ফরিদপুরে এক তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে ৪ আসামিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে দেড় লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক, জেলা ও দায়রা জজ শামীমা পারভীন এ রায় দেন। আদালত চার আসামিকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে দুটি ধারায় দণ্ড দেন। হত্যার ঘটনায় আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং ধর্ষণের ঘটনায় যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

আরো পড়ুন:

খুলনায় অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ৩ জনের কারাদণ্ড

বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে ধর্ষণের অভিযোগ, এনসিপি নেতা গ্রেপ্তার

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন— ধর্ষণ ও হত্যার শিকার তরুণীর দুলাভাই ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর বেপারী (৩৮), একই গ্রামের কামরুল মৃধা (৩৮), আলী বেপারী (৪৩) ও চরদড়ি কৃষ্ণপুর গ্রামের বক্কার বেপারী (৩৮)।

এদিকে, মামলার আলামত নষ্ট করার দায়ে মমতাজ বেগম ও আবুল কালাম বেপারী নামের দুই আসামিকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে তাদের ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

রায় ঘোষণার সময় জাহাঙ্গীর বেপারী ছাড়া বাকি সবাই আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণা শেষে পুলিশ পাহারায় তাদের জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ১ অক্টোবর রাত ১টার দিকে জাহাঙ্গীর বেপারী তার সহযোগীদের নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে যান। দরজা খোলার পরই জাহাঙ্গীরসহ অন্য আসামিরা তাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করেন এবং পরে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে ফরিদপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ২ নম্বর আমলি আদালতে জাহাঙ্গীরসহ সাত জনকে আসামি করে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে মামলা করেন। ২০১৭ সালের ২৮ নভেম্বর ফরিদপুর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো.

আবুল কালাম জাহাঙ্গীরসহ ছয় জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

মামলার সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) গোলাম রব্বানী ভুঁইয়া রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ঢাকা/তামিম/রাজীব

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম মল হত য র

এছাড়াও পড়ুন:

জকসুতে একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে তাড়াহুড়ো করেছে প্রশাসন: ছাত্রদল

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনের বিধিমালা প্রণয়নে প্রশাসন একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে তাড়াহুড়ো করেছে বলে অভিযোগ করেছে শাখা ছাত্রদল। 

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির নেতারা এ অভিযোগ তুলে ধরেন।

আরো পড়ুন:

ইডিএস মাস্টার্স ফেলোশিপ পেলেন ঢাবি শিক্ষার্থী

সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে  মাদকবিরোধী কার্যক্রমে এগিয়ে আসতে হবে: জবি উপাচার্য

লিখিত বক্তব্যে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, “আমাদের প্রত্যাশা ছিল প্রশাসন একটি আধুনিক, যুগোপযোগী ও বাস্তবসম্মত জকসু নীতিমালা প্রণয়ন করবেন। কিন্তু আমরা দেখেছি, প্রশাসন একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে তাড়াহুড়ো করেছে, যা হতাশাজনক।”

তিনি বলেন, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর প্রথমবার জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আমরা চাই এটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হোক—যাতে জকসু শিক্ষার্থীদের প্রকৃত প্রতিনিধি নির্বাচনের মুক্ত মঞ্চে পরিণত হয়, কোনো দলীয় প্রভাবের শিকার না হয়।”

তিনি আরো বলেন, “জকসুর মেয়াদ ও দায়িত্বের ক্ষেত্র নির্দিষ্ট ও বাস্তবসম্মত করা, সদস্যপদের যোগ্যতা সহজ করা এবং সংবিধানে শিক্ষার্থীদের কল্যাণমূলক কার্যক্রমে গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। এছাড়া উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের সঙ্গে সমন্বয়ের ক্ষমতা শুধু সহ-সভাপতির মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে সাধারণ সম্পাদক ও সহসাধারণ সম্পাদককেও যুক্ত করতে হবে।”

সংগঠনটি জকসুর কাঠামোতে নতুন ১০টি পদ সংযোজনের প্রস্তাব করেছে তারা। প্রস্তাবিত পদগুলো হলো— বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীবিষয়ক সম্পাদক, ছাত্রীকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক (শুধু নারীদের জন্য), দক্ষতা উন্নয়ন (ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট) সম্পাদক, ধর্ম ও সম্প্রীতি সম্পাদক, মিডিয়া ও যোগাযোগ সম্পাদক, দফতর সম্পাদক, বিতর্ক সম্পাদক, স্বাস্থ্য সম্পাদক, পরিবেশ সম্পাদক, সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সম্পাদক এবং কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়াবিষয়ক সম্পাদক।

এর আগে, ছাত্রদলের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র সম্পাদক, আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক এবং একটি সদস্য পদ জকসু বিধিমালায় সংযোজন করা হয়েছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন বলেন, “আমাদের নেতাকর্মীরা সবাই যোগ্য। তবে এখনো প্যানেল নিয়ে চূড়ান্ত আলোচনা হয়নি। নির্বাচনে অধিক গ্রহণযোগ্য প্রার্থীদের নিয়েই প্যানেল প্রকাশ করা হবে।”

তিনি বলেন, “আমরা এমফিল ও পিএইচডি শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্ত রাখার দাবি জানিয়েছিলাম, কিন্তু তা রাখা হয়নি। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ থাকলেও জকসুতে তা নেই। এছাড়া বিগত ফ্যাসিস্টদের বিচার না হওয়াটা প্রশাসনের ব্যর্থতা।”

সংবাদ সম্মেলনে শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক, আহ্বায়ক সদস্যসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ