বিকেলে সরকারের ৩১ বিভাগের সঙ্গে ইসির বৈঠক
Published: 30th, October 2025 GMT
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক করতে সরকারের ৩১টি মন্ত্রণালয় ও সংস্থার সঙ্গে বৈঠকে বসছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিকেল ৩টায় আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে বৈঠক হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন।
ইসির জনসংযোগ শাখা জানায়, গত ২৬ অক্টোবর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে বৈঠকে অংশ নিতে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি পাঠানো হয়। চিঠিতে নির্বাচনের প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় বৈঠক আয়োজনের কথা জানানো হয়।
বৈঠকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন, নৌপরিবহন, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান, পররাষ্ট্র, আইন, স্থানীয় সরকার, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, অর্থ, তথ্য ও সম্প্রচারসহ ৩১ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সিনিয়র সচিব বা সচিবরা উপস্থিত থাকবেন।
জানা গেছে, বৈঠকে নির্বাচনসংক্রান্ত ২২টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। এর মধ্যে রয়েছে—ভোটকেন্দ্রের স্থাপনা ও রাস্তা-ঘাট সংস্কার। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল তৈরি। দুর্গম এলাকায় নির্বাচনি সরঞ্জাম পরিবহন। হেলিকপ্টারসহ লজিস্টিক সহায়তা। প্রচার-প্রচারণায় গণমাধ্যমের ভূমিকা। পর্যবেক্ষক নিয়োগে সহায়তা। ঋণখেলাপিদের তথ্য সংগ্রহ। নির্বাচনি ব্যয়ের বাজেট বরাদ্দ।
এছাড়া, শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসনের করণীয়। নির্বাচনি আচরণবিধি প্রতিপালনে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ। বার্ষিক ও পাবলিক পরীক্ষার সময়সূচি সমন্বয়। অগ্নিকাণ্ড ও দুর্যোগ মোকাবিলায় ফায়ার সার্ভিসের প্রস্তুতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে।
ইসির এক কর্মকর্তা জানান, নির্বাচনকে ঘিরে মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে সমন্বয় ও প্রস্তুতির অগ্রগতি যাচাই করাই বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য।
প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বে এই বৈঠক থেকে নির্বাচনের মাঠ পর্যায়ে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও অন্যান্য দপ্তরের করণীয় নির্ধারণের দিকনির্দেশনা দেওয়া হবে।
ঢাকা/এএএম/ইভা
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মুক্তিযুদ্ধে ঢাবির ১৯৫ শহীদের ইতিহাস জানাতে ছাত্রদল নেতার ভিন্নধর্মী উদ্যোগ
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আত্মত্যাগের ইতিহাস শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দিতে ভিন্নধর্মী উদ্যোগ নিয়েছেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের এক নেতা।
রোববার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত পুরো ক্যাম্পাসে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যাকাণ্ডের শিকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৫ জন শহীদের নাম ও পরিচয় লেখা ছোট ছোট প্ল্যাকার্ড স্থাপন করেন তিনি।
এই কর্মসূচির উদ্যোগ নেন ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক আবু হায়াত মো. জুলফিকার। তিনি ক্যাম্পাসের টিএসসি প্রাঙ্গণ, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সম্মুখভাগ, হাকিম চত্বর, মধুর ক্যানটিন, কলাভবন প্রাঙ্গণ, মল চত্বর, ভিসি চত্বর, স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বর, আইন অনুষদ প্রাঙ্গণ, মোতাহার হোসেন ভবন, বিজ্ঞান গ্রন্থাগার, কার্জন হল এলাকা, দোয়েল চত্বর, চারুকলাসহ প্রতিটি আবাসিক হলসংলগ্ন এলাকায় মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনীর হাতে হত্যাকাণ্ডের শিকার শহীদদের নাম ও পরিচয় লেখা ছোট ছোট প্ল্যাকার্ড স্থাপন করেন।
এ বিষয়ে জুলফিকার প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা অনুযায়ী মহান মুক্তিযুদ্ধে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ১৯৫ জন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী শহীদ হন। দেশের স্বাধীনতা অর্জনে তাঁদের এই আত্মত্যাগ ইতিহাসের এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই ত্যাগ ও অবদান অনেকাংশে তরুণ প্রজন্মের আড়ালে চলে যাচ্ছে। এ বাস্তবতা উপলব্ধি করেই শহীদদের নাম-পরিচয় ও তাঁদের আত্মোৎসর্গের ইতিহাস নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরার উদ্দেশ্যেই তিনি এ উদ্যোগ নেন।
আবু হায়াত মো. জুলফিকার বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের শহীদেরা কেবল ইতিহাসের পাতায় সীমাবদ্ধ কোনো নাম নন; তাঁরা আমাদের অস্তিত্ব, স্বাধীনতা ও আত্মমর্যাদার ভিত্তি। তাঁদের আত্মত্যাগকে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। তাই মুক্তিযুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যাঁরা শহীদ হয়েছেন, তাঁদের ইতিহাস সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া আমাদের অবশ্য কর্তব্য।’
মুক্তিযুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৫ জন শহীদের ইতিহাস জানানোর ভিন্নধর্মী এ উদ্যোগের বিষয়টি ইতিবাচকভাবে দেখছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এ ধরনের কাজ যেন অব্যাহত থাকে, সে বিষয়ে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে সহযোগিতা থাকবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষার্থী শাহরিয়ার তানজিল বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধ আমাদের জাতিসত্তা, চেতনা ও প্রেরণার এক অমলিন উৎস। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে আমাদের প্রাণের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। যেখানে ১৯৭১ সালে ১৯৫ জন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা–কর্মচারী প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন।’
শাহরিয়ার তানজিল বলেন, ‘এই আত্মত্যাগ আমাদের জন্য যেমন গভীর বেদনার, তেমনি এটি সাহস, দায়িত্ববোধ ও অনুপ্রেরণার এক অনন্য দৃষ্টান্ত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্ল্যাকার্ড স্থাপনের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ ও শহীদদের স্মরণ করার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।’