আড়াইহাজারে যুবদল সভাপতির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
Published: 30th, October 2025 GMT
আড়াইহাজার উপজেলায় কৃষক দলের সদস্য বাতেন হত্যা মামলায় সাতগ্রাম ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি রেজাউল করিমসহ ২৪ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের হওয়ায় এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
জানাগেছে, গত ১৫ অক্টোবর উপজেলার সাতগ্রাম ইউনিয়নের রসুলপুর এলাকায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ৩ নং ওয়ার্ডের কৃষক দলের সদস্য বাতেন আহত হন। পরের দিন ১৬ অক্টোবর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
এর আগে গত ৩ অক্টোবর রসুলপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে জুমার নামাজের আগে সাতগ্রাম ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি রেজাউল করিমের ছোট ভাই হাসান মাদক বিরোধী বক্তব্য রাখেন।
সেই বক্তব্যের এক পর্যায়ে নিহত বাতেনের ছেলে ও ৩ নং ওয়ার্ড যুবদলের সহ-সভাপতি শাহজাহানের বক্তব্যের কটাক্ষ করেন। এনিয়ে নামাজ শেষে হাতাহাতি হয়, যা পরে স্থানীয় মুসল্লিরা মিটমাট করে দেন।
এর জের ধরে ১৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় সাতগ্রাম ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি রেজাউল করিমের ছোট ভাই হাসান তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মাধবদী যাওয়ার পথে রাস্তায় বাতেনের ছেলে শাহজাহান ও তার দলবল দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হাসানকে আটকে মারধর করেন। এখবর পেয়ে এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে এলে গনপিটুনির শিকার হন মাদক ব্যবসায়ি বাতেন।
পরে ঢাকা মেডিকেল নিয়ে যাওয়ার পরেরদিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। নিহত বাতেনের ছেলে শাহজাহান ১৯ অক্টোবর ২৪ জনকে নামীয় ও ১৫/১৬ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
যুবদল সভাপতি রেজাউল করিম জানান, ঘটনার সময় তিনি একটি কমিশনের দলিল করার কাজে উপস্থিত ছিলেন। তার ছোট ভাই মোমেন ঢাকায় ছিলেন এবং ফজলুল বারী ঢাকায় একটি মসজিদে নামাজ আদায় করছিলেন, যার ভিডিও ফুটেজও রয়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন, তার পরিবারকে রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এলাকার একটি কুচক্রী মহল উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মিথ্যা মামলায় জড়িয়েছে।
এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যুবদল সভাপতি রেজাউল করিম ও তার পরিবারের লোকজন দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদকবিরোধী কার্যক্রম চালাচ্ছিলেন।
তাদের দাবি, নিহত বাতেনের পরিবারের লোকজন মাদক ব্যবসায় জড়িত ছিল এবং বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও তারা ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ায় এলাকাবাসী তাদের প্রতি ক্ষিপ্ত ছিল। ১৫ অক্টোবরের সংঘর্ষে এলাকার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে বাতেনের পরিবারের ওপর হামলা চালায় এবং বাতেন তখন আহত হয়ে মারা যান।
এলাকাবাসী আরও জানান যে সংঘর্ষে যুবদল সভাপতি রেজাউল করিম, তার ভাই ফজলুল বারী ও মোমেন জড়িত না থাকা সত্ত্বেও তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা দেওয়ায় তারা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: হত য ম মল ন র য়ণগঞ জ র পর ব র এল ক ব স য বদল র ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মহাসড়কে নির্মাণকাজের সময় গ্যাস লাইনে ছিদ্র, সরবরাহ বন্ধ হয়ে ভোগান্তিতে গ্রাহক
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চার লেন মহাসড়কের নির্মাণকাজের সময় এক্সকাভেটরের (খননযন্ত্র) আঘাতে গ্যাসের সংযোগ লাইন ছিদ্র হয়ে যায়। গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রেখেছে বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (বিজিডিসিএল) কর্তৃপক্ষ। এতে জেলা শহরের প্রায় ১৫ হাজার আবাসিক-বাণিজ্যিক গ্রাহকদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল চারটার দিকে শহরের উলচাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক করতে কাজ শুরু করেছে বিজিডিসিএলের কারিগরি দল। গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হতে তিন থেকে চার ঘণ্টা সময় লাগবে বলে জানা গেছে।
বিজিডিসিএলের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উপমহাব্যবস্থাপক মো. শফিকুল হক প্রথম আলোকে বলেন, বিকেল চারটার দিকে শহরের ভাদুঘর থেকে উলচাপাড়া রোডের গ্যাস সঞ্চালনের ৬ ইঞ্চি লাইন ছিদ্র হয়ে যায়। গ্যাসের সঞ্চালন লাইন সচল রেখে মেরামত করলে ওই স্থানে আগুন ধরে যাবে। তাই সদর উপজেলার ঘাটুরা অংশ থেকে সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দক্ষিণ দিকে জেলা শহরের সব আবাসিক ও বাণিজ্যিক এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। গ্রাহকদের ভোগান্তির কথা ভেবে কারিগরি দল দ্রুত মেরামতকাজ শুরু করেছে। ২০ হাজার গ্রাহকের মধ্যে শহরের মধ্যেই প্রায় ১৫ হাজার গ্রাহক রয়েছে। গ্যাস সরবরাহ পেতে তিন থেকে চার ঘণ্টা সময় লাগবে।
বাখরাবাদ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে আখাউড়া চার লেন মহাসড়কে উন্নীতকরণের কাজ চলছে। আজ বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের উলচাপাড়া অংশে খননযন্ত্র দিয়ে কাজ চলছিল। সে সময় ওই যন্ত্রের আঘাতে গ্যাস সঞ্চালন লাইনের ৬ ইঞ্চি পাইপ ছিদ্র হয়ে গ্যাস বের হতে থাকে। বিষয়টি বাখরাবাদ কর্তৃপক্ষকে জানানো হলে তাদের কারিগরি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। গ্যাসের সংযোগ লাইন মেরামত করতে সদর উপজেলার ঘাটুরা এলাকায় থাকা গ্যাস সঞ্চালন লাইন বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরসহ পৌর এলাকায় আবাসিক ও বাণিজ্যিক গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।
কালাইশ্রীপাড়ার মনির হোসেন বলেন, ‘বিকেল চারটার পর থেকে গ্যাস নেই। রান্নার কাজ বন্ধ রয়েছে। শিশুদের জন্য কোনো খাবার রান্না করতে পারছেন না আমার স্ত্রী।’
কাজীপাড়ার বাসিন্দা তমালিকা দেবনাথ বলেন, ‘সন্ধ্যা ছয়টার নাশতা বানাতে রান্নাঘরে যাই। গিয়ে দেখি চুলায় গ্যাস আসছে না। কবে আসবে জানি না। রান্নাবান্না বন্ধ রয়েছে। ছোট বাচ্চারা খাবারের জন্য কান্নাকাটি করছে।’
বিজিডিসিএলের ব্রাহ্মণবাড়িয়া শাখার রাজস্ব বিভাগের উপব্যবস্থাপক গোলাম মোক্তাদির প্রথম আলোকে বলেন, ‘উলচাপাড়ায় গ্যাসের লাইন ছিদ্র হয়ে গেছে। তাই ঘাটুরা থেকে গ্যাসের সঞ্চালন লাইন বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে পুরো শহরে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। তবে আমাদের কারিগরি দল কাজ শুরু করেছে।’