ফরিদপুরে বিএনপির কমিটি বাতিলের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ
Published: 30th, October 2025 GMT
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে উপজেলা ও পৌর বিএনপির কমিটি বাতিলের দাবিতে আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ১২টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত উপজেলার ওয়াপদার মোড় এলাকার মাঝকান্দি-ভাটিয়াপাড়া মহাসড়কে বাঁশ ও গাছের গুঁড়ি ফেলে ও আগুন জ্বালিয়ে এ কর্মসূচি পালন করেন।
পদবঞ্চিত নেতা–কর্মীরা অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে যাঁরা বিএনপির দুর্দিনে পাশে থেকেছেন, সেই ত্যাগী নেতাদের উপেক্ষা করে নতুন কমিটিতে আওয়ামী লীগ–সমর্থকদের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হয়েছে। এতে স্থানীয় বিএনপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা সৃষ্টি হয়েছে। তাঁরা কমিটিগুলো বাতিলের পাশাপাশি ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতা-কর্মীদের নিয়ে কমিটি গঠনের দাবি জানান।
কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মজিবুর রহমান, বোয়ালমারী উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর মিনহাজুর রহমান, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রইসুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্যসচিব নাজিম উদ্দিন, উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি আবদুস সবুর, পৌর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।
বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলাটি বিএনপির নেতা-কর্মীরা দুই ভাগে বিভক্ত। একটি পক্ষ ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহসভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলাম এবং অন্যটি উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামসুদ্দিন মিয়ার অনুসারী। তাঁরা দুজন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-১ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী।
২৩ অক্টোবর রাতে বোয়ালমারী উপজেলা ও পৌরসভার ১০১ সদস্যবিশিষ্ট পৃথক দুটি কমিটি ঘোষণা করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেস আলী ও সদস্যসচিব এ কে এম কিবরিয়া।
আজ অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে সড়কের ওপর বসে দাবির সমর্থনে বক্তব্য দেন স্থানীয় বিএনপির পদ বঞ্চিত নেতা-কর্মীরা। এতে সড়কের আটকে পড়ে যাত্রীবাহী বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন। ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।
পরে বেলা দুইটার দিকে কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করেন উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রইসুল ইসলাম। তিনি বলেন, আগামী ১০ নভেম্বরের মধ্যে ঘোষিত কমিটি দুটি বাতিল না করা হলে কঠোর আন্দোলন ও সব সড়ক অবরোধ করা হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এনপ র স কর ম দ র কর ম র সদস য উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
সংস্কার প্রতিবেদন সহজবোধ্য করে জনগণের কাছে তুলে ধরার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংস্কার প্রতিবেদনের একটি সহজবোধ্য বই প্রস্তুত করে দেশের জনগণের জন্য তা উন্মুক্ত করে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে আট খণ্ডের সংস্কার প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা। এ প্রতিবেদনে ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ, সভা ও কার্যবিবরণীর বিস্তারিত রয়েছে।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘এই প্রতিবেদন সাধারণের সহজবোধ্য একটি ভার্সন (সংস্করণ) তৈরি করতে হবে। বই আকারে প্রকাশ করতে হবে, যাতে সাধারণ মানুষ, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা পড়ে বুঝতে পারে এবং অন্যদেরও বুঝাতে পারে।’
বইটি ইংরেজি ও বাংলা দুই ভাষাতেই প্রকাশের আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে এই বইটি যেন শিক্ষার্থীদের জন্য অবশ্যপাঠ্য হয়ে যায়, সেটিও বিবেচনায় রাখতে হবে। তরুণ প্রজন্ম বইটি পড়বে; তাঁরা নিজেরা জানবে এবং তাঁদের মা–বাবাকেও জানাবে এতে কী আছে।’
প্রতিবেদন হস্তান্তরকালে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, ‘আট খণ্ডের এই প্রতিবেদনে জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ নিয়ে এই কমিশনের কার্যক্রমের প্রক্রিয়া, প্রেক্ষাপট, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে প্রাপ্ত লিখিত প্রস্তাব, সাধারণ মানুষের মতামত, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে কমিশনের পক্ষ থেকে প্রেরিত স্প্রেডশিট, সব ধরনের আলোচনা ও সংলাপ লিপিবদ্ধ আছে।’
ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি বলেন, ‘আমাদের বিশ্বাস ভবিষ্যতে এই আট খণ্ডের প্রতিবেদন বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশে-বিদেশে গবেষণার জন্য দলিল হয়ে উঠবে।’
প্রতিবেদন হস্তান্তর অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ইফতেখারুজ্জামান, বদিউল আলম মজুমদার, মো. আইয়ুব মিয়া, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (জাতীয় ঐকমত্য) মনির হায়দার।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার কমিশন সরকারের কাছে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ হস্তান্তর করে।