যুক্তরাষ্ট্র সাময়িকভাবে শুল্ক বাড়াবে না। অন্যদিকে চীন বিরল খনিজ ধাতু রপ্তানির বিষয়ে যে বিধিনিষেধ জারি করেছিল, তা–ও সাময়িকভাবে স্থগিত হবে।

মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেন, চলমান আসিয়ান সম্মেলনের মধ্যে যে আলোচনা হয়েছে, তাতে আগামী ১ নভেম্বর থেকে চীনের পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের যে শতভাগ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করার কথা, তা স্থগিত হয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁর আশা, চীন চৌম্বক পদার্থসহ বিরল খনিজ রপ্তানিতে যে লাইসেন্স নেওয়ার প্রথা চালু করেছে, তা বাস্তবায়নের মেয়াদ অন্তত এক বছর পিছিয়ে যাবে।

তবে এ আলোচনার বিষয়ে চীনের সরকারি কর্মকর্তারা কিছুটা সতর্ক। ফলে তাঁরা এখন পর্যন্ত বৈঠকের বিষয়ে কিছু জানাননি।

দক্ষিণ কোরিয়ায় এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো–অপারেশন (অ্যাপেক) সামিটের মধ্যে আগামীকাল মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বৈঠক করবেন। বৈঠকের বিষয়টি এখনো নিশ্চিত নয়। কেননা, হোয়াইট হাউস বৈঠকের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানালেও চীন এখনো তা নিশ্চিত করেনি।

মার্কিন ও চীনা কর্মকর্তাদের বৈঠকের পর মার্কিন অর্থমন্ত্রী বলেন, শীর্ষ নেতাদের বৈঠকের কাঠামো তৈরিতে তাঁরা সফল হয়েছেন। এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার, চীনের সহকারী প্রধানমন্ত্রী হে লিফেং ও শীর্ষ বাণিজ্য প্রতিনিধি লি চেংগ্যাং। গত মে মাসের পর এটা ছিল তাঁদের পঞ্চম সরাসরি বৈঠক।

বেসেন্টের আশা, চীনের সঙ্গে শুল্কবিরতি চুক্তির মেয়াদ ১০ নভেম্বরের পরও বাড়বে। একই সঙ্গে চীন আবারও বিপুল পরিমাণ মার্কিন সয়াবিন কিনতে শুরু করবে, যদিও সেপ্টেম্বর মাসে তারা যুক্তরাষ্ট্রের সয়াবিন কেনেনি। গত মাসে চীন মূলত ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা থেকে সয়াবিন আমদানি করেছে।

বেসেন্ট এবিসি টেলিভিশনের ‘দিস উইক’ অনুষ্ঠানে বলেন, চুক্তির শর্তগুলো মার্কিন সয়াবিনচাষিদের জন্য আশাব্যঞ্জক হবে, অন্তত আগামী কয়েক মৌসুমের জন্য।

এদিকে জেমিস গ্রিয়ার ‘ফক্স নিউজ সানডে’ অনুষ্ঠানে বলেন, উভয় পক্ষই সাময়িকভাবে কিছু শাস্তিমূলক পদক্ষেপ স্থগিত করতে রাজি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে চীনের বিরল খনিজ ধাতু আরও বেশি করে পেতে পারে, তার পথ বাতলানো হয়েছে। সেই সঙ্গে চীনের বাজারে মার্কিন পণ্যের বিক্রি বাড়িয়ে বাণিজ্যঘাটতি কমানোর পদ্ধতিও চিহ্নিত করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

এদিকে আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনের মধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে তাঁর বৈঠক হবে। তিনি বলেন, ‘এ বৈঠকের বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি।’ সি চিন পিংয়ের সঙ্গে সয়াবিন কেনাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে বলে জানানো হয়েছে। এমনকি তাইওয়ান ও হংকংয়ের কারাবন্দী বৃহৎ মিডিয়া ব্যবসায়ী জিমি লাইয়ের মুক্তির বিষয়েও আলোচনা হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র

এছাড়াও পড়ুন:

মানিকগঞ্জে গবাদিপশুর চিকিৎসা সংকট

মানিকগঞ্জ জেলায় গবাদিপশুর চিকিৎসা সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। জনবল ঘাটতি এবং অতিরিক্ত অর্থ দাবির কারণে সরকারি চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন খামারিরা। পাশাপাশি বন্ধ রয়েছে অধিকাংশ পশু সেবা ও কল্যাণ কেন্দ্র। ফলে বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে অসংখ্য পশু, যে কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন খামারিরা।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, জনবল সংকটের কারণেই সেবা ব্যাহত হচ্ছে। খামারিদের অভিযোগ, সরকারি হাসপাতালেও চিকিৎসা পেতে দিতে হয় অতিরিক্ত টাকা; অন্যথায় চিকিৎসা মেলে না।

শিবালয় উপজেলার খামারি আশিকুর রহমান শ্রাবণ বলেন, “সরকারি চিকিৎসক না পেয়ে হাতুড়ে ডাক্তারের কাছে যেতে হয়েছিল। ভুল চিকিৎসার কারণে ১০ দিনের মাথায় গরুটি মারা যায়। ক্ষতি হয়েছে দেড় লাখ টাকারও বেশি।”

ঘিওর উপজেলার খামারি আলতাফ হোসেন বলেন, “উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস অনেক দূরে। অসুস্থ গরু নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না। ফোন করলেও চিকিৎসক সাড়া দেন না। একবার ভুল ভ্যাকসিন প্রয়োগ করেছিলাম। একদিনেই তিনটি গরু মারা গেল।”

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার খামারি সর্দার মোশাররফের অভিযোগ, “পল্লী চিকিৎসকের তুলনায় সরকারি চিকিৎসকদের কাছে যেতে তিনগুণ খরচ হয়। সরকারি সহায়তা শুধু তাদেরই জন্য, যাদের সঙ্গে দপ্তরের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে।”

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ মজিবুর রহমান বলেন, “মানিকগঞ্জে পশু চিকিৎসক সংকট মারাত্মক। বিষয়টি ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। জেলায় প্রায় ১২ হাজার ছোট-বড় খামার রয়েছে, কিন্তু চিকিৎসাসহ ৫৫টি পদ এখনো শূন্য। এছাড়া ইউনিয়ন ও দুর্গম এলাকার ৩০টি পশু সেবা ও কল্যাণ কেন্দ্র বন্ধ রয়েছে।”

ঢাকা/চন্দন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ