শীতের আগে লেপ–কম্বল সঠিকভাবে পরিষ্কার করবেন যেভাবে
Published: 30th, October 2025 GMT
লেপের যত্ন
লেপের মূল উপাদান তুলা, তাই পানি দিয়ে ধোয়া কিংবা ড্রাই ওয়াশ সম্ভব নয়। এ কারণে লেপ পরিষ্কারের সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি হলো রোদে দেওয়া। উল্টেপাল্টে রোদে দিলে লেপ সহজে পরিষ্কার হয়ে যাবে। গায়ে জমে থাকা অতিরিক্ত ধুলা দূর করতে চাইলে লেপে কিছুক্ষণ বাড়ি দিতে পারেন। আর এটা তো আমরা জানিই, লেপের কভার ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে স্বাভাবিক পদ্ধতিতেই।
কম্বলের যত্নকম্বল তুলায় তৈরি হলে লেপের মতোই যত্ন নিতে হবে। তবে তা উল কিংবা পলিয়েস্টারের তৈরি হলে হালকা ডিটারজেন্ট দিয়ে ৫-১০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন, এরপর ধুয়ে ফেললে কম্বল পরিষ্কার হয়ে যাবে। কম্বল ধোয়ার পর সরাসরি রোদে না দিয়ে ছায়াযুক্ত, বাতাস আছে—এমন জায়গায় শুকাতে দিন। এতে সহজে শুকিয়ে যাবে, দুর্গন্ধ হবে না।
আরও পড়ুনপুরোনো কাপড় ভালো রাখবেন যেভাবে০১ জুলাই ২০২৪কমফোর্টারের যত্নশীত নিবারণের জন্য লেপ-কম্বলের পাশাপাশি কমফোর্টার এখন বেশ জনপ্রিয়। তুলনামূলক হালকা বলে দ্রুত জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ঠান্ডা পানিতে হালকা ডিটারজেন্ট দিয়ে ধুয়ে ফেলুন কমফোর্টার। গরম পানি ব্যবহার করলে কমফোর্টার কুঁচকে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। ছায়া থাকে, এমন জায়গায় রেখে শুকিয়ে ফেললেই ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবে কমফোর্টার।
আরও পড়ুনওয়াশিং মেশিনে কাপড় ধোয়ার আগে যেসব বিষয় জানা জরুরি১৮ মার্চ ২০২৫পোশাকের যত্নশীত মানে তো শুধু লেপ-কম্বল নয়, বাহারি গরম পোশাকের মেলাও। একেক ধরনের শীতপোশাকের যত্নে একেক ধরনের ব্যবস্থা। বিশেষ করে শাল বা সোয়েটারজাতীয় পোশাক হালকা ডিটারজেন্ট দিয়ে ধুয়ে ফেললেই চলে। সোয়েটারের ক্ষেত্রে সামান্য ভিনেগার ব্যবহার করা যেতে পারে।
উলের কোনো কিছু ধোয়ার সময় আলাদা সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কোন দাগ বা ময়লা লাগলে শ্যাম্পু দিয়ে হালকা ব্লটিং করে তুলে নিন। তবে উলের কাপড় ড্রাই ওয়াশ করা সবচেয়ে ভালো। এতে উলের শেপ সহজে নষ্ট হয় না।
কিন্তু চামড়ার ক্ষেত্রে সরাসরি পানি দিয়ে না ধোয়াই ভালো। বরং বিভিন্ন ধরনের লেদার ক্লিনার পাওয়া যায়, সেসব দিয়ে পরিষ্কার করা উত্তম। ফ্যাকাশে হয়ে গেলে চামড়ার জন্য বিশেষ কিছু কন্ডিশনার পাওয়া যায়, সেসব ব্যবহার করতে পারেন। এতে চামড়ার পোশাক ভালো থাকবে।
সূত্র: গুড হাউসকিপিং
আরও পড়ুনঠিক কতটুকু ডিটারজেন্ট ব্যবহার করলে কাপড় হবে পরিষ্কার, অপচয়ও কমবে১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর পর ষ ক র র যত ন
এছাড়াও পড়ুন:
মুক্তিযুদ্ধে ঢাবির ১৯৫ শহীদের ইতিহাস জানাতে ছাত্রদল নেতার ভিন্নধর্মী উদ্যোগ
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আত্মত্যাগের ইতিহাস শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দিতে ভিন্নধর্মী উদ্যোগ নিয়েছেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের এক নেতা।
রোববার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত পুরো ক্যাম্পাসে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যাকাণ্ডের শিকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৫ জন শহীদের নাম ও পরিচয় লেখা ছোট ছোট প্ল্যাকার্ড স্থাপন করেন তিনি।
এই কর্মসূচির উদ্যোগ নেন ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক আবু হায়াত মো. জুলফিকার। তিনি ক্যাম্পাসের টিএসসি প্রাঙ্গণ, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সম্মুখভাগ, হাকিম চত্বর, মধুর ক্যানটিন, কলাভবন প্রাঙ্গণ, মল চত্বর, ভিসি চত্বর, স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বর, আইন অনুষদ প্রাঙ্গণ, মোতাহার হোসেন ভবন, বিজ্ঞান গ্রন্থাগার, কার্জন হল এলাকা, দোয়েল চত্বর, চারুকলাসহ প্রতিটি আবাসিক হলসংলগ্ন এলাকায় মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনীর হাতে হত্যাকাণ্ডের শিকার শহীদদের নাম ও পরিচয় লেখা ছোট ছোট প্ল্যাকার্ড স্থাপন করেন।
এ বিষয়ে জুলফিকার প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা অনুযায়ী মহান মুক্তিযুদ্ধে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ১৯৫ জন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী শহীদ হন। দেশের স্বাধীনতা অর্জনে তাঁদের এই আত্মত্যাগ ইতিহাসের এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই ত্যাগ ও অবদান অনেকাংশে তরুণ প্রজন্মের আড়ালে চলে যাচ্ছে। এ বাস্তবতা উপলব্ধি করেই শহীদদের নাম-পরিচয় ও তাঁদের আত্মোৎসর্গের ইতিহাস নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরার উদ্দেশ্যেই তিনি এ উদ্যোগ নেন।
আবু হায়াত মো. জুলফিকার বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের শহীদেরা কেবল ইতিহাসের পাতায় সীমাবদ্ধ কোনো নাম নন; তাঁরা আমাদের অস্তিত্ব, স্বাধীনতা ও আত্মমর্যাদার ভিত্তি। তাঁদের আত্মত্যাগকে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। তাই মুক্তিযুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যাঁরা শহীদ হয়েছেন, তাঁদের ইতিহাস সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া আমাদের অবশ্য কর্তব্য।’
মুক্তিযুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৫ জন শহীদের ইতিহাস জানানোর ভিন্নধর্মী এ উদ্যোগের বিষয়টি ইতিবাচকভাবে দেখছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এ ধরনের কাজ যেন অব্যাহত থাকে, সে বিষয়ে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে সহযোগিতা থাকবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষার্থী শাহরিয়ার তানজিল বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধ আমাদের জাতিসত্তা, চেতনা ও প্রেরণার এক অমলিন উৎস। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে আমাদের প্রাণের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। যেখানে ১৯৭১ সালে ১৯৫ জন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা–কর্মচারী প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন।’
শাহরিয়ার তানজিল বলেন, ‘এই আত্মত্যাগ আমাদের জন্য যেমন গভীর বেদনার, তেমনি এটি সাহস, দায়িত্ববোধ ও অনুপ্রেরণার এক অনন্য দৃষ্টান্ত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্ল্যাকার্ড স্থাপনের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ ও শহীদদের স্মরণ করার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।’