আদানপ্রদানের জন্য ভারত-বাংলাদেশের এক হওয়ার প্রয়োজন নেই: ফারিণ
Published: 27th, October 2025 GMT
টিভি নাটক ও ওয়েব ফিল্মে অভিনয় করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন তাসনিয়া ফারিণ। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে কাজ করেছেন ওপার বাংলায়। নতুন একটি প্রজেক্টের কাজে কয়েক দিন আগে কলকাতায় গিয়েছেন এই অভিনেত্রী। তারপর থেকে আলোচনায় রয়েছেন ‘কারাগার’খ্যাত এই তারকা।
ভারতীয় একটি গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তাসনিয়া ফারিণ। এ আলাপচারিতায় জানতে চাওয়া হয়, বাংলাদেশের মানুষ যখন আমাদের কাছে আসেন, তখন আমরা জানতে চাই, ওপার বাংলা কেমন আছে? এ প্রশ্নের জবাবে তাসনিয়া ফারিণ বলেন, “ভালো আছে বাংলাদেশ, ভালো ভালো কাজ হচ্ছে। আমিও কাজ করছি। এখন ওখানে সিনেমার বাজেটও আগের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে। যদিও হল সংখ্যা নিয়ে এখনো প্রশ্ন আছে, সব মিলিয়ে ভালোই।”
আরো পড়ুন:
ভাঙার চিন্তা করে কেউ সংসার বাঁধে না: ফারিয়া
কলকাতায় একসঙ্গে চঞ্চল-ফারিণ
আপনারা মাঝখানে ‘অন্ধকার সময়’ পেরিয়ে এসেছেন…। এ প্রসঙ্গ তোলার পর তাসনিয়া ফারিণ বলেন, “দেখুন, আমি না একেবারেই রাজনীতিমনস্ক নই। বেশি কথা বলতেও ভালোবাসি না। ফলে, এই বিষয়টি নিয়ে খুব বেশি বলতে পারব না। বলতে চাইও না। আর আমার মনে হয়, একজন শিল্পীর এত জটিল বিষয় নিয়ে কথা না বলাই শ্রেয়।”
দুই দেশের সংস্কৃতির আদানপ্রদান নিয়ে কথা বলছিলেন। ধরুন, কাঁটাতারের বেড়া না থাকত, ভিসা সমস্যা না থাকত, দুই দেশ যদি আবার আগের মতো একটাই দেশ হতো? এ প্রশ্ন শুনে খানিকটা থমকে যান তাসনিয়া। জবাবে এ অভিনেত্রী বলেন, “দেখুন, এটা খুব হাইপোথেটিক্যাল ভাবনা। কোনো দিন যা হওয়ার নয়, এ রকম চিন্তা করতেও চাই না। আমি আমার দেশ নিয়ে যথেষ্ট গর্বিত। গর্ব করার কারণও আছে।”
গর্ব করার কারণ ব্যাখ্যা করে তাসনিয়া ফারিণ বলেন, “আমার দেশের মুক্তিযুদ্ধ আমাকে গর্বিত করে। অনেক কষ্টে স্বাধীন হয়েছি। মুক্তিযুদ্ধ তাই আমাদের রক্তে, আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য। দেখুন, ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়। আলাদা দুটো দেশ মানেই আমরা আলাদা নই। আমাদের দেশ আমাদের মেলামেশার সুযোগ দিয়েছে বলেই আমি আপনার দেশে বসে আপনার সঙ্গে কথা বলতে পারছি। সেই জায়গা থেকেই বলছি, আলাদা দেশে বাস করেও সুস্থ চিন্তা, দুই দেশের স্বার্থ রক্ষা করে স্বাভাবিক আদানপ্রদান সম্ভব। তাতে দুই দেশের অর্থনৈতিক পরিকাঠামো আরো জোরালো হবে। এর জন্য দুই দেশকে এক হতে হবে না।”
গত ২৩ অক্টোবর কলকাতায় গিয়েছেন তাসনিয়া ফারিণ। সেখানে চঞ্চল চৌধুরীর সঙ্গে দেখা হয়েছে তার। একসঙ্গে কলকাতার সিনেমায় কাজের গুঞ্জনও উড়ছে। যদিও বিষয়টি খোলাসা করেননি তাদের কেউই। কয়েক দিনের মধ্যে বাংলাদেশে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন ফারিণ।
অতনু ঘোষের ‘আরও এক পৃথিবী’ সিনেমার মাধ্যমে টলিউডে পা রাখন ফারিণ। দর্শকদের ভালোবাসার সঙ্গে সমালোচকদেরও প্রশংসা কুড়ান। সিনেমাটিতে অভিনয়ের জন্য ‘ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডস বাংলা ২০২৪’-এর আসরে সেরা নবাগতা অভিনেত্রীর পুরস্কার লাভ করেন ফারিণ।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ট ভ ন টক চলচ চ ত র ন ত সন য় আম দ র কলক ত
এছাড়াও পড়ুন:
শিল্পকলায় নোবেল জয়ী নাট্যকারের ‘ডিজায়ার আন্ডার দ্য এলমস’
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে মঞ্চস্থ হবে সাহিত্যে নোবেল জয়ী মার্কিন নাট্যকার ইউজীন ও নীলের রচিত বিখ্যাত নাটক ‘ডিজায়ার আন্ডার দ্য এলমস’। নাটকটি প্রযোজনা করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) নাট্যকলা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) ও রবিবার (২৬ অক্টোবর) এই দুইদিন টিকিটের বিনিময়ে সন্ধ্যা ৭টায় শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে নাটকটি প্রদর্শিত হবে।
আরো পড়ুন:
রেজোয়ানের ভাসমান স্কুলের ইউনেস্কোর পুরস্কার অর্জন
ববির ৪ শিক্ষার্থী বহিষ্কার
নাটকটি অনুবাদ করেছেন কবীর চৌধুরী। পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় রয়েছেন নাট্যকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুবাইয়া জাবীন প্রিয়তা।
নাটকের বিখ্যাত এফরায়েম ক্যাবট চরিত্রে অভিনয় করা শিক্ষার্থী তাকরিম আহমেদ বলেন, “চরিত্রটি আমার কাছে সাধারণ কোনো চরিত্র নয়, বরং একটি প্রজন্মের প্রতীক। মঞ্চে তার নিঃসঙ্গতা অনুভব করা সহজ ছিল না। জমি মানেই তার জীবন, কিন্তু সেই বিশ্বাসই শেষ পর্যন্ত তার কবর। বাইরে দৃঢ়, ভেতরে অসহায়, এই দ্বৈততাই নাটকের ব্যথা। ক্যাবটের মতো মানুষ আজো আছে, যারা ভালোবাসতে চায়, কিন্তু তা প্রকাশ করতে পারে না। আশা করি, নাটকটি সবার ভালো লাগবে।”
অ্যাবেন চরিত্রে অভিনয় করা মনন মোস্তাকিন বলেন, “অ্যাবেন এমন এক ছেলে, যে ছোটবেলা থেকে মায়ের স্নেহ পায়নি। আর বাবার ওপর প্রচণ্ড রাগ জমে আছে। সেই রাগ আর ভালোবাসা দুইটাই তার মধ্যে লড়াই করে। এই দোটানার জায়গাটা মঞ্চে প্রকাশ করতে চেষ্টা করেছি।”
অ্যাবি চরিত্রে অভিনয় করা শিক্ষার্থী রোকসানা আক্তার সায়মা বলেন, “অ্যাবি আসলে ভালোবাসা পেতে চায়। কিন্তু সমাজ তাকে সেই সুযোগ দেয় না। তাই সে যেমন ভালোবাসে, তেমন ভয়ও পায়। তার ভেতরে দোষ আর মায়া একসঙ্গে কাজ করে। আমি অভিনয়ের সময় চেষ্টা করেছি, যেন দর্শক ওর কষ্টটা বুঝতে পারে। অত্যন্ত সুন্দর ও বিখ্যাত এ নাটকটি দেখতে চলে আসুন শিল্পকলা একাডেমিতে।”
নাটকটির নির্দেশক জবি নাট্যকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুবাইয়া জাবীন প্রিয়তা বলেন, “নোবেলজয়ী বিখ্যাত নাট্যকার ইউজিন ও নীল-এর এ নাটকটি শুধু এক পারিবারিক সংঘাতের গল্প নয়। এটি মানুষের গভীরতম আকাঙ্ক্ষা, অপরাধবোধ ও মুক্তির তীব্র অনুসন্ধানের নাটক। এই নাটকে যে মানুষদের দেখি— তারা সবাই ভালোবাসা খোঁজে। কিন্তু তাদের ভালোবাসা মিশে থাকে অধিকার, ঈর্ষা ও দোষবোধের সঙ্গে। সেই মিশ্র অনুভূতিই এই নাটকের মূলে থাকা ইচ্ছা বা ডিজায়ারকে জটিল করে তোলে। এই নাটকের পটভূমি সম্পূর্ণ আমেরিকান।”
তিনি আরো বলেন, “এই প্রযোজনার মাধ্যমে আমি দর্শকদের সামনে একটি আবেদন রাখতে চেয়েছি- মানুষ কি কখনো তার ইচ্ছার ঊর্ধ্বে উঠতে পারে নাকি প্রতিটি ইচ্ছাই শেষ পর্যন্ত তাকে তার নিজের তৈরি কারাগারে বন্দি করে ফেলে? আমার অভিনেতারা, আলো-সংগীত-ডিজাইনের সহকর্মীরা সবাই এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে একসঙ্গে ভ্রমণ শুরু করেছে। এই ভ্রমণই আমাদের আসল প্রাপ্তি। দর্শক যদি সেই ভ্রমণে সামান্য সময়ের জন্যও আমাদের সঙ্গে অংশ নেন, তবেই আমাদের প্রয়াস সার্থক হবে।”
এছাড়া নাটকে অভিনয় করেছেন নাট্যকলা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তাকরিম, মোস্তাকিন, সায়মা, শোভন, খুশি, মিঠুন, জ্যা চাকমা, অর্থি, পলক, রিভা, ইসরাত, সুরুজ ও তুলি।
আবহ সংগীতে আছেন নওমী, শোভন, পলক ও সুরুজ, মঞ্চ নির্মাণে নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী স্পর্শ ও টনি, আলোক প্রক্ষেপণে আছেন খন্দকার রাকিবুল হক ও রাজিন, নাটকের পোস্টার বানিয়েছেন সাদিয়া নিশা এবং প্রকাশনায় ছিলেন মুগ্ধ আনন।
ঢাকা/লিমন/মেহেদী