আড়াইহাজারে ২ গ্রামের সংঘর্ষে আহত ১০, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর
Published: 30th, October 2025 GMT
আড়াইহাজার উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ১০ জন আহতের খবর পাওয়া গেছে। এ সময় উত্তেজিত জনতা আড়াইহাজার থানার ওসির সরকারি ডাবল কেবিন পিকআপ গাড়ি ভাঙচুর বরে।
বৃহস্পতিবার আড়াইহাজার থানার ওসি (তদন্ত) সাইফুদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন হামলার ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। এরআগে বুধবার দিবাগত রাতে উপজেলার উচিৎপুরা ইউনিয়নের উচিৎপুরা বাজার এলাকায় এ ঘটনাঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই আধিপত্য বিস্তার নিয়ে উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের মর্দাসাদি গ্রামের সঙ্গে উচিৎপুরা ও আগুয়ান্দি গ্রামের মানুষের বিরোধ চলছিল। বুধবার মর্দাসাদি গ্রামের নোয়াব আলী, আক্তার ও জলিলসহ কয়েকজন সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে উচিৎপুরা বাজারে গিয়ে স্থানীয় নুরু মিয়াকে (৪৫) কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন। পরে স্থানীয়রা নুরুকে উদ্ধার করে আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
এ ঘটনায় রাতে নুরু মিয়ার সমর্থক উচিৎপুরা, আগুয়ান্দি ও গহরদী গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক লোক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে উচিৎপুরা বাজারে জড়ো হয় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
খবর পেয়ে আড়াইহাজার থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। এ সময় উত্তেজিত জনতা ওসির সরকারি পিকআপ গাড়ি ভাঙচুর করে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) তারেক আল মেহেদী বলেন, ‘সংঘর্ষের সময় উত্তেজিত জনতা পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করেছে। তবে পুলিশ দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে, এখন এলাকা সম্পূর্ণ শান্ত রয়েছে।’
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স ঘর ষ ন র য়ণগঞ জ স ঘর ষ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
মুক্তিযুদ্ধে ঢাবির ১৯৫ শহীদের ইতিহাস জানাতে ছাত্রদল নেতার ভিন্নধর্মী উদ্যোগ
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আত্মত্যাগের ইতিহাস শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দিতে ভিন্নধর্মী উদ্যোগ নিয়েছেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের এক নেতা।
রোববার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত পুরো ক্যাম্পাসে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যাকাণ্ডের শিকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৫ জন শহীদের নাম ও পরিচয় লেখা ছোট ছোট প্ল্যাকার্ড স্থাপন করেন তিনি।
এই কর্মসূচির উদ্যোগ নেন ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক আবু হায়াত মো. জুলফিকার। তিনি ক্যাম্পাসের টিএসসি প্রাঙ্গণ, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সম্মুখভাগ, হাকিম চত্বর, মধুর ক্যানটিন, কলাভবন প্রাঙ্গণ, মল চত্বর, ভিসি চত্বর, স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বর, আইন অনুষদ প্রাঙ্গণ, মোতাহার হোসেন ভবন, বিজ্ঞান গ্রন্থাগার, কার্জন হল এলাকা, দোয়েল চত্বর, চারুকলাসহ প্রতিটি আবাসিক হলসংলগ্ন এলাকায় মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনীর হাতে হত্যাকাণ্ডের শিকার শহীদদের নাম ও পরিচয় লেখা ছোট ছোট প্ল্যাকার্ড স্থাপন করেন।
এ বিষয়ে জুলফিকার প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা অনুযায়ী মহান মুক্তিযুদ্ধে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ১৯৫ জন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী শহীদ হন। দেশের স্বাধীনতা অর্জনে তাঁদের এই আত্মত্যাগ ইতিহাসের এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই ত্যাগ ও অবদান অনেকাংশে তরুণ প্রজন্মের আড়ালে চলে যাচ্ছে। এ বাস্তবতা উপলব্ধি করেই শহীদদের নাম-পরিচয় ও তাঁদের আত্মোৎসর্গের ইতিহাস নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরার উদ্দেশ্যেই তিনি এ উদ্যোগ নেন।
আবু হায়াত মো. জুলফিকার বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের শহীদেরা কেবল ইতিহাসের পাতায় সীমাবদ্ধ কোনো নাম নন; তাঁরা আমাদের অস্তিত্ব, স্বাধীনতা ও আত্মমর্যাদার ভিত্তি। তাঁদের আত্মত্যাগকে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। তাই মুক্তিযুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যাঁরা শহীদ হয়েছেন, তাঁদের ইতিহাস সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া আমাদের অবশ্য কর্তব্য।’
মুক্তিযুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৫ জন শহীদের ইতিহাস জানানোর ভিন্নধর্মী এ উদ্যোগের বিষয়টি ইতিবাচকভাবে দেখছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এ ধরনের কাজ যেন অব্যাহত থাকে, সে বিষয়ে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে সহযোগিতা থাকবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষার্থী শাহরিয়ার তানজিল বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধ আমাদের জাতিসত্তা, চেতনা ও প্রেরণার এক অমলিন উৎস। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে আমাদের প্রাণের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। যেখানে ১৯৭১ সালে ১৯৫ জন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা–কর্মচারী প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন।’
শাহরিয়ার তানজিল বলেন, ‘এই আত্মত্যাগ আমাদের জন্য যেমন গভীর বেদনার, তেমনি এটি সাহস, দায়িত্ববোধ ও অনুপ্রেরণার এক অনন্য দৃষ্টান্ত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্ল্যাকার্ড স্থাপনের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ ও শহীদদের স্মরণ করার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।’