রূপগঞ্জে ৫ শতাধিক মানুষকে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা সেবা প্রধান সহ চশমা ও ওষুধ বিতরণ করা হয়েছে। ইসলামিক পাঠাগার ও সমাজকল্যাণ পরিষদ তারাবো পৌরসভার সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ও ইস্পাহানী ইসলামিয়া চক্ষু ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগিতায় বিনামূল্যে এ চক্ষু চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়েছে।

সোমবার (২৭অক্টোবর) দিনব্যাপী  উপজেলার রূপসী এলাকায় রূপসি ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসায় এ  চক্ষু  সেবা প্রদান করা হয়। এ সময় রোগীদেরকে বিনামূল্য বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখানো, চোখের ছানী পরীক্ষা, চশমা বিতরণ, ঔষধ সহ  প্রয়োজনীয় অপারেশনের ব্যবস্থা ঔষুধসহ চক্ষু হাসপাতালে যাতায়াতসহ বিভিন্ন সেবা প্রদান করা হয়। 

ইস্পাহানি ইসলামিয়া চক্ষু ইন্সটিটিউটের মেডিকেল টিমের সদস্য ডা.

নজরুল ইসলাম চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন।

ইসলামি পাঠাগার ও সমাজকল্যাণ পরিষদের তারাব পৌর শাখার সভাপতি খন্দকার আল-আমীনের সভাপতিত্বে  প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে  এ সেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নারায়ণগঞ্জ ১ রূপগঞ্জ  আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন মোল্লা।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা জামাতের আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট ইসরাফিল হোসাইন, এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, ইসলামি পাঠাগার ও সমাজক কল্যাণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এবং নারায়ণগঞ্জ লিগ্যাল এইডের প্যানেল আইনজীবী এডভোকেট আয়নাল হক, ইসমাইল হোসেনসহ আরো অনেকে। 

ইসলামি পাঠাগার ও সমাজক কল্যাণ পরিষদের সভাপতি আল আমিন বলেন,  বর্তমান বাজারে সব পন্যের দাম উর্ধগতি। সাধারণ জীবন যাপনে দরিদ্ররা হিমসিম খাচ্ছে।

এর মাঝে যারা চোখের সমস্যায় ভুগছেন,তাদের অনেকেই টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারেন না। তাই আমরা তারাব পৌর  ইসলামিক পাঠাগার ও সমাজকল্যাণ পরিষদ ও ইস্পাহানি ইসলামিয়া চক্ষু ইন্সটিটিউটের উদ্যোগে এ সেবাদান অব্যাহত রেখেছি।

ইতোমধ্যেই উপজেলার বেশ কিছু এলাকায় আমরা চক্ষু সেবা কার্যক্রম পরিচালিত করেছি। এতে শত শত রোগী বিনামূল্যে সেবা গ্রহণ করে উপকৃত হয়েছেন।  সেবা নিতে আসা কিছু রোগীকে বিনামূল্যে অপারেশনের জন্য বাছাই করা হয়েছে।

বিনামূল্যে তাদের অপারেশন করা হবে। পর্যায়ক্রমে আমাদের এই চক্ষু সেবা কার্যক্রম রূপগঞ্জের সকল পৌরসভা ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের জনগণের  মাঝে  পৌঁছে দেয়া হবে।
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: র পগঞ জ ন র য়ণগঞ জ ইসল ম য় র পগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

গাজীপুর সাফারি পার্কে দুটি শাবকের জন্ম দিল দুই নীলগাই

মায়ের ছায়ায় ছায়ায় ঘুরে বেড়ায়। বাদামি রঙের রোমশ শরীর। স্বভাবে চনমনে। কিছুটা গরুর বাছুরের মতো দেখতে, তবে মুখাবয়ব লম্বাটে। দুটি নীলগাইয়ের শাবক তারা। শাবক দুটি মায়েদের সঙ্গে ঘুরে বেড়াচ্ছে বনজুড়ে। পাঁচ-ছয় দিন ধরে গাজীপুর সাফারি পার্কের কোর সাফারি এলাকায় বনের ভেতর তাদের দেখা মিলছে। মানুষের ছায়া দেখলেও শাবকদের নিয়ে দৌড়ে বনের অন্য প্রান্তে ছুটে যাচ্ছে মায়েরা।

পার্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২১ অক্টোবর প্রথমবার তারা শাবক দুটি দেখতে পায়। এরপর প্রতিদিন খাবার খেতে এলে নির্দিষ্ট স্থানে তাদের দেখা মিলছে। তবে শাবক দুটি স্ত্রী না পুরুষ, তা জানা যায়নি। নিরাপত্তার কারণে কাছাকাছি ‍গিয়ে তা নির্ধারণের চেষ্টাও করেনি কর্তৃপক্ষ।

পার্কের বন্য প্রাণী পরিদর্শক মো. রাজু আহমেদ জানান, আগেও কয়েকবার সেখানে নীলগাই শাবক জন্ম দিয়েছে। সর্বশেষ দুটি শাবকসহ এখন নীলগাইয়ের পালে সদস্যসংখ্যা ১১। এর মধ্যে পূর্ণবয়স্ক ৯টি। এর মধ্যে ছয়টি পুরুষ ও তিনটি স্ত্রী নীলগাই।

আজ সোমবার দুপুরে পর্যটক বাসে চড়ে কোর সাফারির মূল ফটক পেরিয়ে বেশ কিছুটা ভেতরে গিয়ে দূর থেকে দেখা মেলে দুটি পূর্ণবয়স্ক মা নীলগাইয়ের। কিছুক্ষণের মধ্যেই তাদের পাশে দেখা যায় শাবক দুটিকে। পর্যটক বাস দেখে অভ্যস্ত হওয়ায় তারা নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে বনের ভেতর ঘুরে বেড়াচ্ছিল। কিছুক্ষণের মধ্যেই মা নীলগাই দুটি বনের পাশের খোলা জায়গায় নেমে আসে। নেমে আসে দুটি শাবকও। মাঝেমধ্যে মায়ের দুধ পান করছিল তারা। আবার হেঁটে বেড়াচ্ছে। কিছুদূর গিয়ে হঠাৎ দৌড়ে বনের ভেতর শাবক নিয়ে লুকিয়ে পড়ে মা দুটি। আবার বনের অন্য প্রান্তে দেখা যায় তাদের। পুরো সময় ধরে শাবক দুটি মায়ের কাছাকাছি অবস্থান করছিল।

পার্কের বন্য প্রাণী সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, নীলগাই সাধারণত শাবকের বিষয়ে সতর্ক থাকে। তারা শাবকের নিরাপত্তায় অনেক সময় কিছু না খেয়ে দীর্ঘ সময় তাদের নিরাপত্তা দিতে থাকে। এ জন্য এদের শাবক দেখার সুযোগ কম হয়। পার্কে সম্প্রতি জন্ম নেওয়া শাবকগুলো একটু পরিণত হওয়ায় মায়েরা তাদের নিয়ে বাইরে আসা শুরু করেছে। নীলগাই সাধারণত একসঙ্গে একটি থেকে তিনটি শাবকের জন্ম দেয়। জন্মের পর প্রায় ছয় মাস ধরে বাচ্চাগুলো দুধ পান করে। এরপর তারা মায়েদের সঙ্গে অন্যান্য খাবার খাওয়ায় অভ্যস্ত হতে থাকে। অ্যান্টিলোপ প্রজাতির মধ্যে নীলগাই সবচেয়ে বড় প্রাণী। পুরুষ নীলগাইয়ের শিং থাকে। এদের গায়ের রং হয় কিছুটা কালচে। একই প্রজাতির স্ত্রীদের ক্ষেত্রে শিং থাকে না। স্ত্রী নীলগাইয়ের রং হয় কিছুটা বাদামি। এরা প্রাপ্তবয়স্ক হয় দুই বছরে। পুরুষ প্রাপ্তবয়স্ক হতে সময় নেয় পাঁচ বছর।

বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, একসময় বাংলাদেশের প্রকৃতিতে এই প্রাণী দেখা যেত। কিন্তু পরিবেশগত বিভিন্ন কারণে ১৯৪০ সালের পর থেকে এ দেশের বনাঞ্চলের প্রাকৃতিক পরিবেশে প্রাণীটিকে আর দেখা যায়নি। তাই নীলগাইকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। তবে বিভিন্ন সময় বিক্ষিপ্তভাবে ভারত সীমান্ত এলাকার বাংলাদেশ অংশে বেশ কিছু নীলগাই স্থানীয় বাসিন্দাদের হাতে ধরা পড়েছে। এরপর সেগুলোকে সাফারি পার্কে এনে রাখা হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জে উদ্ধার হওয়া একটি স্ত্রী নীলগাইকে প্রথমে গাজীপুর সাফারি পার্কে আনা হয়। পরে দিনাজপুরের রামসাগর জাতীয় উদ্যান থেকে আনা হয় একটি পুরুষ নীলগাই। এই দুটি নীলগাই ভারতীয় বনাঞ্চল থেকে বাংলাদেশে এসেছে বলে ধারণা করা হয়। সাফারি পার্কে আসার পর দুটি নীলগাই থেকে পর্যায়ক্রমে শাবক পাওয়া গেছে।

গাজীপুর সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সহকারী বন সংরক্ষক তারেক রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গাজীপুর সাফারি পার্কে নীলগাই নিয়মিত শাবকের জন্ম দিচ্ছে। পার্কের উন্মুক্ত ও উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত হওয়ায় বংশবিস্তার ঘটছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ