সাপের কামড়ে শিক্ষার্থীর মৃত্যু, হাসপাতালে অ্যান্টিভেনম না থাকার অভিযোগ
Published: 29th, October 2025 GMT
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে রাখা মনি (১৭) নামে এক কলেজছাত্রী সাপের কামড়ে মারা গেছেন।
পরিবারের অভিযোগ, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলেও অ্যান্টিভেনম (সাপে কাটার ভ্যাকসিন) না থাকায় তাকে চিকিৎসা দিতে পারেননি চিকিৎসক। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথ রাখা মনি মারা যান।
আরো পড়ুন:
জামালপুরে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স বন্ধ
কুমিল্লায় হাসপাতালে ১১ দালাল গ্রেপ্তার
গত সোমবার (২৭ অক্টোবর) রাতে উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নের সিন্দ্রহবি বটতলা এলাকার নিজ বাড়িতে সাপের কামড়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন রাখা মনি। তিনি তুষভান্ডার মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন। তার বাবার নাম আব্দুল জলিল।
স্থানীয়রা জানান, রাতে রাখা মনির হাতে কিছু একটা কামড় দেয়। বিষয়টি তিনি সঙ্গে সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের জানান। পরিবারের সদস্যরা প্রথমে তাকে স্থানীয় এক তান্ত্রিকের কাছে নিয়ে যান। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে রাখা মনিকে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।
রাখা মনির বাবা আব্দুল জলিল অভিযোগ করে বলেন, “উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যান্টিভেনম ভ্যাকসিন না দিয়েই রাখা মনিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। রংপুর নেওয়ার পথে রাখা মনি মারা যায়।”
কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক দেব দুলাল বলেন, “এই হাসপাতালে অনেকদিন থেকে অ্যান্টিভেনম সরবরাহ নেই। যে কারণে মেয়েটিকে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হয়নি। আমরা অ্যান্টিভেনম ভ্যাকসিনের জন্য চাহিদা সব সময় দিয়ে আসছি।”
ঢাকা/সিপন/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ স ব স থ য কমপ ল ক স উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
মুক্তিযুদ্ধে ঢাবির ১৯৫ শহীদের ইতিহাস জানাতে ছাত্রদল নেতার ভিন্নধর্মী উদ্যোগ
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আত্মত্যাগের ইতিহাস শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দিতে ভিন্নধর্মী উদ্যোগ নিয়েছেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের এক নেতা।
রোববার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত পুরো ক্যাম্পাসে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যাকাণ্ডের শিকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৫ জন শহীদের নাম ও পরিচয় লেখা ছোট ছোট প্ল্যাকার্ড স্থাপন করেন তিনি।
এই কর্মসূচির উদ্যোগ নেন ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক আবু হায়াত মো. জুলফিকার। তিনি ক্যাম্পাসের টিএসসি প্রাঙ্গণ, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সম্মুখভাগ, হাকিম চত্বর, মধুর ক্যানটিন, কলাভবন প্রাঙ্গণ, মল চত্বর, ভিসি চত্বর, স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বর, আইন অনুষদ প্রাঙ্গণ, মোতাহার হোসেন ভবন, বিজ্ঞান গ্রন্থাগার, কার্জন হল এলাকা, দোয়েল চত্বর, চারুকলাসহ প্রতিটি আবাসিক হলসংলগ্ন এলাকায় মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনীর হাতে হত্যাকাণ্ডের শিকার শহীদদের নাম ও পরিচয় লেখা ছোট ছোট প্ল্যাকার্ড স্থাপন করেন।
এ বিষয়ে জুলফিকার প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা অনুযায়ী মহান মুক্তিযুদ্ধে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ১৯৫ জন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী শহীদ হন। দেশের স্বাধীনতা অর্জনে তাঁদের এই আত্মত্যাগ ইতিহাসের এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই ত্যাগ ও অবদান অনেকাংশে তরুণ প্রজন্মের আড়ালে চলে যাচ্ছে। এ বাস্তবতা উপলব্ধি করেই শহীদদের নাম-পরিচয় ও তাঁদের আত্মোৎসর্গের ইতিহাস নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরার উদ্দেশ্যেই তিনি এ উদ্যোগ নেন।
আবু হায়াত মো. জুলফিকার বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের শহীদেরা কেবল ইতিহাসের পাতায় সীমাবদ্ধ কোনো নাম নন; তাঁরা আমাদের অস্তিত্ব, স্বাধীনতা ও আত্মমর্যাদার ভিত্তি। তাঁদের আত্মত্যাগকে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। তাই মুক্তিযুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যাঁরা শহীদ হয়েছেন, তাঁদের ইতিহাস সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া আমাদের অবশ্য কর্তব্য।’
মুক্তিযুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৫ জন শহীদের ইতিহাস জানানোর ভিন্নধর্মী এ উদ্যোগের বিষয়টি ইতিবাচকভাবে দেখছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এ ধরনের কাজ যেন অব্যাহত থাকে, সে বিষয়ে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে সহযোগিতা থাকবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষার্থী শাহরিয়ার তানজিল বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধ আমাদের জাতিসত্তা, চেতনা ও প্রেরণার এক অমলিন উৎস। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে আমাদের প্রাণের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। যেখানে ১৯৭১ সালে ১৯৫ জন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা–কর্মচারী প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন।’
শাহরিয়ার তানজিল বলেন, ‘এই আত্মত্যাগ আমাদের জন্য যেমন গভীর বেদনার, তেমনি এটি সাহস, দায়িত্ববোধ ও অনুপ্রেরণার এক অনন্য দৃষ্টান্ত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্ল্যাকার্ড স্থাপনের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ ও শহীদদের স্মরণ করার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।’