ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানাসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজধানীর পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৩০ কাঠা সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে দুদকের করা তিন মামলায় ৫৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সমাপ্ত হয়েছে।

মামলাগুলোতে আরো অভিযুক্ত রয়েছেন, শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক।

আরো পড়ুন:

ভারতেই থাকব, দেশে ফিরব না: শেখ হাসিনা

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার রায় কবে, জানা যাবে ১৩ নভেম্বর

এর মধ্যে শেখ রেহানা ও শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় সাক্ষ্য শেষ হয়েছে ১৯ জনের। এ মামলার মোট চার্জশিটভুক্ত সাক্ষী ২৬ জন।

আজমিনা সিদ্দিক ও শেখ হাসিনাসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় সাক্ষ্য শেষ হয়েছে ১৬ জনের। এ মামলার মোট চার্জশিটভুক্ত সাক্ষী ২২ জন।

এদিকে, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও শেখ হাসিনাসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে করা মামলায় সাক্ষ্য শেষ হয়েছে ১৯ জনের। এ মামলার মোট চার্জশিটভুক্ত সাক্ষী ২৮ জন।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) ঢাকার বিশেষ জজ-৪ এর বিচারক রবিউল আলমের আদালতে পৃথক তিন মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল। এদিন রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষ্য গ্রহণ পেছানোর জন্য সময়ের আবেদন করেন। আদালত সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ২ নভেম্বর দিন ধার্য করেন।

আদালতের পেশকার বেলাল উদ্দিন গণমাধ্যমকে বিষয়টি জানিয়েছেন।

শেখ রেহানার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়মের মাধ্যমে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে গত ১৩ জানুয়ারি মামলা দায়ের করেন দুদকের উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন। মামলায় টিউলিপ, রিজওয়ানা সিদ্দিক ও শেখ হাসিনাসহ ১৫ জনকে আসামি করা হয়।

মামলাটির তদন্ত শেষে গত ১০ মার্চ আরো দুই আসামিসহ মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা আফনান জান্নাত কেয়া।

এই মামলায় অন্য আসামিরা হলেন-জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো.

সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব অলিউল্লাহ, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, রাজউক-এর সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, সাবেক পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, উপ-পরিচালক নায়েব আলী শরীফ, তদন্তে পরবর্তীতে যুক্ত হওয়া দুই আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।

একইভাবে আজমিনা সিদ্দিকও ১০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেন। তার বিরুদ্ধেও একই অভিযোগে ১৩ জানুয়ারি মামলা করেন দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া। মামলায় টিউলিপ ও শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়। তদন্ত শেষে ১০ মার্চ আরো দুই আসামিসহ মোট ১৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন আফনান জান্নাত কেয়া।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন-জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব অলিউল্লাহ, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, সাবেক পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, পরিচালক কামরুল ইসলাম, উপ-পরিচালক নায়েব আলী শরীফ, পরবর্তীতে যুক্ত হওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।

একই অভিযোগে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ১৩ জানুয়ারি মামলা করেন দুদকের সহকারী পরিচালক এস. এম. রাশেদুল হাসান। মামলায় টিউলিপ রিজওয়ানা ও শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়। তদন্ত শেষে ১০ মার্চ ১৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন এস. এম. রাশেদুল হাসান।

রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, শেখ হাসিনা ও টিউলিপ ছাড়াও মামলার অন্য আসামিরা হলেন-জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব অলিউল্লাহ, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সচিব শহিদ উল্লাহ খন্দকার, রাজউক-এর সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, সহকারী পরিচালক ফারিয়া সুলতানা, সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, উপ-পরিচালক নায়েব আলী শরীফ, পরিচালক শেখ শহিদুল ইসলাম, তদন্তে প্রাপ্ত আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।

গত ৩১ জুলাই ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক রবিউল আলম তিন মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। খবর বাসসের।

ঢাকা/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম মল র দওয় ন ম জ ব স দ দ ক ১৮ জন র ব র দ ধ ও শ খ হ স ন সহ র ল ইসল ম কর মকর ত ম হ ম মদ র সহক র ট উল প ত মন ত উল ল হ মন ত র উদ দ ন তদন ত সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

আমার যদি কিছু হয়, তার দায়িত্ব পশ্চিমবঙ্গ সরকার নেবে, প্রশ্ন শ্রীলেখার

নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ভারতীয় বাংলা সিনেমার আলোচিত অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র। কালীপূজার আগের দিন আবাসিক এলাকায় অবৈধ বাজি বিক্রি বন্ধ করার পর এ অভিনেত্রীর আবাসনের ফেসিলিটি ম্যানেজার তাকে একাধিকবার হুমকি দিয়েছেন। 

ঝামেলার শুরু ১৯ অক্টোবর থেকে। কালীপূজার আগের দিন বহুতল আবাসনের নির্দিষ্ট একটি জায়গায় বাজি বিক্রি করতে দেখেন শ্রীলেখা মিত্র। সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ জানান তিনি। পুলিশেও খবর দেন। অভিযোগ পেয়ে আবাসনে পুলিশ এসেছিল। তারপর থেকেই যত সমস্যার সূত্রপাত। নিজের ফ্ল্যাটের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ধার্য খরচ দেওয়ার পরও তাকে কোনো ধরনের নিরাপত্তা, সুযোগসুবিধা দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ শ্রীলেখার। 

আরো পড়ুন:

আমি অর্ধেক মরে বেঁচে আছি: শ্রীলেখা

ফেরদৌসের সঙ্গে প্রেমের গুঞ্জন, মুখ খুললেন শ্রীলেখা

আবাসিক ভবনটির প্রতিটি ফ্ল্যাট থেকে প্রতিদিন সকালে আবর্জনা নিয়ে যান সংশ্লিষ্ট পৌরকর্মী। কিন্তু বেশ কিছু দিন ধরে শ্রীলেখার ফ্ল্যাটের আবর্জনা নেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ অভিনেত্রীর। শ্রীলেখা বলেন—“আমি বাজি বিক্রি বন্ধ করেছিলাম বলেই আজকের এই পরিস্থিতি।”  

এ পরিস্থিতিতে শ্রীলেখা তার ফ্ল্যাটের সামনে সিসিটিভি লাগানোর সিদ্ধান্ত নেন। তাতেও বাধা দেন ফেসিলিটি ম্যানেজার। সেই মুহূর্তের একটি ভিডিও শ্রীলেখা তার ফেসবুকে পোস্ট করেছেন, সেখানে অভিনেত্রীর অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। শ্রীলেখা বলেন, “আমার ফ্ল্যাটের সামনে সিসিটিভি লাগিয়েছি। কিন্তু কোনোভাবেই এটা লাগাতে দেবে না। যেসব লোক আমার সিসিটিভি লাগিয়েছে, তাদেরও হুমকি দিয়েছে। তারা কীভাবে ভবন থেকে বের হয়ে যায়, সেটা দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।”  

খানিকটা ব্যাখ্যা করে শ্রীলেখা মিত্র বলেন, “সিসিটিভি লাগানোর কারণে আবাসনের ফেসিলিটি ম্যানেজার বলেছেন, ‘আমাকে আর কোনো নিরাপত্তা দেওয়া হবে না।’ বাজি বিক্রি নিয়ে প্রতিবাদ করায় সেদিনও তিনি হুমকি দিয়েছিলেন। কোথা থেকে এত সাহস পান উনি? আমার সব জানা আছে।” 

প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে শ্রীলেখা মিত্র বলেন, “অন্যায় দেখার পরও যদি চোখ বন্ধ করে থাকতাম, শাসক দলের লাইনে থাকতাম তাহলে এত এত সমস্যার মুখোমুখি আমাকে হতে হতো না। অন্যায় দেখলে কথা বলার বদভ্যাস আছে, তারই ভুক্তভোগী আমি। হুমকি, এই অসভ্য আচরণ প্রত্যেক দিন চলছে, এরপর যদি আমার কিছু হয়, তাহলে তার দায়িত্ব কলকাতা পুলিশ, পশ্চিমবঙ্গ সরকার নেবে কি? আমি তো আমার নিজের নিরাপত্তাটা দেখব!”      

আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়ে শ্রীলেখা মিত্র বলেন, “আমি পুলিশ, করপোরেশনসহ নানা জায়গায় জানিয়েছি। আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার চিন্তাভাবনা করছি। আমি শিল্পী মানুষ, এ রকম অশান্তি করার কোনো ইচ্ছা নেই। এর ফলে আমার শরীর খারাপ হয়ে যাচ্ছে। একজন মহিলা একা থাকে বলে হেনস্তা করা সহজ, তাই না!”

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ