প্রাথমিক উপবৃত্তির টাকা বিতরণে নতুন ব্যবস্থা
Published: 27th, October 2025 GMT
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা এখন থেকে তাদের অভিভাবকদের পছন্দের মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবে যাবে। আগে পুরো অর্থ যেত শুধু নগদের হিসাবে। নগদের সঙ্গে আগের একক চুক্তিটি বাতিল করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। পাশাপাশি দেশের মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান বিকাশ, নগদ, রকেট, উপায় ও এমক্যাশের মাধ্যমে উপবৃত্তির টাকা বিতরণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর ফলে উপবৃত্তি বিতরণে এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সবার সমান সুযোগ নিশ্চিত হবে।
দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো থেকে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধ ও শিক্ষার প্রতি তাদের আগ্রহ ধরে রাখতে উপবৃত্তি দেয় সরকার। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে চালু হওয়া নগদ লিমিটেডের হিসাবের মাধ্যমে এই বৃত্তি দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়। এতে বড় ধরনের অনিয়ম হয় বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক পরিদর্শনে উঠে আসে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটলে নগদ লিমিটেডের উদ্যোক্তারা পালিয়ে যান। এরপর নগদের দায়িত্ব নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি সরকারি অর্থ বিতরণে স্বচ্ছতা আনতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের গত ২৯ সেপ্টেম্বর চিঠিতে বলা হয়, ডাক অধিদপ্তর ও ডাক বিভাগের ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস নগদ লিমিটেডের সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সম্পাদিত ত্রিপক্ষীয় চুক্তিটি বাতিল করা হলো। অর্থ বিভাগের নির্দেশনার সঙ্গে সামঞ্জস্য না থাকা ও নগদ লিমিটেড চুক্তিপত্রের সব শর্ত যথাযথভাবে পালন করতে না পারার কারণে চুক্তি বাতিল করা হয়েছে।
এদিকে উপবৃত্তির টাকা বিতরণে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। সভায় মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ছাড়াও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও ১৩টি এমএফএস প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ২৬ অক্টোবর থেকে দেশের সব মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা উপবৃত্তি বিতরণের নির্দেশনা প্রদান করে। ফলে এখন থেকে উপবৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা তাঁদের পছন্দের মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবে উপবৃত্তির অর্থ গ্রহণ করতে পারবেন। চিঠিতে উপবৃত্তি প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সুবিধাভোগী শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দ্বারা মোবাইল সিম ও এমএফএস হিসাব নিবন্ধন নিশ্চিত করতে বলা হয়। নতুন এই সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জানানোর জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওই চিঠিতে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপব ত ত র ট ক নগদ ল ম ট ড ব তরণ সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচনের তফসিলকে স্বাগত জানালেও সতর্ক থাকার আহ্বান গণতান্ত্রিক সংস্কার জোটের
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ঘোষিত তফসিলকে স্বাগত জানিয়েছে তিন দলীয় মোর্চা ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’। তবে তারা নির্বাচন নিয়ে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে এক যৌথ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানানো হয়।
জোটের মুখপাত্র ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি হাসনাত কাইয়ূম ও আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু এ আহ্বান জানান। জোটের পক্ষে বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিদারুল ভূঁইয়া এ সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছেন।
জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণা করায় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে গণতান্ত্রিক সংস্কার জোটের নেতারা বলেছেন, এত দিন যেসব সুযোগসন্ধানী ও সংস্কারবিরোধী চক্র নির্বাচন হবে না বলে গল্প ছড়িয়েছিল, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার মাধ্যমে তাদের মুখে চুনকালি পড়েছে। সব জল্পনাকল্পনার অবসান ঘটিয়ে নির্বাচনের পথ প্রশস্ত করে সরকার জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে।
তবে নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে অস্বস্তি প্রকাশ করে জোটের নেতারা বলেন, সব দলের প্রতি সমান আচরণ এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব প্রার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এখনো সম্ভব হয়নি। বেশ কয়েক জায়গায় সম্ভাব্য প্রার্থীদের ওপর হামলা হয়েছে। এসব হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে তাঁরা বলেন, এ পরিস্থিতির উন্নতি না হলে ১ হাজার ৪০০ শহীদ এবং হাজারো আহত মানুষের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত গণ-অভ্যুত্থান ব্যর্থ হবে।
সম্প্রতি গঠিত জোটটির নেতারা বলেন, প্রধান উপদেষ্টা এবারের নির্বাচন ইতিহাসের সেরা নির্বাচন হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মনোভাব এখনো ততটা জনবান্ধব নয়। অতি দ্রুত পেশাদার ও নিরপেক্ষ আচরণ নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনকে তাগিদ দেন তাঁরা।
সব শর্ত পূরণ এবং হাইকোর্টের আদেশ সত্ত্বেও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনকে এখনো নিবন্ধন দেওয়া হয়নি উল্লেখ করে গণতান্ত্রিক সংস্কার জোটের বিবৃতিতে বলা হয়, এ ধরনের আচরণ জনমনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে শঙ্কা তৈরি করবে।
তবে সব নেতিবাচক আচরণ ও প্রশ্নবোধক কর্মকাণ্ড পরিহার করে নির্বাচন কমিশন ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিন দলীয় জোটটির নেতারা।